কিভ: ইউক্রেনের মারিয়োপোল (Ukraine’s Mariupol Residents) শহরের বাসিন্দাদের রাশিয়ায় যেতে বাধ্য করা হচ্ছে৷ এমনটাই অভিযোগ মারিয়োপোলের সিটি কাউন্সিলের (Mariupol City Council)৷ বিবৃতি দিয়ে সিটি কাউন্সিল জানিয়েছে, বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে মারিয়োপোলের বাসিন্দাদের রাশিয়ার ভূখণ্ডে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ রুশ হামলা থেকে বাঁচতে শহরের মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ইউক্রেনীয় বেসমেন্ট, স্পোর্টস ক্লাব বিল্ডিংয়ের মতো জায়গাগুলিতে থাকছিলেন৷ সেখান থেকে তাঁদের বের করে অবৈধভাবে রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷
তাহলে কি মারিয়োপোলের নাগরিকদের যুদ্ধবন্দি করছে রাশিয়া? শহরের মেয়র ভাদিম বোয়চেনকোর কথায়, নাৎসীদের সঙ্গে আজকের রাশিয়ার আচরণের হুবহু মিল খুঁজে পাচ্ছেন পুরনো প্রজন্মের মানুষ, যাঁরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নানা ভয়াবহ ঘটনাবলীর সাক্ষী৷ এক দেশের নাগরিকদের অন্য দেশে জোর করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, ২১ শতকে পৌঁছে এমন চিন্তা করাও কষ্টসাধ্য৷ মেয়র জানিয়েছেন, রুশ সেনার হাতে বন্দি মারিয়োপোলের নাগরিকদের রাশিয়ার ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ তাদের মোবাইল ফোন ও ডকুমেন্ট সব চেক করা হচ্ছে৷ কয়েকজনকে রাশিয়ার প্রান্তিক শহরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ বাকিদের ভবিষ্যৎ অজানা৷
রুশ হামলায় ছারখার হয়ে গিয়েছে ইউক্রেনের বন্দর শহর মারিয়োপোল৷ নিহত হয়েছেন বহু মানুষ৷ কেউ বলছেন সংখ্যাটা দু’হাজার৷ কারও মতে সেটা চার হাজার৷ গত ১৬ মার্চ মারিয়োপোলের একটি থিয়েটারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রাশিয়া৷ ঘর-বাড়ি ছেড়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন শতাধিক মানুষ৷ বিস্ফোরণে থিয়েটারে ঢোকার রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়৷ তা ছাড়া রুশ বিমান অবিরাম বোমাবর্ষণ করেই চলেছে এলাকায়৷ কখনও কখনও ৩০ মিনিটের নিস্তব্ধতা থাকে৷ আবার বোমা, গুলির আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায়৷ তাই থিয়েটারের ভিতর আশ্রিতারা কী অবস্থায় রয়েছেন তা জানা যায়নি৷
আরও পড়ুন: India Japan Partnership: আগামী পাঁচ বছরে ভারতে ৪২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে জাপান
এই পরিস্থিতির মধ্যে মানব করিডর করে শনিবার মারিয়োপোল থেকে হাজারের বেশি শিশু সহ ৪ হাজার ১০০ জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যায় ইউক্রেনীয় সেনা৷ ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনা অভিযানের পর থেকেই মারিয়োপোল শহরটি সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় অবস্থিত বন্দর শহরটির দখল নিতে মরিয়া রাশিয়া৷ পূর্বের ডনবাসের সঙ্গে ক্রাইমিয়া পেনিনসুলার মধ্যে সংযোগরক্ষা করে মারিয়োপোল৷ ডনবাস এবং ক্রাইমিয়া দুটোই রুশ নিয়ন্ত্রিত৷ রাশিয়া চাইছে, ডনবাস, মারিয়োপোল ও ক্রাইমিয়া মধ্যে ল্যান্ড করিডর গড়ে তুলতে৷ সেজন্য শহরটির দখল নিতে চায় মস্কো৷