কলকাতা: লোকসভা ভোটে ( Lok Sabha Vote 2024) কোনও হিংসা বরদাস্ত করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার (Rajiv Kumar Chief Election Commissioner)। মঙ্গলবার কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, বাংলায় এত দিন যা যা হয়েছে, এখনও যা যা হচ্ছে, সব কমিশনের (Election Commission) গোচরে রয়েছে। ভোটে পেশীশক্তি ও আর্থিক ক্ষমতা যাতে প্রয়োগ না করা হয়, তা দেখা হবে। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট এবার করতেই হবে। না হলে দায় বর্তাবে জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের উপর। কেউ ছাড় পাবেন না।
ভোট প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ তিনদিন ধরে কলকাতায় সফর করছে। সব স্বীকৃত রাজনৈতিক দল, পুলিশ, প্রশাসন, ভোটের কাজে যুক্ত অফিসারদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে ফুল বেঞ্চ। সোমবার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের বৈঠকে একাধিক জেলার কর্তা কমিশনের তোপের মুখে পড়েন। সন্দেশখালি নিয়েও কথা হয় বৈঠকে। এদিনই দিল্লি ফিরে যান নির্বাচন কমিশনের কর্তারা। যাওয়ার আগে রাজীব কুমার সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানেই ফের একবার পুলিশ, প্রসাসনকে সতর্কবার্তা দেন তিনি। কমিশনার বলেন, ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করা আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ। এ ব্যাপারে কোনও অজুহাত শোনা যাবে না। সূত্রের খবর, এদিন রাজ্যের মুখ্যসচিব বি পি গোপালিকা এবং ডিজি রাজীব কুমারের সঙ্গে বৈঠকেও নির্বাচন কমিশনার কড়া ভাষায় কথা বলেন।
আরও পড়ুন:
তিনি বলেন, প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলই আমাদের জানিয়েছে, তাঁরা অবাধ শান্তিপূর্ণ ও হিংসামুক্ত নির্বাচন করতে চায়। আমলাতন্ত্র এখানে পক্ষপাতিত্ব করে বলে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। হিংসারও অভিযোগ শুনেছি। এসব বরদাস্ত করা হবে না। কমিশনের ফুল বেঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে, কারও আধার কার্ড না থাকলে তারা অন্য কোনও পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভোট দিতে পারবে। এনফোর্সমেন্ট এজেন্সির কর্তাদের বৈঠকের পর কমিশন জানায়, ‘সক্ষম’ অ্যাপ থেকে ৮৫ বছরের বেশি বয়সের ভোটাররা বাড়ি থেকে ভোটদানের আবেদন জানাতে পারবেন। ‘সুবিধা’ পোর্টাল থেকে রাজনৈতিক দলগুলি মিটিং মিছিলের অনুমতি পাবেন অনলাইনে। অনলাইনে যেকোনও ধরনের অভিযোগ, ভিডিও ফুটেজ সহ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১০০ মিনিটের মধ্যে তার নিষ্পত্তি করা হবে। প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি মামলা আছে কিনা তার সম্পত্তির সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ভোটাররা দেখতে পাবেন। ৮০ হাজার ৪৫৩টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র রয়েছে। প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে গড়ে 943 জন ভোটার থাকবে।
এদিন বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ভোট হিংসা রুখতে কড়া বার্তা, ভোট পূর্ববর্তী ও পরবর্তী পর্যায়ের হিংসাকে কড়া হাতে দমন করা হবে। কোনও রকমের সন্ত্রাস বরদাস্ত করা হবে না। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে অনুপ্রবেশ রুখতে থাকবে কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করা হবে। রাজ্যের প্রতিটা জায়গায় যাতে সঠিক ভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয় সেই দিকে নজরদারি রাখা হবে। রাজনৈতিক দলগুলি দাবি জানিয়েছে, সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো যাতে অনেক বেশি করে বেশি জায়গায় লাগানো যায়। র্যালির ক্ষেত্রে যে অনুমতি দেওয়া হয়, তা যেন মান্য করা হয়। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের অভিযোগও তোলা হয়েছে, নির্বাচনে কিছু কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে নিজেদের মতো করে চালনা করতে চায়। সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন হতে বাধা দেন। সেই দিকগুলোর উপর নজর দেয়া হবে।
অন্য খবর দেখুন