দার্জিলিং: যত শীঘ্র সম্ভব পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচন হবে। পাহাড়ের নেতাদের নিয়ে সোমবার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এই আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাহাড়ের নেতারাও এদিন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, পৃথক রাজ্য নয়। রাজ্যের ভিতরেই থেকে বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে পাহাড়। একদা বিজেপি ঘনিষ্ঠ নেতা রোশন গিরি সাফ বলেন, বিজেপি পাহাড়ের মানুষকে ঠকিয়েছে। তবে আগামী ২ এপ্রিল কালিম্পংয়ে নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হবে।
সোমবার দুপুর ৩টে নাগাদ দার্জিলিংয়ের রিচমন্ড হিলের বাংলোয় এই বৈঠক হয়। সেখানে ছিলেন ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার (BGPM) অনিত থাপা ও তাঁর সঙ্গীরা। ছিলেন কালিম্পংয়ের বিধায়ক রুডেন লেপচা, আমন লামা। মমতার সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও ইন্দ্রনীল সেন।
সোমবার সকালেই ম্যালে ভ্রমণে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন দুপুরে পাহাড়ের চার দলকে নিয়ে বৈঠকে বসবেন। প্রধানত জিটিএ নির্বাচন নিয়ে প্রত্যেকের মতামত জেনে নেওয়ার চেষ্টা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। বিশেষত গত পুরসভা নির্বাচনে পাহাড়ে আনকোরা একটি দল হামরো পার্টি জিতেছে। সেই হিসেবে এবারের জিটিএ ভোটে নতুন সমীকরণ কাজ করবে বলেই রাজনীতিক মহলের অনুমান।
এদিন বৈঠক শেষে আমন লামা বলেন, বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম ছিল জিটিএ ভোট। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের বলেছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভোট হবে। তারপর ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে এগনো হবে। কারণ, পাহাড়ে পঞ্চায়েত গঠন নিয়ে কেন্দ্রের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
বিধায়ক আরও বলেন, কালিম্পং নিয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত না হলেও তাঁরা তাঁদের দাবির কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। তিনি বলেন, যাঁরা বলছেন, জিটিএ দরকার নেই, তাঁরা আমজনতার বিরুদ্ধে কথা বলছেন। এই মুহূর্তে পাহাড়বাসীর দাবি, আগে জিটিএ গঠন হোক, তারপর পঞ্চায়েত। তবে আমরা পঞ্চায়েত গঠনের দাবি থেকে একচুলও সরছি না বলে জানিয়ে দেন তিনি।
জিটিএ নির্বাচনে জোট গঠনের বিষয়ে অনিত থাপা বলেন, সেসব নিয়ে কোনও কথা হয়নি। সেগুলি পরে আলোচনা করা যাবে। আপাতত আমাদের দাবিগুলি আমরা জানিয়ে দিয়েছি। জোট বা ভোট সমঝোতা নিয়ে পরে চর্চা হবে।
লামা বলেন, মুখ্যমন্ত্রীকে আমরা আন্দোলন চলাকালীন বকেয়া বিদ্যুৎ বিল মকুবের আর্জি জানিয়েছি। এছাড়াও জিটিএর হাতে নিয়োগ ক্ষমতা, শিক্ষকের চাকরিসহ বেশ কয়েকটি দাবিসনদ পেশ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেগুলি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।