মুম্বই: বেশ কয়েকদিন ধরেই অজানা জ্বর ঘিরে কাশ্মীরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তিনটি পরিবারে ১৭ জনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। এবার বিরল স্নায়ুরোগে (Rare neurological disease) পুনেতে ( (Pune) আক্রান্ত ৫৯ জন বাসিন্দা। একদিনেই আক্রান্ত ৩৫। এই স্নায়ুরোগের নাম গুইলাইন-ব্যারে সিন্ড্রোম (জিবিএস) (Guillain-Barré Syndrome (GBS)) । এদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ১২ জনকে ভেন্টিলেশনে পাঠানো হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৩৯ জন পুরুষ ও ২০ জন মহিলা।
জনস্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্তদের মধ্যে পুনে গ্রামীণ এলাকা থেকে ৩৩ জন, পুনে থেকে ১১ জন এবং পিম্পরি-চিঞ্চওয়াড় পৌর এলাকা থেকে ১২ জন রয়েছেন। পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে আসা তিনজন রোগীও পুনেতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ২৩শে জানুয়ারি নেতাজি জয়ন্তী, কেন এই দিনের নাম ‘পরাক্রম দিবস’
স্বাস্থ্য পরিষেবা অধিকর্তা ডাঃ ববিতা কমলাপুরকর বলেন, নজরদারি চলছে। এলাকা পরিদর্শনের কাজ করছে রাজ্যের র্যাপিড রেসপন্স টিম। আক্রান্তদের মল, মূত্র, রক্তের নমুনা পুনের জাতীয় ভাইরোলজি ইনস্টিটিউটে (এনআইভি) পাঠানো হয়েছে। আক্রান্ত এলাকায় জলের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। সকলকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কোনও উপসর্গ দেখা দিলে স্বাস্থ্য বিভাগকে জানাতে বলা হয়েছে। তবে অযথা আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। স্বাস্থ্যবিভাগ যথাসম্ভব ব্যবস্থা নিয়েছে।
পুনে পৌরসভার স্বাস্থ্যপ্রধান ডাঃ নিনা বোরাডে জানান, বেশিরভাগ রোগীই সাম্প্রতিক সময় বাইরের খাবার বা জল খেয়েছেন। তারা পেটের সমস্যার কথা জানিয়েছে। শরীর খুব দুর্বল লাগে। যা জিবিএসের একটি লক্ষণ।”
পুনে শহর, পিম্পরি-চিঞ্চওয়াড়, নান্দেড়গাঁও, নান্দোশি, কির্কিটওয়াড়ি, ধায়ারি এবং খড়কওয়াসলার বাসিন্দাদের জল ফুটিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উপসর্গ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাধারণত জিবিএস-এ আক্রান্তদেক শরীর নিচের অঙ্গে, তারপর উপরের অঙ্গে দ্রুত দুর্বলতা দেখা দেয়। ক্রমে তা শ্বাস-প্রশ্বাসের পেশীগুলিতে আক্রমণ করে। ক্যাম্পাইলোব্যাক্টর জেজুনি ব্যাকটেরিয়া থেকে এই সংক্রমণ হয়।
গুইলাইন-ব্যারে সিন্ড্রোম বা জিবিএস- (Guillain-Barré Syndrome )উপসর্গ কি
১। খুব দ্রুত রোগীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে।
২। কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েকদিনের মাঝে রোগীর হাত ও পা অবশ হয়ে যায়।
৩। সাধারণত পা থেকে দুর্বলতা শুরু হয় এবং দুই পা একসঙ্গে আক্রান্ত হয়।
৪। ধীরে ধীরে পুরো পা থেকে কোমর পর্যন্ত অবশ হয়ে যায় এবং হাতও অবশ হতে শুরু করে।
৫। মাংসপেশীতে ব্যথা থাকে।
৬। স্বাভাবিক নড়াচড়ার সামর্থ্য হারিয়ে যায়।
৭। কিছু ক্ষেত্রে রোগীর শ্বাসতন্ত্রের মাংসপেশী প্যারালাইজড হয়ে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, অনেক সময় এসব রোগী মারা যায়।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। জিবিএস সঠিক চিকিৎসাতে রোগীরা সুস্থ হয়ে ওঠে। আক্রান্তকে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।
দেখুন অন্য খবর-