Wednesday, October 22, 2025
HomeScroll১৫৩ বছরের পুরনো ঐতিহ্য ঘিরে প্রস্তুতি তুঙ্গে, কালীপুজোয় কদমার চাহিদা আকাশছোঁয়া
Kali Puja 2025

১৫৩ বছরের পুরনো ঐতিহ্য ঘিরে প্রস্তুতি তুঙ্গে, কালীপুজোয় কদমার চাহিদা আকাশছোঁয়া

মানকরের কদমা আজও ঐতিহ্য ও জনপ্রিয়তার প্রতীক

পূর্ব বর্ধমান: দুর্গাপুজোর (Durga Puja 2025) পর বাংলার দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব কালীপুজো (Kali Puja 2025)। আর কালীপুজোর সঙ্গে মানকরের নাম যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে এক ঐতিহ্যের মাধ্যমে, মানকরের কদমা। প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো এই ঐতিহ্য আজও সমান জনপ্রিয়।

কথিত আছে, একসময় জঙ্গলে ঘেরা ছিল মানকর গ্রাম। সেই সময় ডাকাতদল এই এলাকায় আশ্রয় নিত এবং ডাকাতির আগে মা কালির পূজা করত। সেই পূজায় দেবীকে ফলের সঙ্গে অর্পণ করা হতো কদমা মিষ্টি। ধীরে ধীরে এই কদমা মানকরের এক বিশেষ পরিচয় হয়ে ওঠে। স্থানীয় মিষ্টি প্রস্তুতকারকেরা রাসায়নিক ছাড়া চিনি ফুটিয়ে তাতে ছানার জল মিশিয়ে এই কদমা তৈরি করতে শুরু করেন, যা আজও একইভাবে চলে আসছে।

আরও পড়ুন: রাজ্য সরকারের টোটো রেজিষ্ট্রেশন প্রকল্পকে কটাক্ষ রানাঘাট বিজেপি বিধায়কের

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মানকর গ্রামে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১৩৮টি কালীপুজো হয়। প্রতিটি পূজোতেই দেবীকে মানকরের কদমা নিবেদন করা আবশ্যক। ফলে পুজোর মরশুমে কদমা প্রস্তুতকারকদের ব্যস্ততা তুঙ্গে।

কদমা প্রস্তুতকারী হারাধন কর জানিয়েছেন, “প্রায় ষাট বছর ধরে আমি কদমা তৈরি করছি। আগে বাবা বানাতেন। চিনি ফুটিয়ে তাতে ছানার জল মিশিয়েই আমরা কদমা তৈরি করি। রাসায়নিক ব্যবহার করি না।” তাঁর কথায়, মানকরের কদমা ভেতরে ফাঁপা ও বাইরের দিকে গোল, যা তার বিশেষত্ব।

স্থানীয় বাসিন্দা জয়গোপাল দে বলেন, “মানকরের কদমা আমাদের গর্ব। যেমন বর্ধমানে মিহিদানা-সীতাভোগ বিখ্যাত, তেমন মানকরে কদমা।” মানকর হাটতলা মোড়ের মিষ্টি ব্যবসায়ী কার্তিক দে জানান, “এ বছর কদমার চাহিদা অনেক বেশি। এমনকি ১৮ কিলো ওজনের কদমার বরাতও এসেছে।” এক সময় বিদেশেও রপ্তানি হত মানকরের কদমা। বর্তমানে বাজারে কাঁচামালের দাম ও শ্রমমূল্য বৃদ্ধির কারণে মুনাফা কম হলেও, এই ঐতিহ্য টিকিয়ে রেখেছেন কয়েকজন নিবেদিতপ্রাণ কারিগর। আজও কালীপুজোর আগের রাতে মানকরের রাস্তায় কদমার গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে— সেই গন্ধই যেন স্মরণ করিয়ে দেয় এক চিরন্তন মিষ্টি ঐতিহ্যের গল্প।

দেখুন আরও খবর:

Read More

Latest News