প্রিয় মুখার্জি, কুলতলি: বিয়ে (Marriage) অতি পবিত্র বন্ধন, একটি প্রতিষ্ঠান বলা যেতে পারে। দুটি মানুষ যাতে এক ছাদের তলায় একসঙ্গে সারাজীবন বসবাস পারে তারই একটি আইনি স্বীকৃতি বিবাহ। তবে সমাজ বদলেছে, সেই সঙ্গে মানুষের চাওয়া পাওয়া বদলাচ্ছে। সুন্দরবন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ এক অন্য কাহিনির সাক্ষী থাকল। দুই নারী বিবাহ বন্ধনে আবব্ধ (Women Marriage) হলেন।
সুন্দরবনের মন্দিরবাজারের রিয়া সরদার (Riya Sarder) ও বকুলতলার রাখি নস্কর (Rakhi Naskar) সমাজের চোখ রাঙানি নিয়ে মাথা ঘামাইনি। তারা শুধু দুজনের সঙ্গে একসঙ্গে থাকতে চেয়েছেন। ছোটবেলাতেই মা-বাবাকে হারিয়ে মাসি-মেসোর কাছে বড় হয়েছেন রিয়া। অন্যদিকে রাখি নিজের পরিবারেই বেড়ে ওঠেন। দুজনেই পেশায় নৃত্যশিল্পী। প্রায় দুই বছর আগে পরিচয় হয় তাদের, ফোনে বন্ধুত্ব, তার পর সেই সম্পর্ক গভীর হয়েছে।
রিয়ার পরিবার প্রথমে এই সম্পর্কের কথা মেনে নেয়নি। রাগে বাড়ি ছাড়েন রিয়া। রাখির বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। রাখির পরিবার শুরু থেকেই পাশে দাঁড়ায়। প্রতিবেশীদের সঙ্গে আলোচনা করেই তাদের বিয়ের আয়োজন হয় স্থানীয় এক মন্দিরে। পরস্পরের গলায় মালা পরিয়ে বিবাহের রীতি মেনে দুজনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।
সমাজের নানা বাঁধাধরা নিয়ম, ভয় আর সংকোচকে অগ্রাহ্য করে নিজের মতো করে বাঁচার সাহস দেখালেন রিয়া ও রাখি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এই দুই নারীর বিবাহ। এই ঘটনা সমাজে কী প্রভাব পড়বে সেই নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন? একাংশ নেটিজেনদের বক্তব্য, ‘এইভাবে মেয়েরা যদি মেয়েদের বিবাহ করে, তাহলে একজন পুরুষের আর বাবা হওয়ার ভাগ্য কোনওদিন হবে না। পরিবারে বংশ বিস্তার হবে না।‘ আবার অপর এক নেটিজেনের বক্তব্য, এইগুলি সব সমাজে অসভ্যতা ছাড়া আর কিছুই নয়।‘
আরও পড়ুন- সুবর্ণরেখা নদী তীরবর্তী গ্রামগুলিতে রাসযাত্রায় নৌকা ভাসানোর রীতি, কী করেন তারা?
রিয়া ও রাখি ঠিক করল না ভুল করল, সেই প্রশ্নের উত্তর তো ভবিষ্যত দেবে? কিন্তু কেন একজন মেয়ের মনে হঠাৎ কেন একজন মেয়েকেই তার জীবনসাথী নির্বাচন করল, তা সমাজকে ভাবতে হবে। সমাজকে ভাবা উচিত বিবাহ মানেই বংশ বিস্তার নয়, একটি মেয়ে কখনও বংশ বিস্তারের মেশিন হতে পারে না। তারও নিজের ইচ্ছেয় বেঁচে থাকার অধিকার আছে। তারও কিছু চাওয়া পাওয়া আছে। তাই হয়তো রিয়া ও রাখি নিজেদের মতো করে স্বাধীন ভাবে বাঁচতে চেয়েছে, সেই স্বীকৃতিই দুজন দুজকে দিয়েছে।
দেখুন আরও খবর-







