খড়গপুর: ফের বিতর্কিত মন্তব্য করে খবরের শিরোনামে দিলীপ ঘোষ। তৃণমূলকে ‘ছোটলোকের দল’ বলে মন্তব্য করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি। মঙ্গলবার খড়গপুরে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি। সেখানেই দিলীপ বলেন, ‘তৃণমূল আবার সৌজন্যবোধ কবে শিখল? ছোটলোকদের সৌজন্যবোধ হয় নাকি? মমতা ব্যানার্জির ভাষা শুনেছেন? এটা সৌজন্যবোধ! প্রধানমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে, আমাদের কী কথা বলেননি উনি? আর ওঁর মন্ত্রীদের কথা তো কানে শোনাই যায় না। কথা শুনলে গঙ্গাস্নান করতে হয়। ওই জন্য সৌজন্যের কথা বলবেন না কালীঘাটে থাকুন, শান্তিতে থাকুন। এসি রুম থেকে বেরোবেন না, গায়ে রোদ লাগতে পারে, ইটও পড়তে পারে। ভাইপো দম থাকলে দিলীপ ঘোষের সামনে এসে দাঁড়াও না। কে কত ভোটে জিতবে দেখিয়ে দেবে মেদিনীপুরের লোক।’ উল্লেখ্য, সম্প্রতি অভিষেক ব্যানার্জি বলেছেন, ‘আমাদের সৌজন্য, আমাদের দুর্বলতা নয়। সিপিএমকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছে, আর বিজেপি কে? বিজেপি এখনও মানুষের ক্ষমতা দেখেনি। সব চোর, জোচ্চোর, চিটিংবাজ বিজেপিতে যায়।’ এদিন তাঁরই পাল্টা দিলেন দিলীপ।
এছাড়াও এদিন তিনি বলেন, ‘যখন বায়রনকে টিকিট দিয়েছিল কংগ্রেস, জানত না ওঁর সম্পর্কে? ও কবে কংগ্রেস করেছে? ওঁর টাকা-পয়সা আছে, বড় ব্যবসায়ীর ছেলে, তাই টিকিট দিয়ে দিয়েছে। এখন সব থেকে বড় দুঃখের বিষয় সংখ্যালঘু সমাজ এতদিন তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিয়ে এসেছে। কিন্তু তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন, বঞ্চিত হয়েছেন। তাঁরাই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে ওঁকে জিতিয়েছিলেন। তাঁরা এখন সব থেকে বেশি হতাশ। তাঁরা এখন কী করবেন। কংগ্রেস, সিপিএমের ভোটার যাঁরা, তাঁরা তো গত বিধানসভায় আমাদের বিরুদ্ধে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা দেখে নিয়েছেন তৃণমূল গদ্দারি করছে। তাঁরা তৃণমূলকেই শিক্ষা দেওয়ার জন্য এটা করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, আমে-দুধে এক হয়ে গিয়েছে, আঁটি পড়ে আছে সিপিএম আর কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: State Election Commissioner | রাজ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়ে জটিলতা বহাল
কুড়মি সমাজের সঙ্গেও তৃণমূল প্রতারণা করেছে বলে এদিন মন্তব্য করেন দিলীপ। তিনি বলেন, ‘তৃণমূলের নেতারা কুড়মি নেতাদের কিছু টাকা-পয়সা দিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন এইভাবে তাদের কিনে নেবেন। পরিকল্পিতভাবে ওঁদের দিয়ে আমার বাড়িতে আক্রমণ করিয়েছিল। যারা করেছিল তারা মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামের লোক ছিল না। পুরুলিয়া থেকে এসেছিল। অভিষেকের কনভয়ে যা হামলা হয়েছে সেই নিয়ে বলা হচ্ছে কুড়মি সমাজ করেনি, বিজেপি করেছে। তাহলে কুড়মি সমাজের নেতাদের প্রতি এখন প্রতিহিংসা কেন? একজন টিচার তাঁকে ট্রান্সফার করা হচ্ছে কোচবিহারে। তাঁকে জেলেও ঢোকানো হচ্ছে। তার সঙ্গে সঙ্গে একাধিক নেতাকে ঢোকানো হয়েছে। কোনও প্রমাণ নেই যে ওরা আক্রমণ করেছে। কোনও প্রমাণ নেই কুড়মিরা গাড়ি ভেঙেছে। তাহলে গাড়িটা ভাঙল কে? গাড়িটা নিজেরা ভেঙে অভিষেককে নেতা করার চেষ্টা করছেন। একটা ভিডিও ফুটেজ এল না। লাখ লাখ লোকের হাতে মোবাইল ছিল, ছবি তুলছিল। হাজার হাজার পুলিশ ছিল কেউ দেখল না। এত মিডিয়ার লোক ছিল, কে গাড়ি ভাঙল তা দেখলাম না, হঠাৎ করে ভাঙা গাড়ি ঢুকে গেল। এইসব চালাকি করলে চলবে না। এইসব করে কুড়মি সমাজকে বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে। জঙ্গলমহলের মানুষকে বদনাম করার চেষ্টা চলছে।’