জয়পুর: বর্তমান সময়ে ছেলে মেয়ের পরস্পরের সঙ্গে বন্ধুত্ব সোশ্যাল মাধ্যমে (Social Media) গড়ে ওঠা কিছু নতুন কথা নয়। বেশ কিছু সময়ে সম্পর্কে মধুরতা পেলেও অনেক সময় প্রতারণার ফাঁদ পাতা থাকে। আর কিছু না বুঝে সেই প্রেমের জালে জড়িয়ে প্রতারণা ফাঁদে পা দেন যুবক/যুবতীরা।
অনেক সময় প্রেমের গণ্ডি ছাড়িয়ে যৌনতার পাতা ফাঁদে পা ফেলে বরবাদ হয়ে যায় বহু জীবন। সেই রকই একটি ঘটনা ঘটেছে রাজস্থানের (Rajasthan) বিকানেরে (Bikaner)। ভুক্তভোগী হলেন রেলের এক আধিকারিক (Railway officer) । কিভাবে অনলাইনে রোজগার করবেন সেই ইচ্ছে ছিল ভবানী সিং নামে ওই রেলের আধিকারিকের। ব্যস তারপরেই প্রতারণার শিকার হতে হল তাকে।
যৌনতার ফাঁদে ফেলেই ওই আধিকারিকের কাছ থেকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নিলেন এক পাকিস্তানি মহিলা। দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচারের অভিযোগে রাজস্থানের বিকারের থেকে ওই আধিকারিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতের নাম ভবানী সিং (Bhavani Singh) ।
সমাজমাধ্যমে এক মহিলার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল তাঁর। সেই আলাপ বেশ গভীর হয়। তার পরেই ওই আধিকারিককে যৌনতার ফাঁদে ফেলে সেনার তথ্যপাচারের প্রলোভন দেওয়া হয়। তার জন্য মোটা অঙ্কের প্রস্তাবও দেওয়া হয়। সেই টোপে পা দেন রেল আধিকারিক ভবানী। তার পরে খেলা শুরু।
আরও পড়ুন: কংগ্রেসে থেকেও বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ, বহিষ্কার করা হবে তাদের: রাহুল গান্ধী
পুলিশ সূত্রে খবর, আইএসআই-এর কাছ থেকে মোটা টাকার বিনিময়ে ভবানী এ ভাবেই সেনার তথ্য পাচার করতে থাকেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি গোয়েন্দাদের নজরে আসতেই রেল আধিকারিকের উপর নজরদারি শুরু হয়। পুলিশকেও সতর্ক করা হয়। গ্রেফতার করা হয় ভবানীকে।
ভবানী সিং মহাজন রেলওয়ে স্টেশনে কর্মরত ছিলেন। বিকানেরের মহাজন রেলওয়ে স্টেশনের একজন রেলকর্মী রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তাদের দেখিয়েছেন যে কীভাবে ভবানী স্টেশনের যাত্রী বেঞ্চে বসে সামরিক ট্রেনের ট্যাঙ্ক এবং সরঞ্জাম বহনের ছবি মোবাইল ফোনে তুলেছেন এবং সেগুলি ভিডিও করেছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, রেল আধিকারিক ভবানী এই ছবি এবং ভিডিওগুলি সে নিমি নামে এক পাকিস্তানি মহিলার কাছে পাঠিয়েছিল, যার বিনিময়ে সে টাকা পেয়েছিল। সে ১৮ মাস ধরে ওই মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল।
সেনাবাহিনীর মহাজন ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জে অনুষ্ঠিত সামরিক গতিবিধি এবং বহুজাতিক সামরিক মহড়ার গোপন তথ্য প্রেরণ করে। তিন নম্বর যাত্রী বেঞ্চটিতে বসে ভবানী এই সমস্ত কাজ করত।
ভবানী সিংকে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে গ্রেফতার করা হয়। আদালত তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
সিংকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জয়পুরে নেওয়া হয় এবং বুধবার তাকে মহাজন রেলস্টেশনে আনা হয়। সেনাবাহিনীর উপর গুপ্তচরবৃত্তির ঘটনা পুনর্নির্মাণ করতে বলা হয়।
সূত্রের খবর, ভবানী সিং পাকিস্তানের ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) এর একজন অপারেটরের দ্বারা পরিচালিত একটি যৌনতার ফাঁদে পড়েছিল। ভবানীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২০ হাজার টাকা পাঠিয়েছিল ওই পাক সংস্থা।
রেলের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে ভবানী সিংকে। তার বাবা পৃথ্বী সিংও রেল কর্মী ছিলেন। তার বাবা অবসর নেওয়ার পরেই রেলের চাকরিতে যোগ দেয় ভবানী।
দেখুন অন্য খবর: