কলকাতা: ২১ জুলাই শহীদ দিবসের মঞ্চ থেকেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলে শুদ্ধকরণ অভিযান শুরু করে দিলেন। রবিবার ছিল একদিকে শহীদ দিবস, অন্যদিকে লোকসভা এবং বিধানসভার উপনির্বাচনে জয়ের জন্য বিজয় দিবসও ছিল। সেই জোড়া দিবসের মঞ্চকেই রবিবার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবং তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিলেন।
আর দুবছরের মধ্যেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। সেই ভোটে শাসকদলকে প্রবল প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার মুখে পড়তে হতে পারে বলে মনে করছেন নেতৃত্ব। তাই এখন থেকেই বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতিতে নেমে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন এদিন শীর্ষ নেতৃত্ব। অভিষেক খোলাখুলিই বলেছেন, লোকসভা এবং বিধানসভার উপনির্বাচনের ফলাফলে আত্মসন্তুষ্টির কোনও অবকাশ নেই। আমাদেপ শৃঙ্খলাবদ্ধ হতেই হবে। আর নেত্রী বললেন, আমরা যত জিতব, তত আমাদের নম্র হতে হবে।
মমতা সমাবেশে বলেন, আমি বিত্তবান কর্মী চাই না, চাই বিবেকবান কর্মী। কারণ, পয়সা আসে, চলে যায়। যা আছে, তাই নিয়েই বাঁচুন। বেশি লোভ করতে যাবেন না। তাঁর হুঁশিয়ারি, আগামিদিনে যেন পঞ্চায়েত সদস্য থেকে শুরু করে সংসদ সদস্য পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ না ওঠে। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই পাড়ায় পাড়ায় তৃণমূলের নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে দাদাগিরির অভিযোগ উঠেছে। প্রোমোটাররাজ, সিন্ডিকেটরাজে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে দলের অনেক নেতার বিরুদ্ধে। সেসব নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব অস্বস্তিতে রয়েছে। গত পঞ্চায়েত ভোটের আগে অভিষেক হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, দল আর প্রোমোটারি একসঙ্গে করা যাবে না। যে কোনও একটিকে বেছে নিতে হবে।
আরও পড়ুন: লোভ করবেন না, জন প্রতিনিধিদের হুঁশিয়ারি মমতার
সম্প্রতি চোপড়া, আড়িয়াদহ-সহ বেশ কিছু এলাকায় তৃণমূলের বাহুবলিদের অপকর্মের বহু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তাতে দলের মুখ পুড়েছে। কোথাও কোথাও এই বাহুবলিদের মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিধায়ক কিংবা সাংসদদের বিরুদ্ধে। আড়িয়াদহের ঘটনা নিয়ে কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র এবং দমদমের সাংসদ সৌগত রায়ের নামও জড়িয়ে গিয়েছে। যে কারণে স্থানীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে সৌগতকে বলতে হয়েছে, এরপর থেকে দলের কেউ বড় ধরনের প্রোমোটার, সমাজবিরোধীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে দল ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। সৌগত আরও বলেছেন, অতীতের ভুল আমরা সংশোধন করে নেব।
এই আবহেই ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে মমতা-অভিষেক দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এই সমাবেশে একেবারে নিচুতলা থেকে শুরু করে উপরতলার সাংসদ, নেতা, মন্ত্রীকে একসঙ্গে পাওয়া যায়। সেই কারণেই শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্ব এই চেতাবনি দেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেননি।
দেখুন বিস্তারিত খবর