Wednesday, October 22, 2025
HomeScrollল্যুভর মিউজিয়ামে ডাকাতি, কলকাতা মিউজিয়ামে নিরাপত্তা কেমন?
Louvre Museum

ল্যুভর মিউজিয়ামে ডাকাতি, কলকাতা মিউজিয়ামে নিরাপত্তা কেমন?

অমূল্য সামগ্রী ফেরতের আশা কম, কেন বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

ওয়েবডেস্ক- প্যারিসে (Paris) লুভর মিউজিয়ামে (Louvre Museum) ডাকাতির ঘটনায় প্রশ্নের মুখে নিরাপত্তা। বিশ্বখ্যাত মিউজিয়াম হল এই লুভর যাদুঘর। সেখানে দিনের আলোয়, কিভাবে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটল? তাহলে কী নিরাপত্তায় ফাঁক ফোকর রয়েছে? চুরি গেছে ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (Napoleon Bonaparte) ও সম্রাজ্ঞী জোসেফিনের (Empress Josephine) অমূল্য গয়না (Priceless jewellery) । রবিবার দিনদুপুরে এই এই ঘটনা ঘটে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে প্যারিসের লুভর জাদুঘরটি।

নেপোলিয়নের আমলের অমূল্য আটটি অলংকার চুরি গেছে। ট্রাক-মাউন্টেড মই ব্যবহার করে চোরের দল পৌঁছে যায় মিউজিয়ামের দ্বিতীয় তলায়। সেখানে ফরাসি রাজমুকুটের রত্নভান্ডার সংরক্ষিত অ্যাপোলোর গ্যালারিতে (গ্যালারি দ’অ্যাপোলো) পৌঁছে যায়। সকাল ৯ টায় এই মিউজিয়াম খোলে, তার আধঘণ্টা পরেই এই লুটের ঘটনা ঘটে। এখনও পর্যন্ত চোরেদের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে নিরাপত্তা কারণে লুভর মিউজিয়াম আপাতত বন্ধ করা হয়েছে। ফরাসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নেপোলিয়ন তৃতীয়ের স্ত্রী সম্রাজ্ঞী ইউজেনির রাজমুকুটটিও চোরেরা নিয়েছিল। কিন্তু পালানোর তাড়ায় তারা সেটি ফেলে যায়। সেই মুকুটটিকে পাশ্ববর্তী এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

দুই শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে লুভর ছিল ফরাসি রাজপরিবারের প্রাসাদ। ১৭৯৩ সালে ফরাসি বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে এই প্রাসাদকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত মিউজিয়ামে পরিণত করে সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। লুভর মিউজিয়াম সাধারণ মানুষকে অতি দুর্লভ , ঐতিহাসিক বহুমূল্য সামগ্রীগুলি সামনে থেকে দেখার সুযোগ করে দেয়।

ইতিহাসে একাধিকবার এই লুভর থেকে চুরি হয়েছে বহুমূল্য সামগ্রী। ১৯১১ সালের ২১ আগস্ট লুভর থেকে চুরি হয়ে যায় লিওনার্দো দা ভিঞ্চির মোনালিসা (Leonardo da Vinci’s Mona Lisa) । এটি ছিল শতাব্দীর অন্যতম সেরা চুরি। সেই চোর ছিল ২৯ বছর বয়সী ইতালীয় অভিবাসী ভিনসেঞ্জো পেরুগিয়া। ১৯১৩ সালে সেটি  পেরুগিয়া ইতালির এক গ্যালারিতে ছবিটি বিক্রি করার চেষ্টা করতে গিয়ে ধরা পড়ে। ফ্লোরেন্সের এক হোটেল রুম থেকে পেরুগিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯১৪ সালে লিওনার্দো দা ভিঞ্চির মোনালিসা ফিরে আসে লুভর মিউজিয়ামে।

এর পর ১৯৪০ সাল। সেই সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি বাহিনী ফ্রান্সে প্রবেশ করে। ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে দূরদর্শী সিদ্ধান্ত নেন তৎকালীন জাদুঘরের পরিচালক জ্যাক জজার্ড। আগেভাগেই তিনি ১,৮০০-এর বেশি কাঠের বাক্সে ভরে মোনালিসাসহ লুভরের অমূল্য শিল্পকর্ম ফরাসি গ্রামীণ অঞ্চলের সরিয়ে ফেলেন। বেঁচে যায় লুভর। নাৎসিরা যখন লুভরে প্রবেশ করে, কিন্তু তখন মিউজিয়ামটি খালি ছিল।

এর পর ১৯৬৬।  নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লুভরের মালিকানাধীন পাঁচটি প্রাচীন অলঙ্কার চুরি হয়ে যায়। পরে এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১৯৮৩ সালে লুভ্‌র থেকে গায়েব হয়ে যায় রেনেসাঁ যুগের একটি বর্ম। দীর্ঘ ৪০ বছর পর উদ্ধার।

 

আরও পড়ুন-  নেপোলিয়নের অমূল্য গয়না লুঠ! বন্ধ হল প্যারিসের লুভর জাদুঘর

১৯৯০ সালে লুভরের তৃতীয় তলা থেকে পিয়ের অগুস্ত রেনোয়ারের ‘পোর্ট্রেট অব আ সিটেড উওম্যান’ পেইন্টিংয়ের ফ্রেম থেকে কেটে চুরি হয়। যা উদ্ধার হয়েছে কিনা জানা যায়নি।

বিশেষজ্ঞদের মতে চুরি যাওয়া বহু মূল্যবান এই সব সামগ্রী উদ্ধার অনিশ্চিত। কারণ, চুরির পরেই এই গয়নাগুলিকে ভেঙে বা কেটে বিক্রি করে দেয় দুষ্কৃতীরা। ফলে আসলের কোনও চিহ্ন থাকে না। একমাত্র উপায় পুলিশ যদি বহুমূল্য এই সব সামগ্রী উদ্ধারের ঘটনায় পুরস্কার ঘোষণা করে। তাই লুটের ধন চিরতরে হারানোর ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।

লুভর মিউজিয়ামে প্রায় ৩৫-হাজারের বেশি শিল্পকর্ম রয়েছে। এই মিউজিয়ামের স্থাপত্য, শিল্পকর্ম, আইকনিক কাঁচের পিরামিড এবং বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়। প্রতি বছর এই জাদুঘর দেখতে আসেন প্রায় ৯ কোটির বেশি পর্যটক। ফলে পর্যটন খাতে এই ঘটনা প্রভাব ফেলতে পারে।

দেখুন আরও খবর-

Read More

Latest News