কলকাতা: দুর্গাপুরে পড়তে এসে ধর্ষণের শিকার এক বাংলাদেশি (Bangladesh) ছাত্রী (Student) । এমনই অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) জনস্বার্থ মামলা। দুর্গাপুরের কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে ধর্ষণের শিকার বাংলাদেশি নাগরিক এক তরুণী। বিশ্ববিদ্যালয়েরই বাংলা বিভাগের এক শিক্ষক তাঁর সঙ্গে প্রথমে শারীরিক সম্পর্ক করতে চেয়ে মোবাইলে এসএমএস করেন।কিন্তু মেয়েটি তাতে রাজি হননি।পরে তাঁকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়কে সে কথা জানালেও বিশ্ববিদ্যালয় উলটে ওই শিক্ষকেরই পক্ষ নিয়েছে। একই সঙ্গে মেয়েটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপে জড়িত বলে পালটা অভিযোগ করা হয়। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে আইসিসিআর স্কলারশিপ পাওয়ার পর বাংলাদেশ থেকে তরুণী ভারতে আসেন পড়তে। তিনি রাণীগঞ্জের টিডিবি কলেজ থেকে বাংলা বিষয়ে তার স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন ২০১৯-২০২২ শিক্ষাবর্ষে। পরে কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য।২০২৩ সালে যখন ঘটনাটি ঘটে তখন তিনি বাংলা বিভাগের সেকেন্ড সেমেস্টারের ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুত্রেই বাংলা বিভাগের এক শিক্ষকের সঙ্গে তাঁর আলাপ ও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ গড়ে ওঠে। বন্ধু স্থানীয় হয়ে ওঠেন ওই শিক্ষক ।
আরও পড়ুন: ভাড়া না মেটালে উচ্ছেদ থেকে ভাড়াটেকে রক্ষাকবচ নয়, অভিমত কেরল হাইকোর্টের
২০২৩ সালের ৬ মার্চ ওই শিক্ষক তাঁকে দুর্গাপুরের ন্যাশনাল বুক এজেন্সিতে নিয়ে যান বই কেনার নাম করে। সেখান থেকে রাণীগঞ্জের একটি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। এবং সেখানে চা খেতে খেতে এক ব্যাক্তিকে ডেকে তিনি বলেন তারা খুব শীঘ্রই বিয়ে করতে চলেছে। যদিও বিয়ে পরে তাদের হয়নি।
৩০ মার্চ মেয়েটিকে ফোনে সন্ধ্যা ৭.৩০ থেকে ৭.৫০ এর মধ্যে এসএমএস করে শারীরিক সম্পর্ক করতে চান ওই শিক্ষক। কিন্তু মেয়েটি রাজি হননি। ওই শিক্ষকের অন্য একজনের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে সেটাও স্বীকার করেছেন ওই শিক্ষক। মানসিক ভাবে বিধবস্ত তরুণী ওই দিন রাতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন রাত ৮.৩০ নাগাদ। সেই খবর তরুণী দুর্গাপুরের যে লেডিস হস্টেলে থাকতেন সেখানকার ডেপুটি রেজিস্ট্রারের থেকে জানতে পারেন বাংলা বিভাগের ওই শিক্ষক। এবং কারও কোনও অনুমতি ছাড়াই তরুণীকে তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। ওই দিন রাতেই হাসপাতালের কেবিনে তাঁকে ধর্ষণ করেন ওই শিক্ষক বলে অভিযোগ। ঘটনায় থানায় অভিযোগ জানান তরুণী। কিন্তু পুলিশ কোনও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি বলে চার্জিশিট দিয়ে দিলেও পরে পুলিশ চার্জশিটে ধর্ষণের ধারা যুক্ত করে।
মহিলা থানার তরফে এফআইআরে জোর পূর্বক লিখতে বলা হয় তরুণী ওই শিক্ষকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ। তরুণীর বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়কে একাধিক বার অভিযোগ জানিয়েও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। একই সঙ্গে তাঁর সঙ্গে নানা রকম অসহযোগিতা শুরু হয়ে যায়। বাধ্যহয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন ওই তরুণী। যদিও পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। তার পড়াশোনা কার্যত বন্ধই হয়ে যায়। যাতে ওই তরুণীর প্রতি সুবিচার করা হয় সেই আবেদন জানিয়ে মামলাকারী কলকাতা হাইকোর্টেরই একজন আইনজীবী একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন। এদিন প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে মামলাটি উঠলে প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন আগামী সোমবার তিনি বিষয়টি শুনবেন।
আরও খবর দেখুন