কলকাতা: কোথায় গেল বাংলায় বিজেপির (BJP) ৩৫-এর স্বপ্ন? সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। লোকসভা ভোটে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপির। ২০১৯ সালে বিজেপি পেয়েছিল ১৮টি আসন। এবার তা নেমে দাঁড়িয়েছে ১২ আসনে। কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র একটি আসন। বহরমপুরে অধীর মিথ ভেঙে গিয়েছে। পাঁচবারের জেতা সাংসদ কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী হেরেছেন তৃণমূলের বহিরাগত প্রার্থী ইউসুফ পাঠানের কাছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata banerjee) অধীরকে বিজেপির দালাল বলেছেন। সিপিএম সেই শূন্যতেই রয়ে গেল। আবারও তারা শূন্য। দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম মুর্শিদাবাদে পরাজিত হয়েছেন। তাদের ভোট শতাংশ হয়তো সামান্য বেড়েছে। অনেক ভোট বেড়েছে তৃণমূলের। সব মিলিয়ে বাংলায় মমতা ম্যাজিক অব্যাহত, যা দুবছর পর রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে তৃণমূলকে আরও শক্তি যোগাবে। আবারও বাংলায় সবুজ ঝড়। জেলায় জেলায় উল্লাসে এবং উচ্ছ্বাসে মেতেছেন তৃণমূল সমর্থকরা।
বাংলায় লোকসভা ভোটে ৩০ থেকে ৩৫ আসনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে একেবারে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বিজেপি। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের মতোই এবারও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে অমিত শাহ, রাজ্যের তাবড় বিজেপি নেতারা প্রচার চালিয়েছেন। সভায় শিক্ষায় নিয়োগ থেকে শুরু করে রেশন দুর্নীতি, গরু পাচার, কয়লা পাচার, তৃণমূলের সন্ত্রাস-সহ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁরা তৃণমূলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন। মোদি-শাহ হুমকি দিয়েছিলেন, দুর্নীতিগ্রস্তদের কাউকে ছাড়া হবে না। এক এক করে সবাইকে জেলে ঢোকানো হবে। তাঁদের কথায় উঠে এসেছিল সন্দেশখালির প্রসঙ্গও। অমিত শাহ তো বলেছিলেন, সেখানকার অপরাধীদের উল্টো করে ঝোলানো হবে। বিজেপি সন্দেশখালিকে বড় ইস্যু করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাও কাজে লাগেনি। বসিরহাটে বিজেপি প্রার্থী করেছিল সন্দেশখালি আন্দোলনের মুখ রেখা পাত্রকে। রেখাকে তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম পাঁচ লক্ষেরও বেশি ভোটে হারিয়ে দিয়েছেন। সন্দেশখালি বিধানসভা কেন্দ্রেও তৃণমূল জয়ী হয়েছে।
আরও পড়ুন: কীর্তির ব্যাটিংয়ে মাঠের বাইরে দিলীপ
বাংলার ভোটে শুধু বিজেপিরই হাল খারাপ হয়নি, জোর ধাক্কা খেয়েছে বামেরা এবং কংগ্রেসও। বামেরা গত লোকসভায় বাংলা থেকে একটি আসনও পায়নি। এবার তারা কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে লড়াই করেছে। সেই জোটের পিছনে বড় ভূমিকা ছিল সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (Muhammad Salim) এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর (Adhir Chowdhury)। দুজনেই মুর্শিদাবাদ জেলায় পাশাপাশি দুটি কেন্দ্রে লড়াই করে হেরেছেন। সেলিম-অধীরের দাবি ছিল, এই জোট উদীয়মান শক্তি হিসেবে উঠে আসবে। অধীর সোমবারও দাবি করেন, এই জোটই আগামি বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করবে। ফল প্রকাশের পর এদিন অধীর বলেন, আমার হার নিয়ে কাউকে দোষারোপ করছি না। চেষ্টা করেছি, পারিনি। বিধানসবা ভোটে জোট থাকবে কি না, পরের বিষয়। সিপিএম সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। মমতা এই জয়ের কৃতিত্ব দিয়েছেন বাংলার মানুষকে।
অন্য খবর দেখুন