Monday, September 22, 2025
বাঙালি কাউন্টডাউন
HomeScrollFourth Pillar | মোদিজির নতুন মিথ্যের ঝুড়িটা খোলা যাক
Fourth Pillar

Fourth Pillar | মোদিজির নতুন মিথ্যের ঝুড়িটা খোলা যাক

এদিকে ট্রাম্প সাহেব চাপিয়েছেন ৫০ শতাংশ ট্যারিফ আর মোদিজি এনেছেন জিএসটি-২

মোদিজি গতকাল সন্ধ্যেয় ২০ মিনিটের ভাষণে জানালেন আজকে নবরাত্রি শুরু, আর আজ থেকে দেশের মানুষ এক বিরাট সাশ্রয়ের সুযোগ পাবে। মানুষের হাতে প্রচুর টাকা বেঁচে যাবে, ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি। মোদি সরকার এর আগে ন’টা আলাদা আলাদা ট্যাক্স স্ল্যাব চাপিয়ে ৮ বছরে ৫৫ লক্ষ কোটি টাকা আয় করেছে। এবারে সেই স্ল্যাব কমিয়ে তিন করে দিয়ে সরকার বলছে ২.৫ লক্ষ কোটি টাকার বচত উৎসব? আগের টাকা ফেরত দিন, তারপর এসব নৌটঙ্কি করবেন। উনিজি সেই যে ‘মিত্রোঁ’ বলে ভাষণ দিয়ে দেশশুদ্ধু মানুষকে লাইনে নিয়ে গিয়ে খাড়া করিয়েছিলেন, তারপর থেকেই উনিজি আসবেন দেশবাসীকে কিছু বলতে শুনলেই বহু মানুষের প্যালপিটিশন হতে শুরু করে। কারণ উনিজি দেশবাসীকে ওনার বাপকেলে চাকর-বাকর ছাড়া কিছুই ভাবেন না, দেখলেই একটা করে কাজ গুঁজে দেন। আমরাও সেই শুরুর দিক থেকে প্রায় বিনা প্রশ্নে ওনার নির্দেশ মেনে সেই সব কাজ করে চলেছি। বললেন হাজার টাকার নোট বাতিল, আমরা লাইনে দাঁড়ালাম। দেশের জওয়ান মাইনাস ৩৭ ডিগ্রিতে সিয়াচীনে দাঁড়িয়ে আছে, আর ব্যাঙ্কের লাইন, সে আর কী? কত্ত কিছু হবে, ‘কালাধন’ সব বাজেয়াপ্ত হবে, উগ্রপন্থীরা ভাত না পেয়ে মরবে, দেশ বিকাশ আর উন্নয়নদাকে খুঁজে পাবে, সেই যে কবে দুই ভাই মেলায় হারিয়ে গিয়েছিল তাদের। কিন্তু আমিও জানি, আপনিও জানেন কিছুই হয়নি। তারপর একদিন সকালে উনি বললেন ঝাড়ু নাও, রাস্তা ঝাড়ু লাগাও, দিলাম, উনি একবার ফোটো শেসন দিয়েছেন আমাদের তো আপাতত সেটাই দায়িত্ব, ঝাড়ু লাগাও। তার পর বললেন ব্যঙ্কের সঙ্গে মোবাইল ফোনটা জুড়ে দাও। তার পর মোবাইলের সঙ্গে প্যান কার্ড। তার পর আধার কার্ডের সঙ্গে মোবাইল। তার পর আধারকার্ডের সঙ্গে ভোটার কার্ড। তার পর জানা গেল, আপনার কাছে আধার কার্ডই থাকুক আর ভোটার কার্ডই থাকুক, আপনি যে দেশের নাগরিক তার প্রমাণ দিতে হবে। তারপর জানা গেল উনি বিশ্বগুরু হয়েই গিয়েছেন, ২০টা দেশ ওনার কথা শুনেই চলছে, ট্রাম্প থেকে জর্জিয়া মেলোনি ওনার দোস্ত। চীন ৩৮ হাজার স্কোয়ার কিলোমিটার জমি দখলে রেখে চীন, উনি পাকিস্তানের দিকে তাকিয়ে বললেন ‘ঘর মে ঘুসকর মারেঙ্গে’। তারপর সংসদে ওনার ম্যান-ফ্রাইডে অমিত শাহ জানালেন ওনারা নাকি পাক অকুপায়েড কাশ্মীর ছিনিয়ে আনবেন। তো শুরু হল ‘অপারেশন সিঁদুর’, নাকি হাঁটু গেঁড়ে বসে পড়ল পাকিস্তান। কিন্তু মোদিজি পাক অকুপায়েড কাশ্মীর না ছিনিয়েই যুদ্ধ বিরতিতে রাজী হয়ে গেলেন। কারণ তখন ওনার শিরায়-ধমনীতে রক্ত নয়, গরম সিঁদুর দৌড়াদৌড়ি করছে। সিঁদুরে মার্কারি মানে পারদ থাকে, গোলমাল তো হবেই।

তো যাই হোক, এদিকে ট্রাম্প সাহেব চাপিয়েছেন ৫০ শতাংশ ট্যারিফ আর মোদিজি এনেছেন জিএসটি-২। আজ সেই জিএসটি নিয়েই তিনি দেশের মানুষজনকে কিছু কথা বললেন। ওনার এর আগের ইতিহাস বলে দিচ্ছে উনি যা যা বলেছেন তার একটাও সত্যি হয়নি, ওনার প্রতিশ্রুতি উনি নিজেই ভুলে গিয়েছেন। বলেছিলেন, অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা আসবে, হয়নি। বলেছিলেন বছরে দু’কোটি বেকারের চাকরি হবে, হয়নি। বলেছিলেন, কৃষকদের আয় দ্বিগুণ হবে, হয়নি। বলেছিলেন, ২০২৩-এর মধ্যে সবার পাকা ঘর হবে, হয়নি। বলেছিলেন ২০২৩-এর মধ্যে ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রি মোট জিডিপির ২৫ শতাংশ হয়ে যাবে, ২০২৫-এর মধ্যে, হয়নি। এবার বললেন, নবরাত্রি থেকেই মানুষের পকেটে টাকা থেকে যাবে। কেন? কারণ উনি নতুন জিএসটি চালু করেছেন। তো এর আগে গত পাঁচ বছর ধরে যে জিএসটি চালু ছিল তাহলে সেটা কী ছিল? জনবিরোধী? একটু ইতিহাসটা দেখুন, ২০০০ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর সরকার জিএসটি-র ধারনা নিয়ে কাজ শুরু করেন, এর আগে মডভ্যাট, মানে মডিফায়েড ট্যাক্স ইত্যাদির কথা হচ্ছিল, কিন্তু জিএসটি-র প্রথম প্রস্তাব করা হয়েছিল বাজপেয়িজী-র সময়ে। আর বাজপেয়ী সরকার জিএসটি মডেল তৈরির জন্য পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্তের নেতৃত্বে একটা কমিটি তৈরি করে, এবং মাথায় রাখুন এটা কিন্তু সেটিং ছিল না। ইতিমধ্যে বাজপেয়ি জামানা শেষ, ইউপিএ জামানার সূত্রপাত, কাজেই ঐ অসীম দাসগুপ্তের নেতৃত্বে কাজ এগোল। ২০০৬ সালে, তৎকালীন অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম ১ এপ্রিল ২০১০ থেকে জিএসটি চালু করার প্রস্তাবও করেছিলেন। কিন্তু রাজনৈতিক মতবিরোধ আর রাজ্যগুলোর মধ্যে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে ঐকমত্যের অভাবের কারণে এই প্রক্রিয়া বারবার পিছিয়ে যায়। কাদের সবথেকে বেশি বিরোধিতা ছিল? নরেন্দ্র মোদিজির, উনি তখন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী। ২০১১ সালে, জিএসটি প্রবর্তনের জন্য লোকসভায় সংবিধান (১১৫তম সংশোধনী) বিল পেশ করা হয়েছিল, কিন্তু সেটিও পাস হয়নি। ঠিক সেই সময়েই আমাদের মোদিজি বহু ভাষণ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন যে, ট্যাক্স পেয়ারের সঙ্গে আইটি ইনফ্রাস্ট্রাকচার না তৈরি করা হয়, ততদিন জিএসটি কোনও কাজেই দেবে না। এই ট্যাক্স পেয়ারের সঙ্গে আইটি ইনফ্রাস্ট্রাকচার জুড়ে দেওয়াটা কিন্তু মোদিজকির ঐ ‘এ প্লাস বি হোল স্কোয়ার’-এর মতোই একটি বিশুদ্ধ ঢপ, যার কোনও মানেই নেই। কিন্তু ঐ ভাষণের রেকর্ড এখনও থেকে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | চোর চোর, ওই যায় ভোট চোর, ভোট চোর, ধর ধর ওই যায় ভোট চোর, ভোট চোর

হ্যাঁ উনি সাফ বলছেন যে, দেশ আর দেশের পরিকাঠামো এখনও জিএসটি-র জন্য তৈরিই নয়, জিএসটি লাগুই করা যাবে না। কিন্তু মজার কথা হল, ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে এনডিএ সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই সেই জিএসটি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া গতি পেল শুধু নয়, ২০১৪ সালেই সংবিধান (১২২তম সংশোধনী) বিল লোকসভায় পেশ করা হয়। মানে মোদিজি ক্ষমতায় এসে এক বছরেরও আগেই, তখনও কিছু করে ওঠার আগেই ঐ অসীম দাসগুপ্ত কমিটির সিফারিস অনুযায়ী জিএসটি লাগু করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন। মানে এর আগের বিরোধিতা ছিল এক রাজনৈতিক বিরোধিতা। ২০১৫ সালের মে মাসে লোকসভা এই বিল পাস করে। এবং শেষে, ২০১৬ সালের অগাস্ট মাসে রাজ্যসভা এবং লোকসভা দু’টো সভাতেই বিলটা পাস হয়। জিএসটি লাগু হয়ে গেল ২০১৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর থেকে, সেই মাঝরাতের নৌটঙ্কিতে, হ্যাঁ সিপিএম-এর তরফে একমাত্র ঐ অসীম দাসগুপ্ত ছিলেন। তিনিই জানিয়েছিলেন, তিনি যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন ২০১১-তেই, সেই প্রস্তাবই লাগু হল, তিনি আনন্দিত। কিন্তু ২০১১-তে মোদিজি বিরোধীতা করেছিলেন এবারে মাঝরাতে লোকসভা রাজ্য সভার বৈঠক ডেকে নৌটঙ্কি করে জিএসটি লাগু হল, আর মিডিয়া তাকে মোদিজির মাস্টার স্ট্রোক বলে ব্যাখ্যাও করে দিল। কিন্তু দেশ জুড়ে ব্যবসা ধাক্কা খেল, আর তারপর থেকে হাজার বার বিভিন্ন পরিবর্তন এসেছে জিএসটি রুলে। এবারে সেই মাস্টার স্ট্রোককে আগাপাশতালা বদলে নতুন মাত্র তিনটে স্ল্যাবকে রেখে জিএসটি-২ আনা হল। মজার কথা এটাও মোদিজির মাস্টার স্ট্রোক। জানিনা কী করে আগেরটাও মাস্টার স্ট্রোক, আবার পরেরটাও মাস্টার স্ট্রোক হয়। সে যাই হোক মোদিজি সেই দু’নম্বর মাস্টার স্ট্রোক নিয়েই কথা বলতে এলেন। শুরুতেই উনি জানালেন নবরাত্রির শুভেচ্ছা, বাঙালির দুর্গাপুজো, নবরাত্রী নয়, বাঙালি আজ থেকেই দেশি মুরগি, পাঁঠার ঝোল খেতে শুরু করেছে, সপ্তমীতে চিলি চিকেন আর ফ্রায়েড রাইস, নবমীতে বিরিয়ানির প্ল্যানিং শেষ। উনি নাকি আগামীকাল থেকে গরম জল খেয়ে কাটাবেন, ওনার বানরবাহিনী ইতিমধ্যেই যেখানে যেখানে সম্ভব মাছ-মাংসের দোকান বন্ধ করেই দিয়েছে। ওনার দুর্গাপুজোর কথা জানার কথা নয়, আর এই বঙ্গ বিজেপির ভৃত্যদের কেউ যে ওনাকে তা মনে করিয়ে দেবেন তেমন সাহস তো কারও নেই। তো আগামীকাল থেকে জিএসটি লাগু হবে আর তাতে মানুষের কত সুবিধে হবে সেটা জানাতেই ওনার ভাষণ দিতে আসা। কারণ বাকি আর কিছুই ওনার বলার নেই, বিশ্বগুরু আপাতত ৫০ শতাংশ ট্যারিফ আর এইচওয়ানবি ভিসার চাপে কোঁকাচ্ছে। দেশের ভেতরে ভোট চোর ভোট চোর আওয়াজ উঠছে, যুদ্ধবিরতি নিয়ে এখনও ঠিকঠাক কোনও এক্সপ্ল্যানেশন নেই। এখন নতুন মাস্টার স্ট্রোক নিয়ে তিনি নেমেছেন।

আসুন এবারে এই ট্যাক্স বিষয়টা নিয়ে দু’টো কথা বলি। সরকার ট্যাক্স নেয়। কেন? কারণ সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনার, বিভিন্ন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের টাকা দরকার, সেই টাকা আসবে কোথা থেকে? অনেকটা আসবে এই ইনডাইরেক্ট ট্যাক্স থেকে, যা আমিও দেবো, আম্বানিও দেবে – সমান হারে। মানে আম্বানি ধোকলা কিনলে আগে ১২ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হত, এখন আপনি খেলেও ৫ শতাংশ, আম্বানি খেলেও ৫ শতাংশ। দিল্লির সরকারের কিছুটা আসবে ডাইরেক্ট ট্যাক্স, ইনকাম ট্যাক্স, কর্পোরেট ট্যাক্স থেকে। রাজ্যের কিছুটা আসবে এক্সাইজ থেকে, মানে মদ, গাঁজা বিক্রি করে। দুই সরকারের খানিক টাকা আসবে পেট্রল-ডিজেলের উপরে চাপানো ট্যাক্স থেকে, কিছুটা আসবে বাজার থেকে ঋণ নিয়ে, ঐ বন্ড ইত্যাদি জারি করে, কিছুটা আসবে পুরানো যা কিছু আছে, সে জমি হোক রাষ্ট্রায়ত্ব কারখানা হোক, সেসব বেচে আর মোদির সরকার টাকার যোগান টাকা ছাপিয়েও করতে পারে। কিন্তু টাকা ছাপালেই ইনফ্লেশন হবে, সেটাই এক হ্যাপা। এবারে ধরুন এই যে আয়ের সোর্সগুলো, সেগুলো কি খুব একটা বদলাবে? ইনকাম ট্যাক্স, কর্পোরেট ট্যাক্স যা কেন্দ্রীয় সরকার, মানে ইউনিয়ন গভর্নমেন্ট পায়, তা কি খুব বাড়বে বা কমবে? না কমবে না। এক্সাইজ ট্যাক্স, তেলের উপর চাপানো ট্যাক্স, রাষ্ট্রায়ত্ব কোম্পানি বেচে আমদানি, জমি বা সম্পদ বেচে আমদানি এসব কি খুব বিরাট একটা বদলাবে? না, বদলাবে না। এবারে ধরুন, ১০০ টাকার মধ্যে রাজ্য সরকারের কাছে ৩০ টাকা আসত জিএসটি থেকে, ইউনিয়ন সরকারও ৩০ টাকা পেত। জিএসটি কমিয়ে দেওয়া হল। অনেকটা কমিয়ে দেওয়া হল। ধরুন এবারে আসবে ২০ টাকা করে। ইউনিয়ন গভর্নমেন্ট কী করবে? উন্নয়ন খাতে কম খরচ করবে? ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্টে কম টাকা খরচ করবে? তাহলে তো সর্বনাশ। তাহলে উপায়? ওনারা টাকা ছেপে সামাল দেবেন। ইনফ্লেশন মানে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে। কিন্তু রাজ্য সরকার? কোথা থেকে আনবে? মদ, গাঁজা থেকে? কত আনবে? পেট্রল-ডিজেল? মানে কলগেটে ৩০ পয়সা কম দাম দিয়ে আপনি এবারে ৩০ পয়সা পেট্রল-ডিজেলে খরচ করবেন? লাভ কী হবে? আর না হলে উন্নয়ন প্রকল্প থমকে যাবে, খরচ হবে না। তার মানে আবার সেই একই আর্থিক প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে, নাহলে আবার ধার বাড়বে। আসলে জিএসটি বা গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স-এর প্রথম লক্ষ্য ছিল বিভিন্ন ট্যাক্সের বদলে একটা ইউনিফর্ম ট্যাক্স রেজিম তৈরি করা, সেই ট্যাক্সের কেন্দ্র রাজ্য এক সম বন্টন করা, আর মানুষকে সে ক্রেতা হোক আর বিক্রেতা হোক, বিভিন্ন রকমের ট্যাক্সের জন্য হয়রানি না হতে দেওয়া। জিএসটি চাপিয়ে জিনিসপত্রের দাম কমানো যায়, আর তাতে অর্থনীতির বিরাট সুবিধে হয়। এরকম অর্থনীতি ঐ এন্টায়ার পলিটিক্যাল সায়েন্স পড়া লোকজন ছাড়া আর কেউ বলে না, বলার কথা নয়।

‘টু সিমপ্লিফাই দ্য ট্যাক্স সিস্টেম’-এ ‘ওয়েল প্ল্যান্ড স্ট্রাকচার ক্যান বি আচিভড বাই ইমপ্লিমেন্টিং জিএসটি’। হ্যাঁ, এটাই ছিল জিএসটি-র প্রথম কথা যে, ট্যাক্স সিস্টেমটাকে অযথা জটিল না করে একটা সরল সোজা ব্যবস্থা তৈরি করাই ছিল জিএসটি চালুর লক্ষ্য। মোদিজি ছেলে ভোলানো অর্থনীতি বোঝাচ্ছেন। আচ্ছা আপনি আজকে যে বিরিয়ানিটা ২৬৫ টাকা দিয়ে কিনলেন, সেই বিরিয়ানিটা আগামীকাল কত টাকা দিয়ে কিনবেন? যদি সেই দোকান আপনাকে জিএসটি কমার পুরো লাভটাই ট্রান্সফার করে তাহলে ২৩৫ টাকায়? যদি কেনেন তাহলে রাজ্য সরকার ১৫ টাকা কম ট্যাক্স পাবে। এই তো হবে নতুন জিএসটি-র হিসেবে। রাজ্য সরকার এই ১৫ টাকাটা কোথা থেকে আনবেন? মোদিজি এই ১৫ টাকাটা তো নিজের পকেট থেকে দেবেন না। তাহলে? হ্যাঁ, হয় টাকা ছাপা হবে, হলে ইনফ্লেশন হবেই। নাহলে প্রকল্প বন্ধ হবে, হলে গোটা অর্থনীতির ক্ষতি। নাহলে রাজ্য সরকার অন্য কোনও পদ্ধতিতে ট্যাক্স আদায় করতে বাধ্য হবেন বা ধার নেবেন। এতে অর্থনীতিতে কোনও বিরাট জোয়ার আসবে? হ্যাঁ, এটা বুঝতে খুব সাধারণ বুদ্ধির দরকার। প্রধানমন্ত্রী জানেন গত দশ বছর ধরে এক গরু চোনাখেকো ভক্তকূল তৈরি করেছেন যাঁরা মোদিজি ফলিডল খাওয়ালেও তাই ‘জয় শ্রী রাম’ বলে খাবেন। তার সঙ্গে আছে বিকিয়ে যাওয়া গোদি মিডিয়া, যাঁরা ইতিমধ্যেই মোদিকেত্তনে নেমেই পড়েছেন। কিন্তু সত্যিটা বুঝুন, বোঝান, জানুন, জানান।

Read More

Latest News