কলকাতা: ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি (#OnePersononePost) নিয়ে তৃণমূল ‘সুপ্রিমো’ শনিবার কী পদক্ষেপ করেন, শনিবার সে দিকেই নজর ছিল রাজনৈতিক মহলের। বিকেলে কালীঘাটের হাইভোল্টেজ বৈঠকে (TMC Meeting today) আদৌ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। কারণ, তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কেউই ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, তিনি এড়িয়ে গিয়েছেন। তবে, দলের আর এক প্রবীণ নেতা, সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, এ দিন তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতি (TMC National Executive) গড়া ছাড়া আর কোনও বিষয়ে আলোচনা হয়নি। পরে ফিরহাদ হাকিমকে একই প্রশ্ন করা হলে, তিনি বলেন, ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি নিয়ে দলনেত্রীর সিদ্ধান্ত আগেই জানিয়েছি। এর পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদন নিয়ে নতুন করে দলের নীতিনির্ধারণ করা হবে।
পুরভোট নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এ দিন ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নিয়ে (TMC Working Committee) তৃণমূলের চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত জানা না গেলেও, দলের ‘সুপ্রিমো’ সংগঠনের যাবতীয় পদ অবলুপ্ত করেছেন। এ দিন কালীঘাটে বৈঠক শেষে পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chaterjee) সাংবাদিকদের জানান, ২০ জনের জাতীয় কর্মসমিতি ঘোষণা করেছেন দলনেত্রী। সৌগত রায়, ডেরেক ও’ব্রায়েনের মতো নেতাদের জায়গা হয়নি এই জাতীয় কর্মসমিতিতে।
পার্থ জানান, সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের কে কোনও পদে থাকবেন, তা এই ২০ জনের তালিকা থেকেই ঠিক করা হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই তা ঠিক করবেন। এ দিন ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত জানা না গেলেও যাবতীয় পদের অবুলপ্তি ঘটিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তিনি নতুন করে সংগঠন ঢেলে সাজানোর দিকেই এগোচ্ছেন।
আরও পড়ুন: TMC National Executive: তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতিতে ২০ সদস্য, তুলে দেওয়া হল সব পদ
কয়েক দিন ধরেই সোশাল মিডিয়ায় ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নিয়ে চাপানউতোর চলছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) ভাইবোনেরা এবং সংগঠনে তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিতরা তৃণমূলে এক ব্যক্তি, এক পদ নীতি চালুর দাবিতে সোশাল মিডিয়ায় সরব হন। আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়, অদিতি গায়েন, সার্থক বন্দ্যোপাধ্যায়, অগ্নিশা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অভিষেকের তুতো ভাইবোনেরা সোশাল মিডিয়ায় এই নীতির পক্ষে সওয়াল করতে থাকেন। অস্বস্তিতে পড়তে হয় শীর্ষ নেতৃত্বকে। তার পরই আসরে নামতে হয় ফিরহাদ হাকিমকে। দলের অবস্থান স্পষ্ট করে ফিরহাদ বলেন, ‘এই বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। এক ব্যক্তি, এক পদ নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট হচ্ছে। আসলে এখানে নেত্রীর পুরো কথা তুলে ধরা হয়নি। কলকাতার মেয়রের দাবি, এক ব্যক্তি, এক পদকে সমর্থন করেছেন মমতা। কিন্তু তিনি এটাও স্পষ্ট করেছেন, পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে শেষ সিদ্ধান্ত নেবেন তিনিই।
ফিরহাদ বুঝিয়ে দেন, অনেকের অনেক মত থাকতে পারে। গণতান্ত্রিক দল তৃণমূল কংগ্রেস। সবার সব মতকে গুরুত্ব দিয়ে শোনা হবে। আলোচনা হবে। তবে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।
আরও পড়ুন: TMC: বিরোধীশূন্য বিধাননগর, বাকি তিন পুরনিগমে সবুজ ঝড়ে বিরোধীদের ধরাশায়ী হওয়ার পূর্বাভাস
ফিরহাদের এই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টায় মধ্যে শনিবার কালীঘাটে জরুরি বৈঠক ডাকেন মমতা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সী, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ফিরহাদ হাকিম সহ দলের শীর্ষনেতাদের এই বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। সেখানেই নতুন করে জাতীয় কর্মসমিতি ঠিক হয়।