ওয়েব ডেস্ক: বছরের পর বছর ইতিহাসের জীবন্ত সাক্ষী হয়ে রয়েছে বল্লাল সেনের যুগে নির্মিত প্রাচীন পাঁচটি মন্দির। হুগলি (Hooghly) জেলার গোঘাটের বালি দেওয়ানগঞ্জের হালদারপাড়ার রাউত পরিবার আজও সেই ইতিহাসের ধারক ও বাহক। কয়েকশো বছর ধরে এই রাউত পরিবারে একসঙ্গে পূজিত হয়ে আসছে শিব ও দুর্গা (Shiv And Durga Puja)। এখন যুগ বদলেছে, সমাজ পাল্টেছে, তবুও ঐতিহ্য যেন সময়ের কাছে হার মানেনি। আজও পরিবারের সদস্যরা এই শিব-দুর্গার পুজোকে কেন্দ্র করে একত্রিত হন, উৎসব পালন করেন এবং ঐতিহ্য রক্ষায় এগিয়ে আসেন।
মন্দিরের চুন-সুরকির দেওয়াল আজ খসে পড়েছে, প্যালেস্তারা বহু আগেই ভেঙে গিয়েছে, তবুও মন্দিরের সামনের পোড়ামাটির শিব–দুর্গার মূর্তি ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে কয়েক বছর আগে মন্দিরের সংস্কার করা হলেও পরিবারের সদস্যরা জানান, এই পূজার সূচনা করেছিলেন রঘুনাথ রাউত। তার নেপথ্যে রয়েছে এক রোমহর্ষক গল্প।
আরও পড়ুন: সিংহ নয়, বাঘের পিঠে দুর্গা! জেনে নিন মদনপুরের চ্যাটার্জি বাড়ির পুজোর কাহিনী
কথিত আছে, মৃত্যুর পর শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার সময় পুনরুজ্জীবিত হন রঘুনাথ রাউত। সেই রাতেই তিনি আবার দেবী দুর্গার স্বপ্নাদেশ পান। দেবী তাঁকে নির্দেশ দেন, পাশের পুকুরে শিব–দুর্গার মূর্তি রয়েছে, তা নিয়ে এসে প্রতিষ্ঠা করতে। প্রথমে ভয়ে তিনি তাতে রাজি না হলেও পরদিন পুকুরঘাটে একটি কলশির ওপর সাজানো ঘট, আমপল্লব ও ফুল দেখতে পেয়ে তিনি পূজা শুরু করেন। সেই থেকেই রাউত পরিবারের শিব–দুর্গা পূজা চলছে।
আগে মহিষ বলি হত, এখন ছাগ বলির রীতি বজায় আছে। প্রতিপদের দিন ঘট তোলা দিয়ে পূজার সূচনা হয়। যদিও বর্তমানে পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে বসবাস করেন, পুজোর সময় সবাই একত্রিত হন। পুজোর সমস্ত উপকরণ বাড়িতেই তৈরি হয়। পারিবারিক হলেও এই পুজো এলাকাজুড়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং সর্বজনীন উৎসবের রূপ নিয়েছে।
দেখুন আরও খবর: