নয়াদিল্লি: কৃষক আন্দোলনের মতো দেশের গণ্ডি পেরোল কুস্তিগিরদের আন্দোলনও। অলিম্পিক্সে পদক জয়ী সাক্ষী মালিক (Sakshi Malik), বজরং পুনিয়াদের (Bajrang Punia) উপর পুলিশি অত্যাচারের নিন্দায় সরব হয়েছে আন্তর্জাতিক কুস্তি নিয়ামক সংস্থা ইউনাইটেড ওয়ার্ল্ড রেসলিং (UWW)। ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের (WFI) সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের (Brij Bhushan Sharan Singh) বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগের তদন্তের এখনও কোনও ফলাফল নেই, তা নিয়েও তুমুল অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিশ্ব কুস্তি সংস্থা। ভারতের ফেডারেশনকে তারা ৪৫ দিনের চরমসীমা দিয়েছে।
এই ৪৫ দিনের মধ্যেই সভাপতি নির্বাচন করতে হবে না হলে সাসপেন্ড হবে ভারতের ফেডারেশন। আর তা যদি হয়, দেশের কুস্তিগিররা আন্তর্জাতিক ইভেন্টে দেশের হয়ে খেলতে পারবেন না, তাঁদের নির্দেশীয় পতাকার তলায় খেলতে হবে।
ভারতে কুস্তির আঙিনায় ডামাডোল চলছে অনেকদিন ধরেই। বিশ্ব কুস্তি সংস্থার নজর এড়ায়নি তা, এবং সেই অনুসারে পদক্ষেপও করে। গত ২৮ মার্চ থেকে নয়াদিল্লিতে এশিয়ান কুস্তি চ্যাম্পিয়নশিপ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় কাজাখস্তানের আস্তানায়। এই ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিল বিশ্ব কুস্তি সংস্থা।
আরও পড়ুন: National Education Policy | মোদির শিক্ষানীতি মেনেই চার বছরের ডিগ্রি কোর্স রাজ্যে
গতকাল, অলিম্পিক্স এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে জেতা পদক গঙ্গায় বিসর্জন দিতে হরিদ্বার এসেছিলেন সাক্ষী মালিক (Sakshi Malik), বিনেশ ফোগট (Vinesh Phogat), বজরং পুনিয়া (Bajrang Punia)। হাজির হয়েছিলেন হর কি পৌরি ঘাটে। তাঁদের আটকালেন কৃষক নেতা নরেশ টিকাইত (Naresh Tikait) এবং অন্যান্যরা। কেন্দ্রীয় সরকারকে পাঁচদিনের সময়সীমা দিয়েছেন ভারতের কৃতী কুস্তিগিররা। এর মধ্যে বিজেপি সাংসদ তথা ভারতের কুস্তি ফেডারেশনের (WFI) সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংকে (Brij Bhushan Sharan Singh) গ্রেফতার এবং পদ থেকে বহিষ্কার না করা হলে তাঁরা আবার হরিদ্বারে আসবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
এরপর গত ২৮ মে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখল স্বাধীন ভারত। একদিকে সাধুসন্তদের নিয়ে রাজদণ্ড হাতে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। অন্যদিকে রাজধানীর রাস্তায় টেনে-হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলা হচ্ছে সাক্ষী মালিক (Sakshi Malik) বিনেশ ফোগটের (Vinesh Phogat) মতো অ্যাথলিটদের। বিশ্বের দরবারে ভারতের সম্মান বাড়ানো কুস্তিগিরদের সঙ্গে অমানুষিক আচরণ করল দিল্লি অমিত শাহের (Amit Shah) পুলিশ। প্রকৃত প্রস্তাবেই দেশের জন্য ২৮ মে ছিল ‘কালা দিবস’। এরপরেই চরম সিদ্ধান্ত নেন দেশের গর্ব কুস্তিগিররা। তাঁরা তাঁদের পদক গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।