কলকাতা: মৃত্যু যেন ডাকছে হাতছানি দিয়ে! ধীরে ধীরে বুঝতে পারছেন আর কিছুক্ষণের মধ্যেই পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে যেতে হবে! ঠিক তখন কী চলে মানুষের মস্তিষ্কে? এই প্রথমবার সেই প্রশ্নের জবাব খুঁজে পেলেন চিকিত্সা বিজ্ঞানীরা। শুধু উত্তর দেওয়াই নয়, ওই সময় মানব দেহের সবচেয়ে জটিল অঙ্গ অর্থাৎ মস্তিষ্কের স্থিতির নাকি ভিডিও রেকর্ডিং করেছেন তাঁরা। যদিও এই আবিষ্কার নিয়ে কোনও ধরনের আগাম প্রস্তুতি বা পরিকল্পনা ছিল না।
ভ্যানকুভার জেনারেল হাসপাতালে মৃগী রোগে আক্রান্ত ৮৭ বছরের এক বৃদ্ধ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁর ইলেক্ট্রোএনসেফালোগ্রাম (EEG) করা হয়। হঠাৎই হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। ওই বৃদ্ধেরই মৃত্যুর ১৫ মিনিট আগের মস্তিষ্কের অবস্থা রেকর্ড করেছে চিকিৎসকরা। এরপর সেই রেকর্ডিং নিয়ে গবেষণা চলে। গবেষকরা জানিয়েছেন, মৃত্যুর ঠিক ৩০ সেকেন্ড আগে রোগীর হৃদস্পন্দন বহুগুণ বেড়ে যায়। ওই সময় তাঁর মস্তিষ্কে এক অদ্ভুদ তরঙ্গ তৈরি হয়। যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় গামা অক্সিলেশন্স।বলা হয়।
গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, মৃত্যুর ঠিক কিছুক্ষণ আগে মানুষের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বহুগুণ বেড়ে যায়। স্বপ্নের জগতে বা ঘোরের মধ্যে বিরাজ করে মানুষ। মস্তিষ্ক সচল থাকলেও দেহ অচল হয়ে যেতে থাকে। রেকর্ডিং পর্যালোচনা করে বিজ্ঞানীরা দেখতে পান, এ সময়ে ধরা পড়া মস্তিষ্কের তরঙ্গ সংকেত অবিকল স্বপ্ন দেখা বা স্মৃতিচারণা করার সময়ে উত্পন্ন হওয়া তরঙ্গ সংকেতের মতো। যার মানে, মৃত্যুর মুহূর্তে অতীতের স্মৃতি ফিরে আসে মানুষের মনে।
লি লুইসভিলে জিমার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও নিউরো সার্জন ডাক্তার লুইসভিলে জেমা জানান, গামা অক্সিলেশন্স ওয়েভের সময় মানুষের তার জীবনের মন ভালো স্মৃতিগুলো মনে করতে থাকেন। এমনকী মৃত ওই মৃগীরোগীর মস্তিষ্কের গবেষণা করেও দেখা গিয়েছে, তিনিও মৃত্যুর আগের মুহুর্তে জীবনের ভালো স্মৃতি গুলোকেই মনে করছিলেন।