কলকাতা: রাজ্যে অনিয়ন্ত্রিত টোটোর (Toto) দৌরাত্ম্য রুখতে বড় পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। এবার থেকে টোটোতেও নম্বর প্লেট। ৩০ নভেম্বের মধ্যে টোটোতে বাধ্যতা মূলক রেজিষ্ট্রেশন নম্বর। এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী (Snehasis Chakraborty)। টোটোকে শৃঙ্খলায় আনতে কড়া পদক্ষেপ রাজ্যের। পরিবহনমন্ত্রী দফতর সূত্রে খবর এবার থেকে রাজ্যের প্রতিটি টোটোকে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনা হবে এবং দেওয়া হবে অস্থায়ী এনরোলমেন্ট নম্বরসহ নম্বর প্লেট।
শুক্রবার পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, কমপক্ষে ১০ লাখ টোটো আছে সারা রাজ্য জুড়ে। ন্যাশনাল ও স্টেট হাইওয়েতে টোটো চলাচল করবে না। কিন্তু রাস্তা পারাপার করতে পারে। রাজ্যে মোট কত টোটো চলছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান প্রশাসনের কাছে নেই। কিন্তু টোটো নিয়ে নাগরিকদের অভিযোগ, যানজট, এবং অটো,বাস চালকদের অসন্তোষ বহুদিন ধরেই রয়েছে প্রশাসনের নজরে। লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবিকা তাই বন্ধ করতে নিষেধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মারাত্মক যানজট তৈরি হচ্ছে। অন্য নাগরিকদের সীমাহীন অসুবিধা হচ্ছে। toto কে শৃঙ্খলার মধ্যে আনার কাজ শুরু হল। কিউ আর কোড দেওয়া স্টিকার লাগানো হবে টোটোর গায়ে। চিহ্নিতকরণের কাজ শেষ হওয়ার পর toto চলার রাস্তা বেছে দেওয়া হবে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, পুলিশ পরিবহন দফতর এবং ইউনিয়ন মিলে ১৩ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বরের ডেডলাইনের মধ্যে চিহ্নিতকরণ প্রক্রিয়া শেষ হবে। প্রক্রিয়াটি অনলাইনের পাশাপশি কিছু সরকারি সহায়তা কেন্দ্র থেকেও করা যাবে। রেজিস্ট্রেশন কমপ্লিট হওয়ার পর আর কোনো toto কে রাজ্যের কোথাও রাস্তায় নামার অনুমতি দেওয়া হবে না। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নাম রেজিস্ট্রশন করানো বাধ্যতামূলক। যারা করবেন না তাদের toto রাস্তায় চলতে দেওয়া হবে না।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছে পিস্তল হাতে যুবক, তারপর কী হল?
টোটোর রেজিস্ট্রেশনের জন্য দিতে হবে ১,০০০ টাকা, ও ছয় মাস পর থেকে প্রতি মাসে ১০০ টাকা করে দিতে হবে । বছরে মোট ১,২০০ টাকা জমা দিতে হবে। টোটো চালকদের বিমার আওতায় আনার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে বলে পরিবহন দপ্তর সূত্রে খবর। টোটোর রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া অনলাইনের পাশাপাশি নির্দিষ্ট সরকারি সহায়তা কেন্দ্র থেকেও করা যাবে। পুলিশ, পরিবহন দফতর এবং টোটো ইউনিয়নগুলি যৌথভাবে মাঠে নামবে চিহ্নিতকরণের জন্য। কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর কোনও অবৈধ বা অচিহ্নিত টোটো রাস্তায় নামতে পারবে না।
পরিবহন দফতর সূত্রের খবর, সব টোটো নম্বর পাওয়ার পর ভবিষ্যতে রাস্তায় জোড়-বিজোড় নম্বর ভিত্তিক টোটো চলাচলের বিধি আনার চিন্তাভাবনাও চলছে। ২০২৬ সালের জানুয়ারিতেই এই নীতি কার্যকর করার সম্ভাবনা রয়েছে। এই উদ্যোগের ফলে একদিকে যেমন শহর ও মফস্বলে টোটো চলাচলে শৃঙ্খলা আসবে, তেমনই পরিবহন খাতে রাজ্যের রাজস্বও বাড়বে। নাগরিক দুর্ভোগ কম করার পাশাপাশি চালকদেরও এক সুরক্ষিত ও স্বীকৃত জীবিকা নিশ্চিত করাই এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য বলে আধিকারিকদের মত।
অন্য খবর দেখুন