নয়াদিল্লি: ‘টাকার বদলে প্রশ্ন’ (Cash for Query) বিতর্কে তৃণমূল সাংসদ (TMC MP) মহুয়া মৈত্র (Mahua Moitra) মহিলা নির্যাতনের তাস খেলছেন বলে অভিযোগ তুললেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে (Nishikant Dubey)। মহুয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে শুক্রবার তিনি বলেন, এথিক্স কমিটি (Ethics Commitee) যদি অশালীন কোনও প্রশ্ন জানতে চেয়ে থাকে, তাহলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগকারী নিশিকান্ত এদিন বলেন, লোকসভার এথিক্স কমিটি তাঁকে যদি কোনও ব্যক্তিগত প্রশ্ন করে থাকে তাহলে তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন।
দুবে একটি এক্স বার্তায় লিখেছেন, দর্শন হিরানন্দানি হলফনামায় দাবি করেন, ভারতে এবং বিদেশে দুর্নীতিগ্রস্ত এমপিকে বিমানভাড়া, হোটেল এবং গাড়ির খরচ দিয়েছিলেন। এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান সেই টিকিট এবং হোটেলের বিল চেয়েছিলেন। যদি এর বাইরে মহুয়া মৈত্রর পুরুষ বন্ধু সম্পর্কে বাড়তি প্রশ্ন করা হয়ে থাকে, তাহলে রাজনীতি ছেড়ে দেব, লিখেছেন দুবে। সকলের জ্ঞাতার্থে জানাই, সংসদের কার্যাবলির মতো এথিক্স কমিটির বিতর্কও অক্ষরে অক্ষরে লিখিত হয়।
আরও পড়ুন: মমতা-অভিষেক সব জানেন, আর কী বললেন বালু
দুবের দাবি, ক্ষমতা থাকলে কংগ্রেস, জেডিইউয়ের সংসদ সদস্যরা এর প্রমাণ দেখান। বহুজন সমাজ পার্টি সাংসদ দানিশ আলিকে কটাক্ষ করে দুবে লিখেছেন, দানিশ আপনি এত নীচে নামবেন না। মহিলাকে অপমানের মতো গুরুতর বিষয় নিয়ে রাজনীতির তাস খেলবেন না।
প্রসঙ্গত, এথিক্স কমিটির বিরুদ্ধে ‘বস্ত্রহরণ’এর অভিযোগ তোলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। আপত্তিকর, অপমানজনক প্রশ্ন করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার বিকেলের আগেই এথিক্স কমিটি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন মহুয়াসহ বিরোধী এমপি-রা। কিন্তু, তারপর রাতে এবং এদিন সকালেও এক্স বার্তায় একটি দীর্ঘ চিঠি লেখেন তৃণমূল এমপি। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে উদ্দেশ করে লেখা এক চিঠিতে মহুয়া তাঁকে বস্ত্রহরণের মুখোমুখি হতে হয়েছে বলে বর্ণনা করেন। তাঁর অভিযোগ মূলত কমিটির চেয়ারপার্সন বিজেপি সাংসদ বিজয়কুমার সোনকারের বিরুদ্ধে। প্যানেলের অন্যান্য সদস্যের সামনে তিনি তাঁকে প্রবাদে বর্ণিত বস্ত্রহরণ করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন মহুয়া।
লোকসভার স্পিকারকে লেখা চিঠিতে মহুয়া বলেছেন, এথিক্স কমিটির সামনে তাঁকে অনৈতিক, জঘণ্য এবং বিদ্বেষমূলক আচরণের মুখোমুখি হতে হয়েছে। লোকসভায় আদানি নিয়ে প্রশ্ন করার বিনিময়ে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে। তার ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার এথিক্স কমিটি তাঁকে তলব করেছিল।
মহুয়া চিঠিতে বলেছেন, এই কমিটির কোনও নীতি-নৈতিকতা অবশিষ্ট নেই। ফলে এই কমিটির অন্য কোনও নাম দেওয়া হোক। স্পিকারের কাছে ব্যক্তিগত হেনস্তা ও ঘৃণ্য আচরণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। লিখেছেন, মহাশয়, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে চলা সরকার দাবি করে যে, মহিলাদের সুরক্ষা ও তাঁদের সম্মান রক্ষার জন্য সবকিছু করতে পারে। কিন্তু, লজ্জার বিষয় এই যে, লোকসভার ৭৮ জন মহিলা সদস্যের একজন আমাকে এথিক্স কমিটির চেয়ারপার্সনের নেতৃত্বে শুনানিতে বস্ত্রহরণের মুখোমুখি হতে হয়েছে।
স্পিকার ওম বিড়লাকে মহুয়া আরও লিখেছেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে ব্যক্তি গোপনীয়তা রক্ষা করা মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করে একজন মহিলা এমপিকে অস্বস্তিতে ফেলা হয়েছে। আমার কাছে এও জানতে চাওয়া হয়েছে, রাতে আমি কাকে ফোন করি। কতবার ফোন করি। ফোনে কী কী কথা হয়! এ ধরনের নিম্নরুচির প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া হয়।
অন্য খবর দেখুন