দিল্লি: শনিবার রাতে দিল্লিতে ঘটে যায় ভয়ঙ্কর ঘটনা। আর সেই আতঙ্ক যেন কোনভাবেই পিছু ছাড়ছেনা। মহাকুম্ভে যাওয়ার উদ্দেশে ট্রেনে উঠতে গিয়ে পদপিষ্টে মৃত্যু হয় ১৮ জনের। ঘটনার পর কেটে গেছে ২৪ ঘন্টা। কিন্তু আতঙ্ক যেন কিছুভাবেই পিছু ছাড়ছেনা। পদপিষ্টের ঘটনায় বেশিরভাগই মহিলা এবং শিশু। তবে এই দুর্ঘটনার দায় এড়াতে এবার রেল এবং দিল্লি পুলিশের মধ্যে শুরু হয়েছে কাদা ছোড়াছুড়ি।
রেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে দিল্লি পুলিশের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ে একাধিক ট্রেন প্ল্যাটফর্মে পৌঁছয়নি। আর ঠিক সেই সময়ে প্রয়াগরাজ যাবে বলে একটি স্পেসাল এক্সপ্রেস ট্রেন আচমকাই ঢুকে পড়ে। আর ট্রেনের কথা শুনেই আচমকা যাত্রীদের মধ্যে হুড়হুড়ি শুরু হয়ে যায়। যার জেরেই ঘটে এই ঘটনা।
আরও পড়ুন: রেলমন্ত্রী দেখা করলেন অমিত শাহের সঙ্গে, কোনও বিশেষ ঘোষণা?
কিন্তু শেষ মুহূর্তে সেই স্পেশ্যাল ট্রেন ঘোষণা করায় যাত্রীদের মধ্যে যেই হুড়হুড়ি লাগে, তাতে রেলের দোষই আছে বলে সাফ জানাল দিল্লি পুলিশ। যদিও পরে দিল্লি পুলিশের অভিযোগকে নস্যাৎ করে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, “নয়া দিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যাত্রীদের চাপ সামলাতে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
তদন্তে নেমে জানা গিয়েছে, প্রয়াগরাজে দুটি ট্রেনের নাম গুলিয়ে ফেলার কারণেই যাত্রীদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। প্রাথমিকভাবে রেলের ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ কেপিএস মালহোত্র জানিয়েছিলেন, নয়াদিল্লি স্টেশনে পদপিষ্টের মতো ঘটনায় ১৫ জন আহত হয়েছেন ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়েছিল প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস। ওই প্ল্যাটফর্মে বহু মানুষ দাঁড়িয়েছিলেন। স্বতন্ত্র সেনানি এক্সপ্রেস ও ভুবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেস দেরি করছিল। এই দুই এক্সপ্রেসের যাত্রীরাও ১২, ১৩ ও ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়েছিলেন। খবর অনুযায়ী, ১৫০০ জেনারেল টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। তাই জনতা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছিল। এই পরিস্থিতিতে ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম এবং ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের এসকেলটরের কাছে পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যায়।
পাশাপাশি দিল্লি পুলিশের তরফ থেকে রেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে, প্রয়াগরাজের যাওয়ার আরও ৪টি ট্রেনের মধ্যে ৩টি নির্ধারিত সময়ের থেকে দেরিতে ছাড়ায়। সেই কারণেই স্টেশনে ওইসময় ব্যাপক ভিড় হয়েছিল। যার কারণে পদপিষ্টের মত ঘটনা ঘটে।
তবে দিল্লি পুলিশের এই অভিযোগকে পাত্তা দিতে নারাজ রেল। উত্তর রেলওয়ের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোন ট্রেন বাতিল করা হয়নি, পাশাপাশি কোনও ট্রেনের প্ল্যাটফর্মও বাতিল করা হয়নি। সমস্ত ট্রেনও নির্দিষ্ট সময় মেনেই চলছিল। রেলের অভিযোগ, পা পিছলে প্ল্যাটফর্মের সিঁড়িতে পড়ে যাওয়ায় পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে।
দেখুন অন্য খবর