ওয়েব ডেস্ক: ঝাড়গ্রাম জেলার (Jhargram) একটা বড় অংশ পড়ে জঙ্গলমহলের আওতায়। স্বাভাবিকভাবেই সেখানে বুনো হাতির (Wild Elephants) অবাধ বিচরণ রয়েছে। এমনও অনেক জায়গা রয়েছে, যেখানে রেল লাইন পেরিয়ে স্থান পরিবর্তন করে হাতির দল। সেই কারণে ঝাড়গ্রামের এলিফ্যান্ট করিডরে (Elephant Corridor) রেললাইনের পাশে গার্ডরেল (Guardrail) নির্মাণের পরিকল্পনা শুরু হয়েছে। তবে এটিকে ঘিরে আবার দানা বেঁধেছে নতুন বিতর্ক।
রেলের (Indian Railways) দাবি, হাতি–ট্রেন সংঘর্ষ রোধে এই প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বন দফতর (Forest Department) এবং পরিবেশবিদদের মতে, এই ব্যবস্থা উল্টে বন্যপ্রাণীর স্বাভাবিক চলাচলেই বাধা সৃষ্টি করছে। রেল জানিয়েছে, “প্রতিবছর হাতি ও ট্রেন সংঘর্ষে একাধিক প্রাণহানি ঘটে। সেই বিপদ এড়াতেই গার্ডরেল বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” দফতরের বক্তব্য, এই সুরক্ষাবেষ্টনী হাতিদের ট্র্যাকের উপর উঠে আসা থেকে বিরত রাখবে। ফলে দুর্ঘটনা কমবে।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুর কাণ্ডে নয়া মোড়! নির্যাতিতার পোশাকে সহপাঠীর যৌনরস
তবে বন দফতর রেলের এই যুক্তিকে সরাসরি খারিজ করেছে। তাঁদের মত, “গার্ডরেল বসানো মানে বনের প্রাণীদের প্রাকৃতিক চলাচলকে বাধাগ্রস্ত করা। এই করিডর কেবল হাতির নয়, হরিণ, বন্যশূকর ও অন্যান্য প্রাণীরও চলাচলের পথ।” বন দফতরের কর্মকর্তারা বিকল্প হিসেবে প্রস্তাব দিয়েছেন ওভারপাস, আন্ডারপাস, ট্রেনের গতিনিয়ন্ত্রণ অঞ্চল এবং লাইনের ধারে সফট প্যাডিং ব্যবস্থা করার, যাতে প্রাণীরা নিরাপদে পার হতে পারে এবং ট্রেনেরও গতি সীমিত থাকে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশও গার্ডরেল নির্মাণ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, প্রকল্পের উদ্দেশ্য প্রশংসনীয় হলেও বাস্তব প্রয়োগে বন ও বন্যপ্রাণের স্বার্থ রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এদিকে পরিবেশবিদদের মতে, “ঝাড়গ্রাম–খড়গপুর–বেলপাহাড়ি অঞ্চলের হাতি করিডর পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম সংবেদনশীল এলাকা। এখানে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে রেল ও বন দফতরের সমন্বয় অপরিহার্য।”
বর্তমানে দুই দফতরের মধ্যে চলছে আলোচনাও। মূল লক্ষ্য—একটি এমন সমাধান খোঁজা, যা একদিকে হাতি–ট্রেন সংঘর্ষ রোধ করবে, অন্যদিকে বন্যপ্রাণীর প্রাকৃতিক চলাচলেও ব্যাঘাত ঘটাবে না।
দেখুন আরও খবর: