হরিণঘাটা: পুজোর আর মাত্র ৮ দিন! শরতের মেঘ আর কাশফুলকে সাক্ষী রেখে উমা আসছে বাপের বাড়িতে! মা আসার আনন্দে সেজে উঠছে চারিদিকে। আর দুর্গাপুজোর সঙ্গে বনেদি বাড়ির ইতিহাস মিলেমিশে একাকার হয়ে রয়েছে। হরিণঘাটার রায়বাড়ির দুর্গাপুজো এ বছর ১০৬ বছরে পদার্পণ করছে। একসময় বিরহের যমুনা নদীর পাড়ে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে গভীর জঙ্গল ছিল।
১৩২৬ বঙ্গাব্দে যজ্ঞেশ্বর রায়ের হাত ধরেই এই দুর্গাপুজোর সূচনা হয়। দুর্গা দালান মন্দিরের পাশেই বেলগাছে বোধন শুরু করে শুরু হত মায়ের পুজো। অষ্টমীতে সন্ধিপুজোর সময়ে বন্দুকের গুলি আকাশে ছুড়ে সন্ধিপুজোর শুরু হত। সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী পুজোর এই তিনদিন সকল গ্রামবাসী মাটিতে বসে পাত পেরে ভোগ খেতেন।
আরও পড়ুন: উৎসবের মরশুমে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্কতা জারি মুখ্যমন্ত্রীর
সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে অনেক কিছুই বদলেছে, তবে গ্রামবাসীদের সেই ভোগ খাওয়ানোর রীতি আজও চলছে। তবে মাটিতে বসে নয়। টেবিল চেয়ারে বসিয়ে খাওয়ানো হয়। আগে পুজোয় বলি প্রথার প্রচলন ছিল। আজও আছে। তবে আখ, চাল, কুমড়ো, কলা বলি দেওয়া হয়। নবমীতে কুমারী পুজো হয়।
বাড়ির মহিলারাই এই পুজোর আয়োজনে হাত লাগান। পুজোর দিন হাসি ঠাট্টায় একসঙ্গে নাড়ু তৈরি থেকে শুরু করে ভোগ রান্না, সবটাই যত্ন সহকারে করেন বাড়ির মহিলারা। সারাবছর পরিবারের সদস্যরা যে যেখানেই থাকুক, পুজোর এই চারটে দিন কিন্তু সকলেই আসেন বিরহী রায় বাড়ি দুর্গাপুজোতে। ষষ্ঠীতেই মাকে অলংকারে সাজিয়ে তোলা হয়। বংশপরম্পরায় আজও পালেরা দুর্গা প্রতিমা গড়ে তোলেন। জন্মাষ্টমীর দিন কাঠামো দিয়ে শুরু হয় প্রতিমা গড়ার কাজ। আর দশমীতে মাকে আজও কাঁধে চড়িয়ে যমুনা নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়। সেই সাবেকি নিষ্ঠা মতে আজও পুজো হয় রায় বাড়িতে।
দেখুন অন্য খবর