Placeholder canvas

Placeholder canvas
Homeআজকেআজকে (Aajke) | ন্যাড়া কৌস্তুভ বাগচি কেন বিজেপিতে?

আজকে (Aajke) | ন্যাড়া কৌস্তুভ বাগচি কেন বিজেপিতে?

Follow Us :

ঠিক এই মূহুর্তে যে রাজনৈতিক নেতা, যে প্রতিবাদী মানুষ, যে সাংবাদিক, সংবাদকর্মী, লেখক বুদ্ধিজীবি সরাসরি বিজেপিতে যোগ দেননি তাঁদের বুকের পাটা আছে, তাঁরাই আসল ছাপ্পান্ন ইঞ্চির ছাতিওলা মানুষ, তাঁদের একটা আলাদা এজেন্ডা আছে, দেশ সম্পর্কে তাঁদের একটা অন্য ভাবনা চিন্তা আছে। এই কথাগুলো বেঝিঝক, অনায়াসেই বলা যায়। দেশে বিরোধী প্রতিবাদীদের সঙ্গে যা হচ্ছে, যেভাবে তাঁদের ভয় দেখানো হচ্ছে, প্রলোভনের সামনে ফেলা হচ্ছে তারপরেও যাঁরা তাঁদের শিরদাঁড়া সোজা রেখে প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন তাঁদের প্রত্যেককে সেলাম। অদ্ভুত বিপন্ন এই সময়ে গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে শান্তির জীবন যাপন করে দিন কাটিয়ে না দিয়ে তাঁরা রুখে দাঁড়িয়েছেন, দাঁড়াচ্ছেন এটা কম কথা নয়।

হরেক কিসিমের মানুষজন আছে এই দলে। কমিউনিস্টরা আছেন, বিভিন্ন বিভ্রান্তি সত্ত্বেও তাঁদের এই আর এস এস বিজেপি বিরোধিতা নিখাদ, এ নিয়ে কোনও প্রশ্ন হবে না, যদিও তাঁদের মধ্যে সবাই যে শিরদাঁড়া সোজা রাখতে পারছেন তা নয়, তবে সে সংখ্যা নগণ্য। বহু আঞ্চলিক দল আছে যাঁদের কে দেশের সবচেয়ে বড় শাসক দলের বিরুদ্ধে লড়াই করেই তাঁদের অস্তিত্ব বাঁচাতে হবে, না হলে বিজেপি গিলে খাবে, যেমন করে অগপ থেকে অকালি দল থেকে জেডি ইউ ইত্যাদিদের খেয়ে ফেলেছে। সেই সব আঞ্চলিক দলের কাছে এটা অস্তিত্বের লড়াই।

এবং কংগ্রেস, তাকে তো লড়তেই হবে, স্বাধীনতার আগে থেকেই এই লড়াই চলছে, সে লড়াই কবেই শেষ করে দিতে পারতো কংগ্রেস কিন্তু তার বিভিন্ন দোলাচল তার আদর্শগত সবথেকে বড় শত্রুকে বাঁচিয়ে কেবল নয় বড় করে তুলতে সাহায্য করেছে। কিন্তু এটাও বলতে হবে এই সময়েও যে নেতারা নেত্রীরা কংগ্রেসেই আছেন তাঁদের শিরদাঁড়া আছে। কিন্তু সবার কি আর থাকে? আর সেটাই বিষয় আজকে, ন্যাড়া কৌস্তুভ বাগচি কেন বিজেপিতে?

না সবার অত ধক নেই, তখন ৭৫ বছর বয়স, তাঁর বাড়ির দেওয়াল টপকে ইডির লোকজন ঢুকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল, কেবল রাজনীতিটা ছেড়ে দিলেই ছাড় পেয়ে যেতেন, কিন্তু ছাড়েননি, জেল খেটেছেন চার মাস আমাদের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম। সবার অত চওড়া বুক হয় না। তাই বিরাট মাপের কংগ্রেস নেতা এস বি চব্যনের পুত্র অশোক চব্যন, মাধব রাও সিন্ধিয়ার পুত্র জ্যোতিরাদিত্য, মুরলি দেওয়ার ছেলে মিলিন্দ, জিতেন্দ্র প্রসাদ এর ছেলে জিতীন প্রসাদের মত নেতারা চলে গেছেন বিজেপি তে? কী করতে? এদিকে কামাই হচ্ছিল না, ওদিকে গেলেন? বা পেছনে লেগেছিল সি বি আই ইডি, সামলাতে ওদিকে গেলেন, এই তো। বাংলাতে এখনও সেরকম বড় সড় কংগ্রেসের কোনও নেতা ওদিকে যাবেন বলে মনে হয় না, তার একটা কারণ আদর্শ আর অন্য কারণ হল এ বাংলায় এখনও যে মালদা মুর্শিদাবাদে কংগ্রেসের কিছুটা অস্তিত্ব আছে সেটা ওই সংখ্যালঘু ভোট নিয়েই, কাজেই দল ছাড়লে নিজের পায়ে কুড়োল মারা হবে এটা তেনারা জানেন। অন্তত বাজারে টিঁকে থাকতে হলেও তাঁদের কংগ্রেসের ব্যানারটা দরকার।

কিন্তু আমাদের কৌস্তুভ বাগচির মত শহরের পোয়াটাক নেতার কি সেই দরকার আছে? উনি রাজনীতিকে ক্যারিয়ার করতে চান, সঙ্গে আইনজীবির পেশা, দুই এ মিলে জব্বর কম্বিনেশন। উনি তো এঁড়েদার প্রাচীন কংগ্রেসী ঘোষাল পরিবারের কেউ নন, ওনার কংগ্রেসের ঐতিহ্য বা আদর্শ ইত্যাদির কোনওটাই নেই, সেটা খুব পরিস্কার। তো তেমন একজন কংগ্রেসে থাকবেনই বা কেন? মমতা বিরোধিতা? সে তো বিজেপি তে গিয়েও করা যাবে। বরং সেদিকে গেলে পলিটিক্যাল ক্যারিয়ার চড় চড় করে বেড়ে যেতেও পারে। তো তিনি বহুদিন আগে থেকেই এই মুরলিধর লেনের দিকে পা বাড়িয়েই ছিলেন, সাংবাদিক সম্মেলনে শুভেন্দু-সুকান্ত তাঁকে বুকে টেনে নিলেন। তাহলে তিনি অপেক্ষা করছিলেন কেন? তাঁর মনে হয়েছিল কংগ্রেস হাইকমান্ড থেকে কংগ্রেস তৃণমূল কংগ্রেস জোট চাপিয়ে দেওয়া হবে, সেই নির্দেশ আসলেই তিনি মমতা বিরোধিতার ধ্বজা তুলে যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখিয়ে দল ছেড়ে বিজেপিতে যাবেন। কিন্তু মধ্যে ঘটনা অন্যভাবে ঘুরছে, বিভিন্ন কারণে জোট প্রক্রিয়া এখন ব্যহত, হতেও পারে, নাও হতে পারে। এবং যাই হবে আর দু চার দিনের মধ্যেই হবে। যদি এমন সিদ্ধান্ত হয় যে বাংলাতে কংগ্রেস বামেদের সঙ্গেই জোট বেঁধে লড়বে, তাহলে তিনি দলটা ছাড়বেন কী বলে? কংগ্রেস নেতৃত্ব তৃণমূল নেত্রীকেই বেশি পাত্তা দেন ইত্যাদি তো তখন বলা যাবে না। আর যদি জোট হয়, তাহলে ওনার বলার জায়গা থাকবে যে এই তো আমি বলেছিলাম। সব বুঝেই তিনি দল ছেড়েছেন, নিজের স্বার্থ বজায় রেখেই দল ছেড়েছেন, সেই গণতান্ত্রিক অধিকার তাঁর আছে, কিন্তু দোহাই ঐ কংগ্রেস মমতা হবনবিং ইত্যাদি তত্ত্ব দেবার চেষ্টা করবেন না, পাবলিক চার অক্ষরের বোকা নয়। আমরা আমাদের দর্শকদের জিজ্ঞেষ করেছিলাম, ইডি সি বি আই এর হানাদারি, তাদের ভয় দেখানো, বিভিন্ন প্রলোভন, দলের পদ ইত্যাদিতে কান না দিয়ে এখনও যাঁরা বিরোধী রাজনীতি করে যাচ্ছেন আর যারা সেই ভয়েই বা লোভে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, এই দু ধরণের রাজনৈতিক কর্মী নেতাদের নিয়ে আপনারা কী ভাবছেন? শুনুন কী বলেছেন তাঁরা।

এই বিষয়টা তুলে ধরা এইজন্য নয় যে ঐ পোয়া, আধপোয়া নেতাকে নিয়ে আলোচনা খুব জরুরি, বরং উল্টোতা, তার থেকেও অখ্যাত, তার থেকেও অনেক তলার স্তরে, গ্রাস রুটে কাজ করা সেই সব বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের কথা বলাতা দরকার। সব শেষ হয়ে গ্যালো, হুহু করে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে বিরোধী নেতারা, মাথা নোয়াচ্ছে এটাই একমাত্র ছবি নয়, এই আকালেও শিরদাঁড়া টান টান করে বিরোধিতার ঝান্ডা তুলে রেখেছেন যাঁরা তাদের ৫৬ ইঞ্চি চওড়া বুকের পাটার গল্প শোনানোটাও দরকারি, সবার সেই ধক থাকে না, ন্যাড়া কৌস্তুভ বাগচীর সেটা নেই, ছিলও না।

RELATED ARTICLES

Most Popular