পশ্চিম বর্ধমান: রাত পোহালেই রথ যাত্রা (Rath Yatra)। আর রথ যাত্রাকে ঘিরে চরম উন্মাদনা থাকে পশ্চিম বর্ধমান জেলার কাঁকসার (Kanksa) বনকাটি পঞ্চায়েতের অযোধ্যা গ্রামে। গত কয়েকশো বছর ধরে সাড়ম্বরে রথযাত্রার আয়োজন হয়ে আসছে অযোধ্যা গ্রামে। এই রথের বিশেষত্ব হল গোটা রথটি পিতলের তৈরি। পিতলের তৈরি রথের গোটা গায়ে চার যুগের ইতিহাস বর্ণিত আছে। প্রতিবছর রথের দিন সকাল থেকে শুরু হয় পুজোপাঠ। যাকে ঘিরে গ্রামের মানুষদের চরম উৎসাহ থাকে প্রতিবছর। প্রতি বছর রথের দিন রথযাত্রা দেখতে এলাকার মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলার মানুষ ভিড় জমান অযোধ্যা হাটতলায়।
অযোধ্যা গ্রামের বাসিন্দা লালু রায় জানিয়েছেন, এই গ্রামের রায় পরিবারের মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় মুখার্জি পরিবারে। মুখার্জি পরিবারের ছেলের লাক্ষা এবং গালার ব্যবসা ছিল। তিনি বীরভূমের ইলামবাজারে এই ব্যবসা করতেন। সেই ব্যবসার এক দিনের মুনাফা থেকে পিতলের রথটি তিনি তৈরি করিয়েছিলেন। এক সময় বিশাল আকার রাজপ্রাসাদের মতো তাদের বাড়ি ছিল অযোধ্যা গ্রামে। বর্তমানে তার ধ্বংসাবশেষ এখনও গ্রামের মধ্যে অবস্থিত। সেই গ্রামেই রাখা থাকে এই পিতলের তৈরি রথ। স্থানীয়রা জানিয়েছেন এই পিতলের রথে সমুদ্র মন্থন থেকে শুরু করে রাম রাবণের যুদ্ধ সবই খোদাই করা রয়েছে। জানা গিয়েছে বাংলা সহজ পাঠের অনেক ছবি এই রথের গায়ের ছবি থেকেই নেওয়া হয়েছে। সারা বছর ধরে গ্রামের মানুষ অপেক্ষায় থাকেন এই রথের মেলার জন্য। প্রত্যেক বছর রথের দিন রায় পরিবারের বাড়ি থেকে এই রথ টেনে নিয়ে আসা হয় অযোধ্যা হাটতলায়। গভীর রাত পর্যন্ত এই রথ অযোধ্যা হাটতলায় থাকে। পরে সেটি পুনরায় রায় পরিবারে ফেরত আনা হয়। একইভাবে উল্টো রথের দিনেও রথ টেনে নিয়ে আসা হয় অযোধ্যা হাটতলায়। রথযাত্রা উপলক্ষে অযোধ্যা হাটতলায় মেলা বসে। রথের দিন যাতে কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তাই গোটা এলাকায় মোতায়েন থাকে কাঁকসা থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন: নিট ইউজির কাউন্সেলিং পিছিয়ে দেওয়া হল
আরও খবর দেখুন