পুরুলিয়া: রাজ্যজুড়ে এসআইআর –র ব্যস্ততা তুঙ্গে। সাধারণ মানুষও যথেষ্ঠ সতর্ক এই প্রক্রিয়া নিয়ে। চলছে তুমুল রাজনৈতিক তরজাও। একদিকে যেমন এসআইআর অনেক পরিবারে নিয়ে এসেছে আতঙ্ক আর খারাপ খবর, তেমনই কিছু পরিবারের জন্য এই এসআইআর আবার ভগবানের আর্শিবাদের মত। ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়া খুঁজে দিল ৩৭ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া এক ছেলেকে, যাকে পরিবার ভেবেছিল, হয়ত আর কোনওদিন ফিরে আসবে না সে।
১৯৮৮ সালে পুরুলিয়ার গোবরন্দা গ্রামের চক্রবর্তী পরিবারের বড় ছেলে বিবেক চক্রবর্তী নিখোঁজ হয়ে যান(Bengal missing son found)। পরিবার বছরের পর বছর খুঁজেছে তাঁকে, আত্মীয়-পরিজনদের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্ঠা করেছেন, কিন্তু কোনও উত্তর মেলেনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবাই মেনে নিয়েছিল, বিবেক আর কোনওদিন ফিরবেন না।
আরও পড়ুন: SIR-কে কাজে লাগিয়ে বাংলা দখলের চেষ্টা, ভার্চুয়াল বৈঠকে বার্তা অভিষেকের
বিবেকের ছোট ভাই প্রদীপ চক্রবর্তী স্থানীয় বুথ লেভেল অফিসার (BLO)। SIR চলাকালীন প্রতিটি বাড়িতে যে ফর্ম দেওয়া হয়, সেখানে প্রদীপের নাম ও ফোন নম্বর ছিল। সেই নম্বরেই একদিন ফোন আসে কলকাতার এক অচেনা-অজানা যুবকের। তিনি কিছু কাগজ যাচাইয়ের সাহায্য চেয়েছিলেন বিএলও-র কাছে। শুরুতে সবই ছিল সাধারণ অফিসিয়াল আলোচনা। কিন্তু কথায় কথায় বাড়ল আরও কথা। উঠে এল বেশকিছু অপ্রত্যাশিত তথ্য। যা শুনে চমকে ওঠে প্রদীপ। বুঝতে পারেন- যে যুবক কথা বলছেন, তিনি তাঁর হারিয়ে যাওয়া ভাইয়ের ছেলে! এরপরই কথা হয় সরাসরি বিবেকের সঙ্গে। ৩৭ বছরের দূরত্ব কাঁটিয়ে মিলন হয় দুই ভাইয়ের।
এককথায়, এসআইআর-র দৌলতে চক্রবর্তী পরিবার ফিরে পেলেন তাঁদের হারিয়ে যাওয়া বড় ছেলেকে। কঠোর ডকুমেন্ট চেকের মধ্যেও মানবিক সাফল্যের এই উদাহরণ এসআইআর বিতর্কের মাঝে অন্য ছবি তুলে ধরল। গোটা চক্রবর্তী পরিবার এখন দিন গুনছে বিবেকের ঘরে ফেরার (family reunion)। যে বাড়ির অন্দরমহল এতদিন ছেলের একটা খবরের জন্য অপেক্ষায় প্রায় ভেঙে পড়েছিল, সেখানে এখন আনন্দের হাওয়া বইছে।
দেখুন খবর:







