Placeholder canvas

Placeholder canvas
Homeজেলার খবরকিডনির অসুখ কি থামিয়ে দেবে গানওলার সাধনা

কিডনির অসুখ কি থামিয়ে দেবে গানওলার সাধনা

Follow Us :

বাঁকুড়া : কিডনির কঠিন অসুখ থামিয়ে দিতে চলেছে গানওলার জীবন। চিকিৎসার বিপুল খরচ আসবে কিভাবে ? তবুও বিছানায় শুয়ে শুয়ে সঙ্গীতের সুর নিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন গানওলার। সঙ্গীতের রাগ রাগিনীকে সঙ্গী করেই বেড়ে ওঠা। সুরের আবহে নিজেকে তৈরি করেছে একটু একটু করে। সঙ্গীতের মঞ্চে একের পর এক শ্রোতার হৃদয় জয় করে নিজের জনপ্রিয়তা কুড়িয়েছেন তন্ময় মুখুটি। একজন কণ্ঠশিল্পী যার জীবনের প্রথম ভালোবাসা গান আর সেই গানওয়ালার গান কেড়ে নিয়েছে কিডনির কঠিন অসুখ। প্রচুর অর্থব্যয় করে চিকিৎসা করার সামর্থ নেই তাঁর। সরকারি ও সহৃদয় মানুষের সহযোগিতা পাবার এক বুক আশা নিয়েই নতুন করে আবার শ্রোতাদের গান শোনাতে চান বাঁকুড়ার ইন্দপুরের বগা গ্রামের গানওয়ালা তন্ময়।

বাঁকুড়ার ইন্দপুর ব্লকের বগা গ্রামের বাসিন্দা তন্ময় মুখুটি। ৫ বছর বয়স থেকেই সঙ্গীতের সাত সুরের মধ্য দিয়ে নিজেকে একজন কণ্ঠশিল্পী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। খেয়াল থেকে ভজন, রবীন্দ্র সঙ্গীত থেকে আধুনিক, ছায়াছবির গানেও তাঁর অবাধ বিচরণ। তাঁর সুললিত কন্ঠের জন্য তাঁকে চেনেন না রাঢ়ের সংস্কৃতি জগত, এমন লোক খুঁজে পাওয়াও দুষ্কর। রাজ্য ও ভিন রাজ্যের বিভিন্ন সঙ্গীতের আসর মাত করেছেন তন্ময়। সঙ্গীতের প্রতি ভালোবাসার শুরু থেকেই অগনিত শ্রোতার হৃদয় ছুঁয়েছে তন্ময়ের সঙ্গীত। কঠোর সাধনা, অধ্যাবসায় আর পরিশ্রমে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর পাশ করার পাশাপাশি রবীন্দ্র ভারতী থেকে সঙ্গীতে স্নাতকোত্তর পাশ করেন। চাকরির চেষ্টা করেও মেলেনি চাকরি। চাকরির আশা ছেড়ে দিয়ে বাধ্য হয়ে প্রথম ভালোবাসার গানকেই বেছে নিয়েছিলেন পেশা হিসাবে। একক অনুষ্ঠান থেকে পেশাদারী মঞ্চে একের পর এক শো করে তাঁর জনপ্রিয়তা শিখরে উঠেছিল। মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশনের পাশপাশি বিভিন্ন প্রান্তের ছাত্রছাত্রীদের গান শেখানোর পেশা শুরু করেন তন্ময়। গান শেখানো আর মঞ্চে গান গাওয়া একমাত্র উপার্জন তন্ময়ের। এই উপার্জন থেকেই বাবা,মা, স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে থাকা ৬ জনের সংসার । কিন্তু মাস কয়েক আগে আচমকাই শরীর অসুস্থ হয়ে পড়েন তন্ময়। চিকিৎসা করাতে গিয়ে চিকিতসকরা জানায়, তাঁর ২টি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে।

ভিন রাজ্যের নামী হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন অতি দ্রুত একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করতে না পারলে চিরতরে নিভে যেতে পারে তন্ময়ের জীবনদীপ। মা একটি কিডনি দিতে রাজী। কিন্তু ওই হাসপাতাল জানিয়েছে কিডনি প্রতিস্থাপন মেডিসিন ও আনুসঙ্গিক খরচ কমবেশি আঠারো লক্ষ টাকা। চিকিৎসায় বহুল অর্থ জোগাড় করা গান গেয়ে কোনোমতে সংসার চালানো তন্ময়ের পরিবারের মাথায় ভেঙে পড়ে আকাশ। শুরু হয় সরকারী ও বেসরকারী সাহায্যের জন্য ছোটাছুটি। ব্যাক্তিগত ভাবে দু একজন সামান্য আর্থিক সাহায্য নিয়ে এগিয়ে এলেও এখনও সরকারি তরফে কোনো সাহায্য মেলেনি। চিকিৎসার বিপুল অর্থ সরকারী ও বেসরকারী সাহায্য ছাড়া কোনও ভাবেই জোগাড় করা সম্বব নয় মুখুটি পরিবারের পক্ষে। সাহায্য ছাড়া এই অর্থ ব্যয়ে কিডনি প্রতিস্থাপন সম্ভব নয় তন্ময়ের। শয্যাশায়ী হয়ে গানওয়ালা তন্ময় ও তাঁর পরিবার সরকারী ও বিভিন্ন মানুষের সাহায্যের আশায় দিন গুনছেন। মাত্র ৩৭ বছর বয়সেই শরীরে বাসা বাঁধা কিডনির কঠিন অসুখ থেকে বাঁচার আর্তি তন্ময়ের। সে চাই সাহায্য। সেই সাহায্যের আশার তন্ময় ও তাঁর পরিবার। সাহায্য পেয়ে সুস্থ হয়ে আবার সুরের আবহে ভাসতে চায় সে। বেঁচে থাকতে চায় তাঁর ভালোবাসার গানকে নিয়ে।

RELATED ARTICLES

Most Popular