কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: গত ৫০ বছরের ক্ষত কাটিয়ে উঠল ঢাকার বিখ্যাত রমনা কালীমন্দির। বহু ইতিহাসের সাক্ষী রমনা কালীমন্দিরের নতুন ভবনের উদ্বোধন করলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। শুক্রবার উদ্বোধনের পর রাষ্ট্রপতি মন্দিরে পুজো দেন এবং আরতিও করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা প্রাপ্তির সুবর্ণ জয়ন্তী (1971 India-Pakistan war) উপলক্ষে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বুধবার সকালে বাংলাদেশে পৌঁছেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। সঙ্গে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী সবিতা কোবিন্দ ও মেয়ে স্বাতী কোবিন্দ। এদিন সকালে কালীমন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্ত্রী এবং মেয়েও।
কেন ঐতিহ্যবাহী এই রমনা কালীমন্দির?
রমনা কালী মন্দির ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে বিখ্যাত হিন্দু মন্দিরগুলির মধ্যে একটি। এই মন্দির প্রায় এক হাজার বছরেরও বেশি পুরনো বলে মনে করা হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এই মন্দির। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল প্রাচীন এই মন্দির। মন্দিরের সেবায়ত-সহ প্রায় একশ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সাধারণ মানুষ নিহত হন পাক বাহিনীর হাতে।
দীর্ঘ পঞ্চাশ বছরের প্রতীক্ষার পর হাসিনা সরকারের উদ্যোগে শুক্রবার নব কলেবরে এই মন্দিরের উদ্বোধন হল। এদিন সকাল ১০:৩০ নাগাদ স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে মন্দির প্রাঙ্গণে পৌঁছন রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ।। সেখানে তাঁদের স্বাগত জানান ধর্ম সংক্রান্ত প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। কালীমন্দিরের সংস্কার হওয়া অংশের ফলক উন্মোচন করেন রাষ্ট্রপতি। পরে স্ত্রী-কন্যাকে নিয়ে পুজোও দেন। এদিন সকাল থেকেই কালীমন্দিরে ছিল উৎসবের মেজাজ।
আরও পড়ুন – তালিবানদের তিনিই কাবুলে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, সাক্ষাৎকারে দাবি কারজাইয়ের
মূল মন্দিরে ঢোকার সময় শাঁখ বাজিয়ে অভ্যর্থনা করা হয় রাষ্ট্রপ্রতিকে। প্রার্থনা শেষে মন্দির প্রাঙ্গণে উপস্থিত মন্দির কমিটির সদস্যসহ সকলের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন কোবিন্দ। সব মিলিয়ে মিনিট ১৫ রমনা কালীমন্দিরে ছিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি।
তথ্য বলছে, শঙ্করাচার্যের অনুগামী দর্শণার্থী সম্প্রদায় ঢাকার রমনায় এই কালীমন্দিরের প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় পাঁচশো বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া গড়েন। তখন এই আখড়া কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল। পরে সে জায়গাতেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন, যা পরবর্তীকালে পরিচিতি পায় কালীবাড়ি নামে।
পাক সেনাবাহিনীর হাতে ধ্বংস হওয়া অংশটি সংস্কারের জন্য ভারত সরকার সাত কোটি টাকা দিয়েছিল। ভক্তনিবাস ও মূল মন্দিরও ফের নির্মাণ করা হয়েছে। শুক্রবার সেই অংশেরই উদ্বোধন করলেন রামনাথ কোবিন্দ।