Sunday, November 23, 2025
HomeScrollভেজালের বাজারে ধাক্কা খাঁটি নলেন গুড়ের!
Nadia

ভেজালের বাজারে ধাক্কা খাঁটি নলেন গুড়ের!

সংকটে নদিয়ার ঐতিহ্যবাহী ব্যবসা!

নদিয়া: শীত (Winter) মানেই নলেন গুড়ের (Nolen gur) চাহিদা। সকালবেলা ভাপা পিঠে থেকে পাক দিয়ে, নলেন গুড়ের স্বাদ গ্রামবাংলায় আজও অম্লান। প্রতি বছর অগ্রহায়ণ থেকে ফাল্গুন, এই চার মাসই শিউলিদের সবচেয়ে বেশি ব্যস্ততা খেজুর গাছ ঝোড়া, রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরির কাজে। কিন্তু এ বছর পরিস্থিতি ভিন্ন। নদিয়ার (Nadia) কৃষ্ণগঞ্জ (Krishnagunge) ব্লকে নলেন গুড়ের বাজারে নজিরবিহীন সংকট তৈরি হয়েছে ভেজাল গুড়ের ভয়াবহ দাপটে।

খাঁটি নলেন গুড় তৈরিতে সময়, রস ও জ্বালানির খরচ বেশি পড়ায় লাভ কম, এমনটাই জানিয়েছেন শিউলিরা। শিবনিবাসের শিউলি বাসুদেব বিশ্বাসের অভিযোগ, ২০টি গাছ কেটে যে রস পাওয়া যায়, জ্বালানির খরচ সামলে তাতে তৈরি হয় সর্বোচ্চ ২–৩ কেজি খাঁটি গুড়। এখন সেই গুড় বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজিতে। কিন্তু বাজারে তাদের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে চিনি মেশানো ভেজাল গুড়, যা মাত্র ৮০–৯০ টাকাতেই সহজে পাওয়া যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: খুনের সুপারি! অস্ত্রসহ দুই ভাড়াটে খুনি গ্রেফতার নাকাশিপাড়ায়

ব্যবসায়ীদের কথাতেও ফুটে উঠেছে উদ্বেগ। মাজদিয়ার মাধাই ঘোষ জানান, “খাঁটি নলেন গুড় বিক্রি করলে লোকসান হচ্ছে, কারণ ক্রেতারা সস্তা দামের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছেন।” পাইকার ব্যবসায়ী অমিত ঘোষের স্বীকারোক্তি আরও চমকে দেওয়ার মতো, “বাজারে খাঁটি গুড় প্রায় নেই বললেই চলে। বাধ্য হয়ে ভেজাল গুড় কিনেই কলকাতার বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে।”

আগে নলেন গুড়ের সুবাসেই বোঝা যেত তার খাঁটিত্ব। এখন নাকের সামনে ধরেও পাওয়া যায় না সেই গন্ধ। অভিযোগ, সীমান্ত লাগোয়া গ্রামগুলিতে ১০০ কেজি চিনির সঙ্গে সামান্য রস মিশিয়েই বড় আকারে ভেজাল ‘খেজুর গুড়’ তৈরি হচ্ছে। অল্প পরিশ্রমে বেশি লাভ, ফলে বাজার ভরে গিয়েছে ভেজালে, আর প্রকৃত নলেন গুড় ক্রমশ কোণঠাসা।

স্থানীয়দের মতে, পরিস্থিতি আঁটকাতে প্রশাসনিক পদক্ষেপ ও কঠোর নজরদারি ছাড়া নলেন গুড়ের ঐতিহ্য রক্ষা সম্ভব নয়। নাহলে নদিয়ার খেজুর রসের খাঁটি নলেন গুড়ের সুনাম ও স্বাদ ইতিহাসেই থেমে যেতে পারে।

দেখুন আরও খবর: 

Read More

Latest News