Sunday, October 26, 2025
HomeScrollবন্যার জল নামার পর থেকেই উত্তরবঙ্গে নয়া আতঙ্ক, বন্যপ্রাণীর হামলা
North Bengal

বন্যার জল নামার পর থেকেই উত্তরবঙ্গে নয়া আতঙ্ক, বন্যপ্রাণীর হামলা

জঙ্গল থেকে খাদ্যের সন্ধানে গ্রামে হানা দিচ্ছে হাতি সহ বন্যপ্রাণীরা

অজয় সাহ, আলিপুরদুয়ার: উত্তরবঙ্গের (North Bengal) আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) ও জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri)  জেলাজুড়ে বন্যার জল নামার পর এখন নতুন এক আতঙ্ক ঘিরে ধরেছে মানুষকে বন্যপ্রাণীর (Wildlife) হামলা।

গত এক সপ্তাহে আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলায় অন্তত পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে হাতির আক্রমণে। অনেকেই আহত হয়েছেন। জঙ্গল থেকে খাদ্যের সন্ধানে গ্রাম অঞ্চলে ঢুকে পড়ছে হাতি সহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীরা। বনবিভাগ সূত্রে খবর, বন্যায় খাদ্যাভাব তৈরি হওয়ায় হাতি, বুনো শূকর, এমনকি চিতাবাঘও এখন গ্রাম ও চা-বাগান সংলগ্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। রাত নামলেই আতঙ্ক চেপে বসছে গ্রামবাসীদের মনে।

উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্স ও আলিপুরদুয়ার জেলার বহু গ্রামে এখন “ঘুমের মধ্যে মৃত্যু ভয়” বাস্তব রূপ নিয়েছে। কেউ বা সারারাত ঘুমাচ্ছে না, কেউ আবার পালা করে পাহারায় রয়েছেন। এক গ্রামবাসীর কথায়, “দিনের আলোতেই হাতি দেখা যাচ্ছে, রাত হলে তো সবাই দোতলায় উঠি, ঘুম আসে না। সন্ধ্যা হলেই খাবার সন্ধানে হাতি জঙ্গল থেকে গ্রামে ঢুকে সারারাত তান্ডব চলাচ্ছে। কারো কৃষি জমিতে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত করছে, বা কারোর বাড়ি তে আক্রমণ চলাচ্ছে। সারারাত চলছে হাতির তাণ্ডব।

আলিপুরদুয়ার জেলার, মাদারিহাটের বিস্তর এলাকায় হাতির তাণ্ডব চলছে। কালচিনি ব্লকের দক্ষিণ লতা বাড়ি, পূর্ব সাতালি, দক্ষিণ মেদাবাড়ী সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় প্রতিনিয়ত হাতি গ্রামে এসে তান্ডব চালাচ্ছে। গ্রামবাসীদের ঘুম কেড়ে নিয়েছে হাতির আতঙ্ক।

আরও পড়ুন- বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ,সাগরে জন্ম নিচ্ছে ‘মান্থা’

ইতিমধ্যে প্রশাসন ও বনদফতর যৌথভাবে টহল শুরু করেছে। ড্রোন নজরদারি, মাইক প্রচার ও সাইরেনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে বন্যপ্রাণী করিডোরের আশপাশে।

তবুও ভয় কাটছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, জঙ্গল এলাকায় লাগাতার দখল, নদীর গতিপথ পরিবর্তন ও বনভূমি ধ্বংসের ফলেই মানুষের সঙ্গে বন্যপ্রাণীর সংঘাত দিন দিন বাড়ছে বলে এলাকাবাসীর ধারণা।

প্রশ্ন উঠছে সহাবস্থানের পথ কোথায়? প্রকৃতির স্বাভাবিক ভারসাম্য রক্ষায় মানুষ কতটা দায়ী? উত্তরবঙ্গের এই অবস্থা একবারে স্পষ্ট করে দিচ্ছে, বন্যার জল নেমে গেলেও প্রকৃতির রোষ এখনও থামেনি। যদি এখনই পদক্ষেপ না নেওয়া যায়, তাহলে “ঘুমের মধ্যে মৃত্যু ভয়” হয়তো আগামী দিনের স্থায়ী বাস্তবতা হয়ে উঠবে।

দেখুন আরও খবর-

 

 

Read More

Latest News