কলকাতা : ঘড়ির কাঁটা সাড়ে এগারোটার কাছাকাছি । ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলেন বিজেপি বিধায়করা । শুভেন্দু অধিকারী-মনোজ টিগ্গাদের এহেন উত্তেজনার মুহূর্তে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে সভার ভিতরে । তাঁদের শান্ত করার চেষ্টা করতে দেখা যায় রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে । কিন্তু, কে শোনে কার কথা ! বিজেপির তাণ্ডবে গণতন্ত্র তখন ভুলুণ্ঠিত ।
এই ঘটনার পর তখনও তিরিশ মিনিট কাটেনি । টুইট করলেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য । বোঝানোর চেষ্টা করলেন, রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি । তাঁর দাবি ছিল, এ রাজ্যে প্রতিবাদের কোনও ভাষা নেই । বিরোধীদের কণ্ঠ রোধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল সরকার । আজ সে ঘটনা আরও এক বার প্রমাণিত হল । সোমবাসরীয় বেলায় অমিতের এই টুইট ঘিরে নয়া জল্পনা । কী ভাবে বিধানসভার ভিতরের ছবি বাইরে চলে এল? উঠতে শুরু করল এই প্রশ্নই ।
সন্দেহ নেই, হামলা-ঝামেলার সময় সেই ভিডিয়ো করেছিলেন কোনও একজন বিজেপি বিধায়ক । পরে তিনি তা পাঠিয়ে দেন মালব্য-র দফতরে । তার পরই মালব্য তা টুইট করেন ।
আরও পড়ুন: TMC-BJP Clash Assembly: শুভেন্দুর ঘুসিতে নাক ফাটল তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের, ভর্তি এসএসকেএমে
এ দিনের মারধর-হাঙ্গামার ঘটনায় বিজেপি বিধায়কদের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি বলেন, “এমন ঘটনা কোনও ভাবেই আশা করা যায় না । এটা অত্যন্ত লজ্জার । মহিলাদের উপরও বিজেপি বিধায়করা হামলা চালিয়েছেন । রেহাই মেলেনি মহিলা নিরাপত্তা রক্ষীদেরও । কোনও ভাবেই এই ঘটনা সমর্থন করা যায় না । এমন পরিস্থতি বিধানসভায় ভিতরে কোনও দিনই ঘটেনি ।”
এখানেই শেষ নয় । যে ভাবে বিধানসভার ভিতরের ছবি প্রকাশ্য চলে এসেছে, তার নিন্দাও শোনা গিয়েছে স্পিকারের গলায় । তিনি বলেন, “বিরোধী দলকে বেশি বলার , বেশি প্রশ্নের সুযোগ দেওয়া হয়েছে । প্রশ্ন করার বেশি সুযোগ দেওয়া হয়েছে ।”
হতাশাগ্রস্থ লোডশেডিং MLA আজ বিধানসভায় ঘুষোঘুষি করলেন।@jdhankhar1 ওনাকে কখন সংবিধানের পাঠ দেবেন?
ভূতের ভোটে জেতা @SuvenduWB-র জানা উচিত,বিধানসভা যে মারামারি করার জায়গা নয়। গুণ্ডামি না করলে কি @BJP4Bengal তে পদন্নোতি হয় না?
বিধানসভা কক্ষে বিজেপির বর্বরতাকে ধিক্কার!
— Sudip Raha (@aitcsudip) March 28, 2022
অধ্যক্ষের আরও অভিযোগ, “ওরা কী চায় ওরা নিজেরাই জানেন না । ওরা আইন কানুন নিয়ম জানেন না । মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য পেশ করার সময় যে ভাবে বাধা দেওয়া হয়, তা দুর্ভাগ্যজনক । লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী বলার সময়ও এ রকম বাধা দেওয়া হয় না ।” এর পরই সভার ভিতরের ছবি বাইরে আসার বিষয়ে মুখ খোলেন অধ্যক্ষ । তিনি বলেন, “বিধানসভার অভ্যন্তরের ছবির তুলে বাইরে পাঠানোর ঘটনা ঠিক না । এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং অনভিপ্রেত ঘটনা ।”