
কলকাতা: অভিশপ্ত করমণ্ডলের আহত যাত্রীদের নিয়ে হাওড়া স্টেশনে এসে পৌঁছল উদ্ধারকারী ট্রেন। হাওড়ায় মেডিক্যাল টিম, প্রাথমিক সাহায্যের জন্য একাধিক ব্যবস্থা করে রাখা আছে। আহত যাত্রীদের দ্রুত যাতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়, তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে রেলের তরফে।
জানা গিয়েছে, আহত যাত্রীদের নিয়ে হাওড়া স্টেশনের ৮ নম্বর প্লাটফর্মে এসে পৌঁছয় যশবন্তপুর হাওড়া ট্রেন। আহত বা অসুস্থ যাত্রীদের জন্য ৮ নম্বর প্লাটফর্মে আপৎকালীন মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য মজুদ রাখা হয়েছে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা। গুরুতর আহত যাত্রীদের সঙ্গে সঙ্গে স্টেশন থেকে দ্রুত সেই অ্যাম্বুল্যান্স করে রেলের বিআর সিং হাসপাতাল বা অন্যান্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত এ রাজ্যের বহু যাত্রী। মালদা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ একাধিক জেলার বাসিন্দা ছিলেন ট্রেনে। তাঁদের অনেকেরই এখনও কোনও খোঁজ মেলেনি। হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করছে উদ্বিগ্ন পরিবার। দুর্ঘটনাস্থলে দোলা সেন, মানস ভুঁইঞা পৌঁছে গিয়েছেন। রাজ্যের দু’টি উদ্ধারকারী দলও রয়েছে বালেশ্বরে। পৌঁছেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন:Mamata Banerjee | Balasore | রেল দুর্ঘটনার সঠিক তদন্তের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
শুক্রবার সন্ধ্যায় বালেশ্বরের কাছে এই ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা হয়। শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন মালগাড়ির উপর উঠে যায়। দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের জেরে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের প্রায় ১৫টি কামরা লাইনচ্যুত হয়। এদিকে পাশের লাইনে যশবন্তপুর-হাওড়া সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেসের সঙ্গেও ধাক্কা লাগে উলটে পড়া বগিগুলির। এর জেরে ওই ট্রেনটিরও দু’টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে একাধিক রেলের কামরা। লাইন থেকে ছিটকে পড়েছে একাধিক রেলের বগি। এই ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার জেরে শয়ে শয়ে যাত্রীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। শেষ খবর অনুযায়ী, এখনও মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৬০। আহত প্রায় ৯০০ জন।
ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে এনডিআরএফ। শুক্রবার রাতে আলো কমে যাওয়ায় উদ্ধারকাজে বেগ পেতে হয়েছিল। শনিবার সকাল থেকে আলো ফুটতেই গতি আসে। উদ্ধারকাজে নামানো হয়েছে বায়ুসেনার Mi-17 বিমান। গ্যাস কাটার দিয়ে কেটে ট্রেনের উলটে যায়ওয়া বগিগুলি থেকে মৃতদেহ বের করে আনা হচ্ছে। একাধিক যাত্রীর এখনও রেলের কামরা আটকে থাকার সম্ভাবনা। শনিবার সকালে সকালে ঘটনাস্থলে যান রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব-সহ রেলের আধিকারিকেরা। ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন রেলমন্ত্রী। কথা বলেন উদ্ধারকারীদের সঙ্গেও। কীভাবে এমন বিপর্যয়, তার জন্য রেলের তরফে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হবে বলে জানান রেলমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই আহত এবং মৃতদের পরিবারের জন্য আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করা হয়েছে। মৃতদের পরিবার পিছু ১০ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। গুরুতর আহতদের দেওয়া হবে ২ লাখ এবং অল্প আহতদের ৫০ হাজার টাকা।