নয়াদিল্লি: আগামী বছর বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন (Assemble Election)। তার আগেই রাজ্যে বেশ কয়েকদিন কাটালেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত (RSS chief Mohan Bhagwat) । রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, হিন্দুত্বের ভাবাবেগে শান দিয়েই ভোট রাজনীতিতে বাজিমাৎ করতে চাইছে গেরুয়া শিবির। আর সেই কারণেই দু’বছর পর বাংলায় এই দীর্ঘ সফর ভাগবতের।
একদিন বিজেপি যখন বিভাজনের রাজনীতিতে মত্ত ঠিক তখনই বীরভূম থেকে বসে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন (Amartya Sen) বললেন, ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং (Former Prime Minister Manmohan Singh) নিজে শিখ ছিলেন, সেই পরিচয়টি তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু তার পরেও তিনি সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি তিনি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। গৌতম বুদ্ধের বাণীর উপর ভিত্তি করে নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন।
রাজনৈতিক মহলের কথায়, একদিকে বিজেপির হিন্দুত্বের শান, বিভাজনের রাজনীতি তার মধ্যেই অমর্ত্য সেনের বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ।
আরও পড়ুন: একজোট না হলে রাজনৈতিক বদল হবে না, বলে গেলেন সঙ্ঘপ্রধান
ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর ভূয়ষী প্রশংসায় নস্টালজিয়ায় ভাসলেন বিশিষ্টি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন বলেন, সাত বছর ধরে তাঁর সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব ছিল। নিজের বন্ধু বলে বলছি এমনটা নয়, মনমোহন ছিলেন একজন প্রকৃত ভালো মানুষ। একজন দক্ষ নেতা। একজন বুদ্ধিজীবী। কেমব্রিজে পড়ার সময় থেকেই তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব। ভালো রাজনৈতিক নেতা, একজন “অসাধারণ অর্থনীতিবিদ” ছিলেন। যিনি সহনশীল এবং ঐক্যবদ্ধ বিশ্বের প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পেরেছিলেন।
অমর্ত্য সেন বজ্রচেডিকা প্রজ্ঞাপারমিতা সূত্রে গৌতম বুদ্ধের বার্তার সারমর্মকে আঁকড়ে ধরার ক্ষমতার জন্য মনমোহন সিংয়ের প্রশংসা করেন।
বীরভূমে বসেই সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে বন্ধুত্বের আবেগে ভেসে যান অমর্ত্য সেন।
একটা সময়ে কেমব্রিজে দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব তার পর দিল্লি স্কুল অফ ইকোনমিক্সে- মনমোহন সিং ছিলেন অমর্ত্য সেনের সহকর্মী। তাঁদের দীর্ঘ বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করে অমর্ত্য সেন বলেন, বুদ্ধের বার্তার উপর ভিত্তি করে অন্যান্য ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। মনমোহন একজন শিখ ছিলেন, এবং সেই পরিচয়টি তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কিন্তু তার পরেও অন্যান্য ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে গৌতম বুদ্ধের বাণীর উপর ভিত্তি করে নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন।
অমর্ত্য সেন বলেন, ভারতের মাটিতে পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদের প্রমাণ পাওয়া গেলে তিনি তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাতে জানতেন । তিনি ‘বজ্রচেদিক প্রজ্ঞাপারমিতা সূত্র বা হীরক সূত্র’-এ গৌতম বুদ্ধের বার্তা বুঝতে পেরেছিলেন যে মানুষের বিভিন্ন ধর্মের অস্তিত্বকে স্বীকৃতি দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। আপনি একটি নির্দিষ্ট বিশ্বাসের পক্ষপাতী হতে পারেন, কিন্তু তার জন্য অন্যদের অবমাননা করা উচিত নয়।
নোবেল জয়ী বলেন, মনমোহন সিং শুধু মাত্র আমার বন্ধু ছিলেন বলে আমি তাঁকে পছন্দ করি তা নয়, উনি সত্যিকারের একজন ভালো মানুষ ছিলেন।
দেখুন অন্য খবর: