কলকাতা: বিহারের পর এবার বাংলায়, রাজ্যে এসআইআরের প্রস্তুতির তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এসআইআরের বিরোধিতায় ফের সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, ”তাড়াহুড়োয় কাজ করতে গিয়ে যদি কোনও সম্প্রদায়ের কোনও নাগরিকের নাম বাতিল হয়, তাহলে বলব, আগুন নিয়ে খেলবেন না। SIR-র নাম করে NRC করানো হচ্ছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলায় NRC হলে আগুন চলবে বলে হুঁশিয়ারি দেন মমতা। বিএলওদের ডেকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তাদের ইচ্ছেমতো কাগজ তৈরি করতে বলা হচ্ছে বলেও দাবি করেন মমতা। এই সব কিছুর পিছনে দিল্লির একজন মীরজাফরের হাত আছে বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এরইমধ্যে SIR-এর কাজ খতিয়ে দেখতে ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতীর নেতৃত্বে বাংলায় এসেছিল নির্বাচন কমিশনের বিশেষ টিম। দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক ও অনান্য প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকও হয়। তারপর থেকেই ১৫ অক্টোবরের পর বাংলায় SIR হতে পারে বলে জোর জল্পনা শোনা যাচ্ছে। এদিন মমতা বলেন, “এসআইআরের নাম করে ফেস্টিভ্য়ালের সময়টাকে কেন বেছে নেওয়া হয়েছে?”একদিকে গোটা বাংলায় দুর্যোগ চলছে। মানুষের দুর্ভোগ চলছে। সামনে আবার কালীপুজো, ছটপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো রয়েছে। চারিদিক ডুবে রয়েছে। বন্যায় মানুষের ঘরবাড়ি, কাগজপত্র সব ভেসে গিয়েছে। কোথা থেকে মানুষ এখন কাগজ দেবে? সেখানে ফিল্ড সার্ভের নাম করে তিনটে অফিসে বসে চারজন অফিসার বিএলও-দের ডেকে থ্রেট করছেন, বলছেন তাঁদের ইচ্ছামতো কাগজ তৈরি করতে হবে। এরপর বিহারের প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিহারে করতে পেরেছিলেন কারণ ওখানে বিজেপি সরকার। কিন্তু বাংলায় সামথিং ডিফারেন্ট। বাংলায় অনেক সম্প্রদায়ের মানুষ আছে। হিন্দু, মুসলিম, শিখ, তফসিলি জাতি, উপজাতি আছে।
আরও পড়ুন: রাজ্যের বিধানসভা ভোট কি রাষ্ট্রপতি শাসনে? বিরাট ইঙ্গিত শুভেন্দু অধিকারীর
বিজেপিকে কটাক্ষ তো রয়েইছে সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের তুলোধনে করে বলেন, “যখন মানুষ ফেস্টিভ্যাল মুডে রয়েছে, চারপাশে যখন দুর্যোগ-দুর্ভোগ সেখানে ২ মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ ভোটার লিস্ট কী করে? মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুললেন, ”এসআইআরের নামে কেন এনআরসি নোটিস পাঠাল? কোন অধিকারে বাংলার মানুষকে অসম সরকার এই নোটিস পাঠাচ্ছে? এনআরসি করবেন গায়ের জোরে? পারবেন না কোনওদিন। এসআইআরের নামে ভোট কাটার ষড়যন্ত্র। বাংলার মানুষ আপনাদের বিশ্বাস করে না। বাংলাকে আপনারা বঞ্চিত করেছেন।
ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর হুমকির সুরে বলেছেন, দেড় কোটি রোহিঙ্গার নাম বাদ যাবে। এরপরই মমতার প্রশ্ন, ‘এক বিজেপি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কীভাবে বলতে পারেন যে ১.৫ কোটি ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে? তার মানে কি এই পরিকল্পনা বিজেপি অফিসে তৈরি করা হয়েছে? আর নির্বাচন কমিশন স্ট্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করবে? ওরা বাদ দেওয়ার কে? তাঁর আরও দাবি, ‘এখন ভোট নয়, তাও কেন নির্বাচন অফিসারদের ডেকে বৈঠক? নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিয়োগ।
দেখুন ভিডিও