Friday, October 10, 2025
HomeScrollFourth Pillar | ১০০ বছরে আরএসএস হাফপ্যান্ট থেকে ফুলপ্যান্ট হয়েছে, কিন্তু মুসলমান...
Fourth Pillar

Fourth Pillar | ১০০ বছরে আরএসএস হাফপ্যান্ট থেকে ফুলপ্যান্ট হয়েছে, কিন্তু মুসলমান ঘৃণা একই থেকে গিয়েছে

গান্ধী হত্যার দায় থেকে দেশের শীর্ষ ক্ষমতায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ, ১০০ বছরে পা দিল। হ্যাঁ তারিখ ইত্যাদি নয়, ১৯২৫ এর বিজয়া দশমীতে জন্ম, এবছরের বিজয়া দশমীতে ১০০ তে পা। জীবনে সমাজে “সাদগি” এক সাধাসিধে জীবনের কথা যাঁরা বলতেন সেই আরএসএস গত  ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫এ  নয়া দিল্লিতে ‘প্রবেশোৎসব’ পালন করেছেন, হ্যাঁ এমনিতে বুঝতে অসুবিধে হবে তাই বুঝিয়ে বলি, সেদিন ওনাদের দিল্লির দফতরের উদ্বোধন হয়েছে, সেটাই হল প্রবেশোৎসব। সেই দিন থেকে নতুন দিল্লি কার্যালয় ‘কেশব কুঞ্জ’ আরএসএস এর দিল্লির ঠিকানা। এই নতুন ঝাঁ চকচকে দফতর যে কোনও  কর্পোরেট হাউসগুলোর সঙ্গে এক সারিতেই থাকবে। হ্যাঁ নাগপুর এখনও সঙ্ঘের সদর দফতর। কিন্তু দিল্লীর এই নতুন অফিস আদতে  সঙ্ঘের বদলে যাওয়া রাজনৈতিক সচেতনতার প্রতীক। সঙ্ঘ এখন দেশের রাজনৈতিক কেন্দ্র থেকে দূরে থাকতে রাজি নয়। যে সংঘ একবার নয় বার বার মুচলেকা দিয়েছে এই বলে যে তারা দেশের রাজনীতিতে কোনওভাবেই যোগ দেবে না, সে কথা তারা বল্লভ ভাই প্যাটেল কে লিখিত ভাবে জানিয়েছে, সে কথা তারা ইন্দিরা গান্ধীকে জানিয়েছে। কিন্তু সে সব তো ধূর্তের ছল, যে দল দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভাঙার জন্য ষড়যন্ত্র করে সে দলের, সেই সব লোকজনদের মুচলেকার মানেই বা কী? দেশের প্রতিটা নির্বাচনে আর এস এস এর সক্রিয় ভূমিকা, বিজেপির প্রত্যেক কমিটিতে তাদের লোকজনদের রাখা, দলের উপরে নিয়ন্তণ ১০০% নিশ্চিত করা এক সংগঠনের পাড়ার ক্লাবের যে রেজিসট্রেশন আছে, আর এস এস এর তাও নেই। এবং আজ তারা দিল্লিতে এত বড় দপ্তর কেন করেছে? কারণ তারা দেশের রাজনীতির দখল নিতে চায়, তারা এক হিন্দু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। প্রায় ৪ একর জায়গার উপর তৈরি এই দপ্তরে তিনটে ১২-তলা বা ১৩-তলা টাওয়ার রয়েছে ।

মানে আমাদের কলকাতার বিশাল পস হাউজিং এস্টেটের মতই বিস্তৃত। টাওয়ারগুলোর নাম সাধন, প্রেরণা এবং অর্চনা যাতে মোট ৫ লক্ষ বর্গফুট জায়গা আছে। যেখানে প্রায় ৩০০টা ঘর আর অফিস রয়েছে । এই বিশাল কাঠামো তৈরি করতে কমবেশি ১৫০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে । এর মধ্যে একটা লাইব্রেরি, একাধিক অডিটোরিয়াম, এবং একটা মেডিকেল ইউনিট আছে। এখানে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (VHP) নেতা অশোক সিংঘলের নামে একটা বড় অডিটোরিয়াম রয়েছে । ১৫০ কিলোওয়াটের সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসানো হয়েছে, সেগুলো আদানির বসানো কিনা, তা পরে খবর নিয়ে বলবো। আর দৈনিক ১৪০ কিলোলিটার ক্ষমতাসম্পন্ন স্যুয়ারেজ প্ল্যান্ট আছে। সেদিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত ছিলেন প্রধান বক্তা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অনুষ্ঠানে ছিলেন না। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা, অমিত শাহ, রাজনাথ সিং এবং জে. পি. নাড্ডা দর্শক আসনে বসেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীও নরেন্দ্র মোদিও থাকবেন আর প্রধান বক্তা হবেন অন্য কেউ, এটা বোধহয় খুব বাড়াবাড়ি হয়ে যেতো। ওই ঝাঁ চকচকে বিশাল দফতরে উদ্বোধনে এসেও ভড়ং দেখলে হাসি পাবে, মোহন ভাগবত সংগঠনের কর্মীদের অহংকারী না হওয়ার জন্য সতর্ক করে দেন । তিনি বলেন, “আমাদের কাজও এই ভবনের মতো মহৎ হওয়া উচিত।”। আসলে এটা সেই নেতাদের প্রতি ব্যাঙ্গোক্তি ছিল, যাঁরা মনে করেন বিজেপিকে আর সঙ্ঘের প্রয়োজন নেই। সঙ্ঘ বুঝিয়ে দিল ব্যক্তি নয়, সংগঠনই চূড়ান্ত। এমনিতে সারাক্ষণই মিথ্যে বলেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী তো সেই তিনি একটা সত্যি কথা কদিন আগেই বলেছিলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের আন্দোলনের সময়ে প্রথম সরসঙ্ঘচালক হেডগেওয়ারকে জেলে যেতে হয়েছিল। কিন্তু হাসবেন না, মোদিজী যে কথাটা বলেন নি যে  হেডগেওয়ার প্রথম জীবনে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, আর সেই কংগ্রেসের আন্দোলনে অংশ নেবার জন্য তাঁকে জেলে যেতে হয়। ওই প্রথম ওই শেষ। ১৯২০-র দশকে মহাত্মা গান্ধীর সিদ্ধান্তের কারণে তাঁর সঙ্গে কংগ্রেসের মতভেদ তৈরি হয়। গান্ধীজি খেলাফত আন্দোলনকে অসহযোগ আন্দোলনের অংশ করলে হেডগেওয়ার এর বিরোধিতা করেন। এই মতপার্থক্য থেকেই ভারতে জাতীয়তাবাদের দুটো আলাদা ধারণার জন্ম হয়। তার একটা ছিল ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদ।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | মোদিজির ‘মাই ডিয়ার ফ্রেন্ড’ ট্রাম্প সাহেব এখন এনিমি নম্বর ওয়ান

অন্যটা ছিল একচেটিয়া ‘সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদ’, যা ছিল হেডগেওয়ার এবং সাভারকরের দর্শন। সঙ্ঘ জন্মলগ্ন থেকেই একমাত্র হিন্দু সমাজকে শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করে, যা এখনও তারা করে যাচ্ছে। সঙ্ঘের মূল লক্ষ্য ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠা করা । আর এই মতাদর্শ ছিল সাভারকরের ‘হিন্দুত্ব’ দর্শনের ওপর ভিত্তি করে, হিন্দুত্বকে জাতিগত ও সাংস্কৃতিক ভিত্তিতে হিন্দু পরিচয় দিয়ে এক উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদকে তুলে ধরা হয়। হেডগেওয়ার বলেছিলেন “একমাত্র হিন্দু সংস্কৃতিই হিন্দুস্থানের প্রাণ”। তিনি বলেন, যদি হিন্দু সংস্কৃতি বিলুপ্ত হয় এবং হিন্দু সমাজ না থাকে, তবে শুধু ভৌগোলিক অস্তিত্বে কোনো জাতি তৈরি হয় না। হিন্দু সমাজকে একত্রিত করা প্রতিটা হিন্দুর কর্তব্য। সঙ্ঘ এই কাজটাই মন দিয়ে করে চলেছে। বহুবার সঙ্ঘ দাবি করেছে তারা রাজনীতি করে না, রাজনীতিতে থাকবেনা এরকম মুচলেকাও দিয়েছে, শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক সামাজিক কাজ করে বলে তারা দাবি করে । কিন্তু ১৯২৫ সালে এর জন্মই হয়েছিল এক স্পষ্ট রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিত্তিতে । তাদের লক্ষ্য ছিল এক দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করা। তা না হলে গান্ধী হত্যার দায় তাদের নিতে হতো না, কারণ দেশের প্রথম গুপ্ত হত্যা, গান্ধী হত্যা ছিল এক নিখাদ রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।  আর তাই ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারির ঘটনা আর এস এস এর জীবনে সবচেয়ে বড় সংকট ডেকে নিয়ে এসেছিল, সেদিন নাথুরাম গডসে মহাত্মা গান্ধীকে হত্যা করে, যে অভিযোগের দায় থেকে আজও তারা মুক্তি পাননি।  গান্ধী হত্যার পর পরই সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল-এর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সঙ্ঘকে নিষিদ্ধ করেছিল। প্যাটেল প্রথমে সঙ্ঘের প্রতি অনেকটা সহানুভূতিশীলই ছিলেন । কিন্তু পরে তিনি স্বীকার করেছেন, RSS যে ‘বিষ’ ছড়িয়েছে, তার ফলেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে । আর এস এস দাবি করে, গডসে সংগঠন ছেড়ে দিয়েছিলেন । কিন্তু গডসের ভাই গোপাল গডসে এই দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছেন, হ্যাঁ গডসে ফাঁসির মঞ্চে ওঠার আগে আর এস এস এর প্রার্থনা নমস্তে সদা বৎসলে মাতৃভূমে…… পাঠ করেন । হ্যাঁ ফাঁসিতে চড়ার কিছুক্ষণ আগেও তিনি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন তাঁর গান্ধী হত্যার প্রেরণা যুগিয়েছিল এই আর এস এস। কিন্তু এই প্রথম নিষেধাজ্ঞার অভিজ্ঞতাই সঙ্ঘের নেতাদের চিন্তাধারা পাল্টে দেয়। সঙ্ঘ বুঝতে পারে, শুধু সামাজিক সংগঠন হিসেবে থাকলে তারা রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে যে কোনও সময়ে আবার বিপন্ন হতে পারে। কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সমর্থন ছাড়া টিকে থাকা কঠিন। সেই জন্যই ১৯৫১ সালে ভারতীয় জনসঙ্ঘ (BJS) প্রতিষ্ঠিত হয় । এটা ছিল সঙ্ঘের রাজনৈতিক শাখা । প্রকাশ্যে রাজনীতিকে অস্বীকার করা সত্ত্বেও, ১৯৪৮ সালে তৈরি হওয়া সংকট সঙ্ঘকে এক রাজনৈতিক কায়দাবাজির মধ্যে ঢুকতে বাধ্য করেছিল আর সেই প্রক্রিয়ায়ই শেষমেষ ‘সঙ্ঘ পরিবার’ এর জন্ম দেয়। বেশ কিছুদিন পরে ১৯৫২ সালের প্রথম জাতীয় সম্মেলনে দীনদয়াল উপাধ্যায় ‘ভূ-সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদ’ (Geo-cultural nationalism) শব্দটা তৈরি করেন । সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের সঙ্গে ভৌগোলিক অঞ্চলকে (Geo) যুক্ত করাটা ছিল রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ । এর মাধ্যমে এই ভূখণ্ডে হিন্দু সংস্কৃতির প্রাধান্যই জাতীয়তার ভিত্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় । এইখানেই বলা হয় তুমি ভারতীয় যদি তোমার পিতৃভূমি, কর্মভূমি এবং পূণ্যভূমিও এই ভারতেই হয়। মানে তোমার জন্ম এদেশে হতে হবে, কাজের পরিধি এদেশেই হতে হবে এমনপকি তোমার পূণ্যভূমি কাবা বেথলেহেম বা ভ্যাটিকান সিটি হলেও তুমি ভারতীয় নও। হ্যাঁ দীনদয়াল উপাধ্যায় এই ভাবেই ভূগোল কে সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছিলেন। আরও অনেক প্রস্তাব ছিল, শিক্ষাব্যবস্থাকে ‘জাতীয় সংস্কৃতি’-র ভিত্তিতে ঢেলে সাজানো, রামায়ণ, মহাভারত এবং উপনিষদের মতো বিষয়গুলো পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা। এছাড়াও, ইতিহাসকে ‘সঠিক পথে’ নতুন করে লেখার দাবি ছিল। লক্ষ্য ছিল, যাতে শুধু ‘আক্রমণকারীদের’ ইতিহাস নয়, বরং ভারতের মানুষের ইতিহাস প্রচারিত হয়। ইঙ্গিত খুউউব পরিস্কার। সেদিনের আর এস এস এর এই দাবিগুলো বিজেপির ২০১৪ সালের এজেন্ডার সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। এর থেকে বোঝা যায়, আরএসএস-এর রাজনৈতিক লক্ষ্যগুলো স্থির এবং অত্যন্ত ধারাবাহিক।

রাজনৈতিক সংগঠন জনসঙ্ঘ থেকে বিজেপি তে বদলে গেলেও , মতাদর্শের চেহারা একদিনের জন্যও বদলায়নি। এই পর্যন্ত যা বলা হলো তা এক আদ্যন্ত সাম্প্রদায়িক কর্মসূচি, কিন্তু এর পরে দীনদয়াল উপাধ্যায় ‘একাত্ম মানবতাবাদ’ (Integral Humanism) নামে এক দার্শনিক ভিত্তি তৈরি করেন । এই দর্শন ওয়েস্টার্ন ক্যাপিটালিজম  ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং মার্ক্সবাদী সমাজতন্ত্র—বিরুদ্ধে এক নতুন দৃষ্টি কোণ, যা আবার গান্ধীর সঙ্গে সবটা এক নয়। এবং আজকের সমাজে তা এক্কেবারে অচল, কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী সেই দর্শনকে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন, সেখান থেকেই ওনার এই লোকাল ফর ভোকাল ইত্যাদি কথাগুলো বলা। দীনদয়াল উপাধ্যায় বলতেন সমাজ মানুষের চুক্তির মাধ্যমে তৈরি হয় না। এর এক নিজস্ব ‘জাতীয় আত্মা’ আছে । ব্যক্তি স্বাধীনতাকে চূড়ান্ত প্রাধান্য দেওয়া পুঁজিবাদ এবং তাঁর মতে ব্যক্তিকে পিষে ফেলা কমিউনিজম—দুটোকেই তিনি বাতিলের খাতায় রেখেছিলেন। কিন্তু তার বদলে গান্ধিজীর গ্রাম সুরাজ গ্রহণ করতেও পারেন নি, স্বনির্ভর গ্রাম বা অঞ্চলের কথাও বলতে পারেন নি, বা পুঁজির অছি হয়ে ওঠা, সাধারণ মানুষের জন্য পুঁজির সামাজিক দায়িত্বের কথাও বলতে পারেন নি। পারেন নি কারণ তাঁকে সচেতন ভাবেই গান্ধীর থেকে দুরত্ব রাখতে হয়েছিল। আর সেই কারণেই এক বকচ্ছপ নীতি, এক অসম্ভব স্ববিরোধী এক গোলানো দর্শনের কথা তিনি বলেছিলেন। আমরা মাঝে মধ্যেই ডিপ স্টেটের কথা বলি, সমাজের গভীরে শেকড় বাড়ানোর চেষ্টা আর রাষ্ট্র কাঠামোর সম্পূর্ণ দখল নেবার জন্য এক ডিপ স্টেট হয়ে উঠেছে এই আর এস এস। আরএসএস-এর সেই ক্ষমতা তার সহযোগী সংগঠনগুলোর বিশাল নেটওয়ার্কের মধ্যেই লুকিয়ে আছে। এই নেটওয়ার্কটাই ‘সঙ্ঘ পরিবার’। আজ যেদিকে তাকাবেন শিক্ষা, আইন, সংস্কৃতি, সমাজসেবা, এবং রাজনীতি—জীবনের প্রায় সব ক্ষেত্রেই সক্রিয়, সঙ্গে এক বিরাট প্রচার যন্ত্র, এক অসম্ভব শক্তিশালী আই টি সেল। আজ ১০০ বছর পরেও আর এস এস তার প্রথম দিনের আদর্শ থেকে এক চুলও সরেনি, সেদিনও গান্ধীর ভারতে তারাই ছিল এক পালটা আদর্শ, আজও যখন দেখি কংগ্রেস, কমিউনিস্ট, সমাজবাদী, উদার গণতান্ত্রিক লোকজনের বিরুদ্ধে তারাই লড়ছে, তখন এটা বোঝা যায়, যাদের সেদিন এক অকিঞ্চিৎকর শক্তি ভেবে ছাড় দেওয়া হয়েছিল, তারা আদতে চুপ করে নিজেদের কাজ করে গেছে, বহিরঙ্গে হাফ প্যান্ট ছেড়ে ফুল প্যান্ট হয়েছে, নাগপুরের দফতর থেকে এক ঝাঁ চকচকে কর্পোরেট দপ্তরে এসেছে, কিন্তু সেই আদত দর্শন সেই দ্বিজাতিতত্ত্বের দর্শন, সেই নিখাদ মুসলমান ঘৃণা, সংখ্যালঘুদের ভারতীয় বলে না ভাবা, সবটাই একই রকম থেকে গেছে। কিন্তু দেশের ৮০% মানুষ হিন্দু হবার পরেও তারা এখনও, আজও ৫০% র বেশি হিন্দুদের সমর্থন পায়নি, এখনও দেশের ৬০% মানুষ অবিজেপি, এখনও দেশ গান্ধী আম্বেদকরের নামে রাস্তায় নামে। কাজেই এই বৃদ্ধিই এক চরম শিখরও হতেই পারে যেখান থেকে এবারে পতনের সময় এসে গেছে। আগামী দিন সেই কথাই বলবে।

অন্য খবর দেখুন

Read More

Latest News