ওয়েব ডেস্ক: টালিগঞ্জের মহুয়া ফুল অকালেই ঝরে পড়েছিল। বাংলা সিনেমার (Bengali Cinema) আকাশ থেকে খসে পড়েছিল এক সম্ভাবনাময় তারা। তাঁর অভিনয় সৌন্দর্যে মোহিত ছিলেন আপামর বাংলাবাসী। ১৯৮৫ সালের ২২ জুলাই। মাত্র ২৬ বছর বয়সের মধ্যেই করে ফেলেছিলেন ৮০টি সিনেমা। দাদার কীর্তিতে অভিনয়ের জন্য ফিল্ম ফেয়ারের সেরা অভিনেত্রীর (Actress) পুরস্কার পেয়েছিলেন মহুয়া (Mahua Raychowdhury)। উত্তম কুমার থেকে প্রসেনজিতের সঙ্গে অভিনয়। তপন সিংহ থেকে তরুণ মজুমদারের সিনেমায় কাজ। তাঁর মৃত্যু রহস্যের সমাধান আজও হয়নি। তিনি যেন বাংলা চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির দিব্যা ভারতী। যাঁর মৃত্যু (Death) নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে। তবে মৃত্যুর এতবছর পরেও তাঁকে নিয়ে মাতামাতি ম্লান হয়নি। এবার বড় পর্দায় আসতে চলেছে অভিনেত্রী মহুয়া রায়চৌধুরীর বায়োপিক। নাম গুনগুন করে মহুয়া।
সিনেমাটি পরিচালনা করছেন সোহিনী ভৌমিক। প্রযোজক রানা সরকার। গবেষণা-চিত্রনাট্যে দেবপ্রতিম দাশগুপ্ত ও সোহিনী। মহুয়ার ভূমিকায় দেখা যাবে রাজনন্দিনীকে। ওই সিনেমায় মানুষ মহুয়া ও অভিনেত্রী মহুয়া দুটিকেই তুলে ধরার চেষ্টা হচ্ছে। কোনওভাবে এটি যেন তথ্যচিত্র না হয় সেটা লক্ষ্য রাখতে হচ্ছে। পরিচালক সোহিনীর কথায়, প্রথম কাজ যেন মনে রাখার মতো হয়। সেজন্য মহুয়া রায়চৌধুরীকেই বাছা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চুম্বন দিবসের চর্চা, কবে চুম্বন দৃশ্যে পর্দায় ফিরবেন ইমরান-মল্লিকা !
কেন রহস্যে ঢাকা মহুয়ার অপমৃত্যু? তদন্তকারীদের মহুয়ার স্বামী তিলক চক্রবর্তী জানিয়েছিলেন, মহুয়া তাঁর সঙ্গে একটি পার্টি থেকে ফেরেন। জুলাই মাসের ১২-১৩ তারিখে মধ্যরাতে ওই ঘটনা ঘটে। পোড়া শরীর নিয়ে হাসপাতালে ১০ দিন কাটান মহুয়া। তারপরে পাড়ি দেন স্বর্গালোকে। রিপোর্টে দাবি করা হয়, মহুয়া মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে জানিয়েছিলেন, তাঁর স্বামী তিলক চক্রবর্তী স্টোভ জ্বেলেছিলেন। তারপরে তাতে ফেটে আগুন ধরে যায়। খটকা লাগে এই জায়গাতেই কারণ পুলিশ স্টোভ অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছিল। তাঁর বাড়িতে কোনও কেরোসিনের হদিশ পাওয়া জানা যায়নি। শেষমেষ ১৮ জুলাই সিআইডি কেসটি ক্লোজ করে দেয়। সেখানে মহুয়ার বিবৃতিতে রয়েছে এটা দুর্ঘটনা। এরপরে বিতর্ক হওয়ায় ফের রাজ্য পুলিশ পুনরায় ফাইল খুলে তদন্ত শুরু করে। পুলিশের দাবি, প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, মহুয়া ও তাঁর স্বামী প্রচুর মদ্যপান করেন সেদিন রাতে। রান্নার ব্যবহৃত বাসন একে অপরের দিকে ছুড়েছিলেন মহুয়া ও তাঁর স্বামী। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী হেমাটোমা পাওয়া যায়। চোখে ও মাথার পিছনে রক্ত জমাট বেঁধে ছিল। আঘাত ছিল তিলকের শরীরেও। তবে তিলক দাবি করেছিলেন, মহুয়া উদ্ধার করতে গিয়ে ওই আঘাত হয়েছে। তবে মহুয়ার জীবনে অবসাদ ও অ্যালকোহলে আসক্তির তথ্যও পায় পুলিশ। অনেকে এখনও বিশ্বাস করেন তাঁর মৃত্যু দুর্ঘটনায় হয়নি। বায়োপিকে কি উঠে আসবে সেই সব তথ্য?