কলকাতা: নীলাভ আকাশে সাদা মেঘের লুকোচুরি জানান দিচ্ছে মা আসছেন। শহর জুড়ে উৎসবের আমেজ। বিভিন্ন থিমের (Kolkata Theme Puja Pandal) ছোঁয়ায় কলকাতার সব পুজো সেজে উঠেছে। সেই তালিকায় রয়েছে কলকাতার যোধপুর পার্ক ৯৫ পল্লীর পুজো (Kolkata 95 Pally Durga Puja)। এবারের তাদের ভাবনায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বাংলার ভাণ্ডার কতটা সমৃদ্ধ। থিমের নাম ‘হে বঙ্গ ভাণ্ডারে’। শুভ চিন্তনে ব্যবহার করা হয়েছে শঙ্খ। মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর ‘বঙ্গভাষা’ কবিতায় লিখেছিলেন, ‘হে বঙ্গ, ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন…’! এ ভাবেই রত্নগর্ভা মা জগৎজননী এই বঙ্গভূমির প্রাচুর্য ব্যাখ্যা করেছিলেন তিনি। মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, বাংলার এই মাটি কী বিপুল সম্পদশালী! এই থিমের মাধ্যমে দেবী দুর্গা মানবজীবনের আত্মিক একতার প্রতীক হয়ে উঠবেন।
৭৫ বছরে পা দিল যোধপুর পার্ক ৯৫ পল্লীর পুজো। এবারের যোধপুর পার্কের মণ্ডপে ফুটে উঠবে বঙ্গ ভাণ্ডার। শুধুমাত্র বঙ্গ ভাণ্ডারে প্রাকৃতিক নয় সম্পদ,সাংস্কৃতিকও বটে। মণ্ডপ তৈরি হয়েছে বাঙালিয়ানা, বাঙালিকে, বাংলার ভাণ্ডারে কী কী রয়েছে সেই সমস্ত তুলেধরেছেন এই ৯৫ পল্লী। যুগে যুগে এই মাটিতে আবির্ভাব ঘটেছে মহান মনীষীদের। আজ যখন বাংলা ভাষা নিয়ে সারা দেশে এক প্রতিকূল ও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, ঠিক সেই সময় রত্নগর্ভা বাংলার সোনার সন্তানদের স্মরণ করছে যোধপুর পার্কের ৯৫ পল্লী অ্যাসোসিয়েশন দুর্গোৎসব কমিটি কর্তৃপক্ষ। থিমের নাম ‘হে বঙ্গ ভাণ্ডারে’। এ বারের আয়োজনের থিম সম্পর্কে কথা বলেছেন সংশ্লিষ্ট কমিটির সভাপতি জানান, মাইকেলের কবিতার লাইন আশ্রয় করেই তাঁদের এ বারের পুজোর থিম ‘হে বঙ্গ ভাণ্ডারে…’!
আরও পড়ুন: লোককথা আর জমিদারি সংস্কৃতি মিশে রয়েছে টাকির পুবের বাড়ির পুজোয়
এ বার শিল্পী শক্তি শর্মার তত্ত্বাবধানে তৈরি হচ্ছে মায়ের মূর্তি তথা সমগ্র মণ্ডপ। ভারত তথা গোটা বিশ্বের কাছে বাংলার মনীষীরা আগামীর পথ দেখিয়েছিল। তাঁদের চিন্তা, দূরদর্শীতা বিশ্ব দরবারের দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। এ বারের শারদোৎসবে তাঁদের সেই সমস্ত অবদান তথ্য-সহ তুলে ধরা হচ্ছে। মণ্ডপে ঢুকলেই দেখা যাবে, ঠাকুর শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস থেকে শুরু করে অস্কারজয়ী, নোবেলজয়ী কিংবদন্তী বাঙালিরা। মণ্ডপ সাজিয়ে তুলতে বাঙালি মনীষীদের প্রতিকৃতি ব্যবহার করা হচ্ছে। মণ্ডপ সজ্জায় ব্যবহার করা হয়েছে, রট আয়রন। সঙ্গে রয়েছে প্লাস্টার অফ প্যারিস, কাঠ ও কাগজের মনোগ্রাহী কারুকাজ। এ ছাড়াও, মণ্ডপসজ্জায় শঙ্খের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। তার জন্য দিঘা থেকে প্রায় হাজার খানেক শঙ্খ আনা হয়েছে। প্রচুর পরিমাণে সিন্দুক ব্যবহার করা হয়েছে। আলো দিয়ে মণ্ডপ সাজিয়ে তোলার দায়িত্বে রয়েছেন শিল্পী দীনেশ পোদ্দার।
অন্য খবর দেখুন