ওয়েব ডেস্ক: ‘অবাক পৃথিবী অবাক করলে তুমি’। এক জনের বয়স ৫৯। অন্যজনের বয়স ৬০। চ্যালেঞ্জ নিয়ে পৃথিবী থেকে সুদূর মহাশূন্যে ৮ দিনের জন্য গিয়েছিলেন। বোয়িং স্টারলাইনারে যান্ত্রিক ত্রুটির ফলে আটকে যান। তারপর থেকেই উৎকণ্ঠা। ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুনীতা উইলিয়ামস (Sunita Williams) ও বুচ উইলমোরকে (Butch Wilmore) নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছিল। একাধিকবার নাসা (Nasa) উদ্যোগ নিয়েছে কিন্তু কোনও নিশ্চয়তা মেলেনি। অনেকে ভয় পেয়েছিলেন কল্পনা চাওলা (Kalpana Chawla) হয়ে যাবে না তো? ভারতীয় বংশোদ্ভূত কল্পনা ২০০৩ সালে মহাকাশ থেকে ফিরতে পারেননি। তাঁরা কী অবস্থায় রয়েছেন এই নিয়ে নানা কল্পনা ভিড় করেছিল। সুনীতার জন্য তাঁর পূর্ব পুরুষদের বাসস্থান গুজরাত সহ সারা পৃথিবী প্রার্থনা করেছে। স্কুলে, ধর্মীয় স্থানে প্রার্থনা হয়েছে। অবশেষে নয় মাস পরে। মহাকাশ থেকে পৃথিবীর কক্ষপথে নামা। প্রতিটা মুহূর্তের লাইভ সম্প্রচার হয়েছে। সেই সব মুহূর্তে পৃথিবী পিন ড্রপ সাইলেন্ট হয়ে গিয়েছিল। বুধবার ভারতীয় সময় ভোর ৩টে ২৭ মিনিট সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। রাত জাগা পৃথিবীতে তখন উচ্ছাসের ঢেউ। আমেরিকার ফ্লোরিডায় মহাসমুদ্রে অবতরণ করেন সুনীতারা। নয় মাস আটকে থাকার পরে মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফিরেছেন সুনীতা (৫৯) ও বুচ (৬০)। এখন তাঁদের স্বাভাবিক হতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে। হিসেব অনুযায়ী অন্তত মাস দেড়েক তো বটেই। এই নয় মাস কীভাবে বেঁচেছিলেন সুনীতারা? কী খেতেন তাঁরা?
একটা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দাবি, বুচ উইলমোর ও সুনীতা উইলিয়ামস পিজ্জা খেতেন। রোস্ট চিকেন ও ককটেলও খেতেন। ব্রেকফাস্টে সিরিয়ালস থাকত। পাউডার দুধ খেতেন। টুনাও ছিল তালিকায়। তবে কতটা ক্যালোরি তাঁরা নিতেন সবই পরীক্ষায় মেপে নেওয়া হত। মাংস ও ডিম খেতেন। সেগুলি পৃথিবী থেকেই রান্না করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। গড়ে প্রতিদিন নভোশ্চরদের জন্য ১ কিলো ৭২ গ্রাম করে খাবার বরাদ্দ ছিল।
আরও পড়ুন: পৃথিবীর স্পর্শ পেলেন সুনীতা, উচ্ছ্বাসে ভাসছে বিশ্ব
দীর্ঘ সময় আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে থাকার ফলে মাংসপেশীর ক্ষতি হয়েছে। ফ্লুয়িডের ক্ষতি হয়েছে। কিডনির সমস্যা। দেখার সমস্যা। মধ্যাকর্ষণে ফেরার পর ভারসাম্যের সমস্যা। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন পৃথিবী থেকে ৪০৯ কিমি উপরে। গত ২৫ বছর ধরে তা রয়েছে। সুনীতা ও উইলিয়াম দুজনেই পাইলটের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তারপরে নাসায় যোগদান করেন। বুচ উইলমোড় টেনিসিতে হাইস্কুল ও কলেজে ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন। ম্যাসাচুসেটসের সুনীতা ভালো সাঁতারু ছিলেন। উন্নত প্রযুক্তির যুগে মহাকাশে থাকলেও তাঁরা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছিলেন। সুনীতা ইন্টারনেট কলের মাধ্যমে স্বামী, মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। তবে এই সময় তাঁদেরও অনেক কিছু খোয়াতে হয়েছে। উইলমোর তাঁর ছোট মেয়ের সিনিয়র ইয়ার মিস করেছেন। তবে কোনও অবস্থাতেই জীবনীশক্তি খোয়াননি দুজনে।
দেখুন অন্য খবর: