হুগলী: আরজি কর কাণ্ডের (RG Kar Incident) প্রতিবাদে পুজো অনুদান (Durga Puja Donation) প্রত্যাখ্যান করছে একের পর এক পুজো কমিটি। উত্তরপাড়ার তিনটি, কোন্নগরের একটি কমিটি ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে তারা পুজো অনুদান গ্রহণ করবে না। এবার পাল্টা পুজো অনুদান নিতে ইচ্ছুকদের জমায়েতের ডাক দিলেন কোন্নগর পুরসভার (Konnagar Municipality) চেয়ারম্যান স্বপন দাস। হোয়াটসঅ্যাপ মাধ্যমে কোন্নগরের সব পুজো কমিটিকে চেয়ারম্যান লিখেছেন, যারা পুজোর সরকারি অনুদান ৮৫ হাজার টাকা নিতে ইচ্ছুক সেই সব ক্লাব মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায় পুজো কমিটির ব্যানার পোস্টার নিয়ে চলচ্চিত্রম মোড়ে জমায়েত করুন। আর এনিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
বিজেপি (BJP) নেতা প্রণয় রায়ের অভিযোগ, স্বপন দাস যে আহ্বান করেছেন এটা থেকে পরিষ্কার যে তারা রাজনীতি করার জন্যই এই অনুদান দিচ্ছেন। আজকে উত্তরপাড়া যে পথ দেখিয়েছে কোন্নগরের মাস্টার পাড়াও পুজোর অনুদান প্রত্যাখ্যান করেছে। রাজ্যে বিভিন্ন জায়গায় পুজো কমিটি আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছে এভাবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন উই ওয়ান্ট জাস্টিস। আর জাস্টিসের জন্য যারা অনুদান ফিরিয়ে দিচ্ছেন তাদের পাল্টা মিছিল করছে তৃণমূল (TMC)। এটা থেকে পরিষ্কার তারা জাস্টিস চায়না।
কোন্নগর মাস্টারপাড়া পুজো কমিটির ক্যাশিয়ার স্বপন মুখোপাধ্যায় বলেন, চেয়ারম্যান যে মেসেজ করেছেন হোয়াটসঅ্যাপে সেটা আমাদের কাছেও এসেছে। এর অর্থ হল যারা অনুদান বয়কট করছে তাদের চাপে রাখা। উনারা হয়তো চাইছেন অনুদান যারা নিতে চায় তাদেরকে ডেকে যদি বলিয়ে নেওয়া যায় যে তারা অনুদান নেবে তাহলে পরে আর তারা অনিচ্ছুক হতে পারবে না। আমাদের পুজো কমিটির সম্পূর্ণ অরাজনৈতিকভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাড়ার মহিলাদের কথা ভেবে। সেটাকে রাজনৈতিক রং দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা কোনও জায়গায় মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই বলিনি, শুভেন্দু অধিকারীর পদত্যাগ চাইও বলিনি। পুজো কমিটির সঙ্গে সব ধরনের মানুষ থাকেন। আমাদের ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের এবং পুজো কমিটির অনেকেই তাঁকে ভোট দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: পানীয় জলের সমস্যার অভিযোগ, বিক্ষোভে এলাকাবাসী
কোন্নগর দেবপাড়া সার্বজনীনের সম্পাদক সায়ন্তন মিত্র বলেন, চেয়ারম্যানের আহ্বান আমাদের কাছেও এসেছে। আমাদের পুজো খুবই ছোট, সরকারি অনুদান আমাদের খুবই কাজে লাগে। কিন্তু কী কারণে মিছিল বা কেন যেতে হবে সেই বিষয়টা আমরা জানি না। এই মিছিল টা কি আর জি করের জাস্টিসের জন্য হচ্ছে নাকি অন্য কোনও কারণ আছে সেটা জানিনা।
কোন্নগর পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন দাস জানিয়েছেন, একটা মিথ্যা প্রচার চলছে যে গোটা কোন্নগরের সব পুজো কমিটি নাকি অনুদান প্রত্যাখ্যান করছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের এই জমায়েত। যারা আসবেন তারা অনুদান পাবেন, যারা আসবেন না তারাও পাবেন। কিন্তু কারা বয়কট করছে না সেটাই আমরা দেখে নিতে চাইছি। আমি চেয়ারম্যান বা দলের লোক হিসেবে এই আহ্বান করিনি। দুর্গোৎসব আমাদের বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব, সেটাকে নিয়ে এভাবে মিথ্যা প্রচার করতে দেওয়া যায়না। যে ক্লাব বয়কট করেছে তারা এমন ভাব দেখাচ্ছে যেন কত সামাজিক কাজ করে। ক্লাবের ১০০ শতাংশ লোক সিপিএম। তারা যদি সমাজকে বার্তা দেয় তাহলে মানবো কেন?
আমরা নিরপেক্ষভাবে কোনও ঝান্ডা ছাড়াই সবাইকে আসতে বলেছি। মুখ্যমন্ত্রীর এই যে অনুদানের উদ্যোগ সেটাকে আমরা সাধুবাদ জানাবো। আসলে এই টাকা দেওয়ার মধ্যে দিয়ে সরকার দুর্গাপূজাকে ঘিরে বাংলায় গরীব খেটে খাওয়া মানুষের কাছে অর্থনৈতিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার প্রচেষ্টা তা নষ্ট করার চেষ্টা করছে বিরোধীরা। এরা আসলে গরীব মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন চায়না। তাই এই জমায়েতের মধ্যে দিয়ে আবার প্রমাণ হয়ে যাবে যে প্রচার চলছে কোন্নগরের কোনও ক্লাব অনুদান নেবে না সেটা মিথ্যে।