কলকাতা: রাজ্যের রাজনীতিতে যখন ধর্মীয় বিভাজন ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে, তখন সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন নদিয়ার পলাশীর যুবক নাসিম মালিতা (Nasim Malita)। এক মহিলার জীবন বাঁচাতে রোজা ভেঙে রক্তদান করলেন তিনি, প্রমাণ করলেন— মানবতা সবার ঊর্ধ্বে। এই ঘটনাটি ঘটেছে কল্যাণী জওহরলাল নেহরু হাসপাতালের (Kalyani Jawaharlal Nehru Hospital), যেখানে রক্তের সংকটে ভুগছিলেন মাজদিয়ার বাসিন্দা সঙ্গীতা ঘোষ (Sangeeta Ghosh)।
কিডনির সমস্যা-সহ একাধিক শারীরিক জটিলতায় হাসপাতালে ভর্তি সঙ্গীতার জন্য নিয়মিত রক্তের প্রয়োজন হয়। গত রবিবারও জরুরি ভিত্তিতে তাঁর রক্ত লাগলে ছেলে সঞ্জু ঘোষ (Sanju Ghosh) বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করতে থাকেন। সেই সময় ফোন যায় নাসিম মালিতার কাছে। কোনো দ্বিধা না করেই তিনি হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন এবং রক্তদান করেন।
আরও পড়ুন: স্পেশাল ট্রেনের ভাড়া আকাশছোঁয়া, অথচ পরিষেবা শোচনীয়!
নাসিম দীর্ঘদিন ধরে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের (Voluntary Organization) মাধ্যমে রক্তদান করেন। ওই সংগঠনের মাধ্যমেই রবিবার তাঁর কাছে সাহায্যের অনুরোধ আসে। তবে পরে জানা যায়, তিনি সেদিন রোজা রেখেছিলেন। কিন্তু মানবতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে রোজা ভেঙে রক্তদানে পিছপা হননি। চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো রক্তদানের পর তিনি খাবার গ্রহণ করেন।
২৭ বছরের নাসিম বলেন, “আমার বাড়ি পলাশীতে, তবে কর্মসূত্রে কল্যাণীতে থাকি। দুপুরের নামাজ শেষে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম, তখনই ফোন আসে রক্তদানের জন্য। আমি আগে বহুবার রক্ত দিয়েছি, আজও দিতে পেরে ভালো লাগছে। সবাইকে বলব, ভয় না পেয়ে এগিয়ে আসুন, রক্তদান জীবন বাঁচায়।”
নাসিমের এই উদ্যোগে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সঙ্গীতা ঘোষের ছেলে সঞ্জু। তিনি বলেন, “নাসিমদাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি নিজেও রক্তদান করেছি, কিন্তু তিনি রোজা রেখেও মায়ের জন্য রক্ত দিলেন— এটা সত্যিই অনন্য। আমার বিশ্বাস, মানবতা ও জীবন বাঁচানোই সবচেয়ে বড় ধর্ম, এখানে ধর্ম-জাতির কোনো বাধা থাকা উচিত নয়।”
দেখুন আরও খবর: