মালদহ: ট্যাব কেলেঙ্কারির পর এবার কন্যাশ্রীতে দুর্নীতি (Kanyashree Prakalpa Corruption)। স্কুলের একাধিক ছাত্রীর ভুয়ো ব্যাংক একাউন্ট খুলে কন্যাশ্রী টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ। ঘটনায় কাঠগড়ায় স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক। মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের কন্যাশ্রী প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে মালদহের মানিকচক (Malda Manikchak) ব্লকের এনায়েতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে (Enayetpur High School H.S)। ঘটনা ছাত্রীদের নিয়ে মানিকচক থানার পুলিশের দারস্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এমন ঘটনা সামনে আসতেই চাঞ্চল্য মানিকচক জুড়েই। ঘটনার তদন্ত করে সরকারি প্রকল্পের টাকা ছাত্রীদের পাইয়ে দেওয়ার দাবি প্রধান শিক্ষকের। তবে সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি সহকারী প্রধান শিক্ষকের।
এনায়েতপুর উচ্চ বিদ্যালয় এর ১২ জন ছাত্রীর টাকা ২০২১ সালেই জালিয়াতি করে তুলে নেওয়া হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ বাদিউজ জামান এর কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল ১২ জন ছাত্রী। ছাত্রীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রধান শিক্ষক বুঝতে পারেন তাদের টাকা ভুয়ো একাউন্টের মাধ্যমে তুলে নেওয়া হয়েছে। তাই প্রধান শিক্ষক মানিকচক থানার পুলিশের কাছে সহকারী প্রধান শিক্ষক সুনন্দ মজুমদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। প্রধান শিক্ষক বাদিউজ জামান দাবি করে বলেন, স্কুলের প্রায় ৪২ জন ছাত্রীর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে ১২ জন ছাত্রী অভিযোগ দায়ের করেছেন। ২০২০ সালে এই সমস্ত ছাত্রীর কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য ফরম ফিলাপ করেছিলেন। কিন্তু তাদের কন্যাশ্রী টাকা ২০২১ সালে ধরমপুর এলাকার একটি ব্যাংকের শাখায় ভুয়ো একাউন্টগুলিতে ঢুকানো হয়। তারপর সেই টাকাগুলির আত্মসাৎ করে নেওয়া হয়। বিদ্যালয়ের তরফে এই টাকা ঢোকানোর পেছনে স্বাক্ষর রয়েছে সহকারী প্রধান শিক্ষক সুনন্দ মজুমদারের।
আরও পড়ুন: মেদিনীপুর মেডিক্যালে দফায় দফায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভ বাম-কংগ্রেসের
২০১৯ সালের জুলাই মাসে প্রধান শিক্ষক হিসেবে এ বিদ্যালয় যুক্ত হয়। আমার প্রধান শিক্ষক হিসেবে যুক্ত হওয়ার আগে এই বিদ্যালয়ের টিআইসি হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন বর্তমানে যিনি সহকারী প্রধান শিক্ষক সুনন্দ মজুমদার। ২০২২ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত বিদ্যালয়ের সমস্ত স্কলারশিপ ও নডাল টিচারের দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমানে অনলাইনে এই সমস্ত ছাত্রীদের কন্যাশ্রীর যে টাকা দেওয়ার পেছনে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে সুনন্দ মজুমদারের শীল সই রয়েছে। কারণ সহকারী প্রধান শিক্ষকের অনুমতি ছাড়া অনলাইনের এই পোর্টাল কোনও ভাবে খোলা সম্ভব নয়। এত বড় একটা জালিয়াতি পেছনে তিনি একমাত্র দায়ী। বর্তমানে এতগুলো ছাত্রী আর কন্যাশ্রীর টাকা পাবে না। এখনও পর্যন্ত ২০২১ সালের কন্যাশ্রীর যে তালিকা তা তদন্ত করে যা বুঝতে পেরেছি ৪২ জন ছাত্রীর টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এই সমস্ত ছাত্রীদের বয়সের ক্ষেত্রেও জালিয়াতি করা হয়েছে। ছাত্রীদের বয়স বাড়িয়ে ভুয়ো একাউন্টগুলিতে টাকা ঢোকানো হয়েছে।তবে এই গোটা ঘটনায় ব্লক প্রশাসনের তদন্ত করে দেখার পরে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। সেখানেও একটা গাফিলতি হয়েছে বলে অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের।
ঘটনায় সরকারি প্রকল্পের টাকা তারা যাতে পায় তার দাবি তুলেছেন অভিযোগকারী ছাত্রী সহ তার অভিভাবকরা। গোটা ঘটনায় অভিযুক্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক সুনন্দ মজুমদারের দাবি, এই ধরনের অভিযোগ সমস্তটাই ভিত্তিহীন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন ২০১৯ সালে। ঘটনা হয়েছে ২০২১ সালে সেখানে এই ঘটনায় আমার যুক্ত থাকার কোন প্রশ্নই ওঠে না। সমস্ত কিছু প্রধান শিক্ষকের অনুমতিতে হয়। আমার হই শীলশই জাল করে এই ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। কারণ প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আমার বনিবনা নেই তাই মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। এই অভিযোগ আমি জানতে পারার পর দিন কয়েক আগেই লিটু মমিন নামে সেসময় বিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছি। তাকে ধরলে সমস্ত বিষয় পরিস্কার হবে।
অন্য খবর দেখুন