মেদিনীপুর: বেআইনি স্যালাইন কাণ্ডে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে বেআইনি স্যালাইন দেওয়ার কারণে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়। আর তারপরেই কাঠগড়ায় উঠে আসে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের নাম। অভিযোগ ওঠে, ব্ল্যাক লিস্টেড ওষুধ কোম্পানির স্যালাইন ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু কেন এই গাফিলতি ঘটল? এই অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যেই রাজ্যের পক্ষ থেকে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। তার জেরে আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার সিআইডির এক দল প্রতিনিধি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে তদন্তের জন্য উপস্থিত হন।
তদন্তকারী দলের পক্ষ থেকে ঘটনার দিনের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। শুধুমাত্র তাই নয়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং হাসপাতালে ভর্তি রোগী-পরিজনদের সঙ্গে কথাও বলেন তদন্তকারী দল। আর সেখানেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য! সিআইডি টিমকে বহু রোগী এবং রোগীর পরিবার অভিযোগ করেন হাসপাতালে নাকি অধিকাংশ দিন রাতে উপস্থিত থাকেন না কোন সিনিয়র চিকিৎসক! তার বদলে জুনিয়র চিকিৎসকদের দিয়েই রাতের সময় সামাল দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: বাড়ছে ইন্ডিয়া-র ফাটল! কেজরিওয়ালকে ফের তোপ রাহুলের
আর এই ঘটনা যে সত্যি, তা প্রমাণ করে দেয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে বেআইনি স্যালাইন যেদিন দেওয়া হয় সেদিনের ঘটনার প্রেক্ষিতে। ঘটনার দিনও রাতে হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না কোন সিনিয়র চিকিৎসক। বরং তার বদলে জুনিয়র চিকিৎসকদের দিয়েই প্রসূতির অপারেশন করা হয়েছিল বলে স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। আর এবার সিআইডি টিমের তদন্তেও উঠে এল এই তথ্য ।
উল্লেখ্য, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে যেই স্যালাইন প্রসূতিদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে সেটি গত বছরের ডিসেম্বর মাসেই করা হয়েছিল নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও এক মাসের মাথাতেই নিষিদ্ধ স্যালাইন কীভাবে ব্যবহার করা হল? তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে তদন্তকারী দলের পক্ষ থেকে। কিন্তু স্যালাইন কাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়ে উঠে এল সিনিয়র চিকিৎসকদের অনুপস্থিতির কথাও।
গতকাল অর্থাৎ সোমবার নিষিদ্ধ স্যালাইন কাণ্ড নিয়ে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ সাংবাদিক বৈঠক করেন। আর সেখান থেকেই তিনি ঘোষণা করে দেন এই পুরো ঘটনার করা হবে সিআইডি তদন্ত। সেখান থেকে তিনি স্যালাইন কাণ্ডে ‘গাফিলতির’ কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ‘সার্জারির সময়ে সিনিয়র ডাক্তার ছিলেন না। ট্রেনি ডাক্তাররা অস্ত্রোপচার করেছেন। এটা গাফিলতি তো বটেই।’ আর তারপরেই আজ সিআইডির বিশেষ প্রতিনিধি দল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছলে রোগী এবং রোগী-পরিজনদের কাছ থেকেও উঠে আসে সিনিয়র চিকিৎসকদের উপস্থিত না থাকার কথা।
শুধুমাত্র তাই নয়, রোগীর পরিজনেরা অভিযোগ তুলছেন, সিনিয়র চিকিৎসকদের উপস্থিতি না থাকা নিয়ে যদি প্রতিবাদ জানানো হয় তাহলে দুর্ব্যবহারের সম্মুখীন হতে হয় তাদের। এমনকি হাসপাতালে পরিষেবা সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগও উঠে আসছে তদন্তে।
দেখুন অন্য খবর