লিভারপুল–২ ভিয়ারিয়াল–০
(এস্তুপিনান-আত্মঘাতী, সাদিও মানে)
পাঁচ বছরে তিন বার উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠার মুখে লিভারপুল। বুধবার নিজেদের মাঠে ছয় বারের চ্যাম্পিয়নরা প্রথম দফার সেমিফাইনালে পরিষ্কার দুই গোলে হারিয়ে দিল এবারের টুর্নামেন্টে সিংহশিকারী স্পেনের ভিয়ারিয়ালকে। এ মরসুমে খুবই ভাল খেলছে জুরগেন ক্লপের টিম। তারা চারটি টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দাবিদার। ইতিমধ্যেই লিগ কাপ তারা পেয়ে গেছে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে তাদের সঙ্গে তুল্যমূল্য লড়াই চলছে ম্যাঞ্চেস্টার সিটির। এফ এ কাপের ফাইনালে উঠে গেছে তারা। এই পারফরম্যান্সের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই যেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে যাওয়ার পথে এক পা দিয়ে রাখল লিভারপুল। ম্যাচে যা খেলা হয়েছে তাতে লিভারপুল আরও বেশি গোলে জিততে পারত। নিজেদের দোষে তারা আরও বড় ব্যবধানে জিততে পারল না।
কোচ জুরগেন ক্লপের সঙ্গে লিভারপুলের চুক্তি আছে ২০২৪-এর মরসুমের শেষ পর্যন্ত। কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে লিভারপুল সেই চুক্তি আরও বাড়িয়ে নিয়ে যেতে চায় এবং ক্লপও নাকি তাতে সায় দিয়েছেন। বুধবারের ম্যাচ ধরে ক্লপের টিম এই মরসুমে গোল করল ১৩৫টি। এই রকম সফল একটা কোচকে কে ছাড়বে? কোচের চুক্তি বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই যেন লিভারপুল ফুটবলাররা এদিন জেতার সংকল্প নিয়ে নেমেছিলেন। তবে তাদের মাথায় এটাও ছিল যে ভিয়ারিয়াল কিন্তু অঘটন ঘটিয়েছে জুভেন্তাস এবং বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে। তাই কোনও রকম তাড়াহুড়ো নয়। ডিফেন্সকে অটুট রেখেই লিভারপুল আক্রমণে যাচ্ছিল। স্পেনের এক ছোট জনপদ হল ভিয়ারিয়াল। আনফিল্ড স্টেডিয়ামে যত লোক ধরে তাতে পুরো ভিয়ারিয়াল শহরটাই ধরে যাবে। সেই শহর থেকে হাজার তিনেক সমর্থক এসেছিল প্রিয় দলকে উৎসাহ দিতে। আনফিল্ডে লিভারপুলের সমর্থকদের চিৎকারে তাদের উৎসাহ চাপা পড়ে গেলেও ভিয়ারিয়ালের আক্রমণের সময় কিন্তু টের পাওয়া যাচ্ছিল যে স্টেডিয়ামে ভিয়ারিয়াল সমর্থকহীন নয়।
গোল শূণ্য প্রথমার্দ্ধের পর বিরতির একটু পরেই দু মিনিটের মধ্যে দুটো গোল করে লিভারপুল ম্যাচের ফয়সালা করে ফেলে। ৫৩ মিনিটে জর্দন হেন্ডারসনের ক্রস ক্লিয়ার করতে গিয়ে ভিয়ারিয়ালের ডিফেন্ডার পেরভিস এস্তুপিনান নিজের গোলে বল ঢুকিয়ে দেন। দু মিনিটের মধ্যে আবার গোল করে ফেলে লিভারপুল। মহম্মদ সালাহের পাস থেকে বল পেয়ে সাদিও মানে গোল করে ফেলেন। এর পর ম্যাচের উপর একচেটিয়া দখল নিয়ে নেয় লিভারপুল। কিন্তু সালাহ, লুইস দিয়াজদের সুযোগ নষ্টের জন্য তাদের গোল সংখ্যা আর বাড়েনি। গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন থিয়াগো আলকান্তারা এবং অ্যান্ডি রবার্টসনও। কিন্তু গোল হয়নি। উল্টো দিকে ভিয়ারিয়ালের আক্রমণগুলো ভোঁতা হয়ে যায় লিভারপুলের ডিফেন্ডারদের পায়ে। সামনের মঙ্গলবার দ্বিতীব দফার সেমিফাইনাল আবার ভিয়ারিয়ালের মাঠে। বিরাট কোনও অঘটন না ঘটলে লিভারপুলের ফাইনালে যাওয়া নিশ্চিত। কারণ এই মরসুমে ৫৫টি ম্যাচ খেলে ফেলা লিভারপুল কোনও ম্যাচে দু গোলে হারেনি।