ওয়েব ডেস্ক: সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশের (Journalist Gauri Lankesh Murder) আরও একটা মৃত্যুদিন এসে গেল। আগামী শুক্রবার গৌরীর মৃত্যুর ৮ বছর পূর্ণ হবে। এখনও এই সাংবাদিক হত্যার বিচারই (Justice) শেষ হয়নি। ফলে কারও সাজাও হয়নি।
আগামী ৫ সেপ্টেন্বর সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ হত্যার ৮ বছর পূর্ণ হবে। ২০১৭ সালে ৫৫ বছর বয়সী লঙ্কেশকে বেঙ্গালুরুতে (Bengaluru) তাঁর বাড়ির সামনে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারা সবাই দীর্ঘ দিন ধরেই জামিনে মুক্ত। আর এক অভিযুক্তকে পুলিশ গত ৮ বছরেও ধরতে পারেনি। এই মামলায় মোট ৫৩২ জন সাক্ষীর মাত্র ১৯৩ জনের সাক্ষ্য গত ৮ বছরে গ্রহণ করা সম্ভব হয়েছে। আশংকা, মামলা এই গতিতে চললে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হতেই হয়তো আরও ৮ বছর কেটে যাবে।
আরও পড়ুন: GST কাউন্সিলের বৈঠক! দাম কমবে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর?
‘কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট’ নামের সংগঠনের দেওয়া তথ্য বলছে ১৯৯২ সাল থেকে ভারতে মোট ৬১ জন সাংবাদিক খুন হয়েছে। গত দশ বছরের হিসেব বলছে হাতে গোনা কয়েকটি ক্ষেত্রে সাংবাদিক হত্যার মামলার নিষ্পত্তি হলেও ওই একই সময়ে ১৯ জন সাংবাদিক হত্যার ঘটনার কোনও কিনারা হয়নি, দোষীদের শাস্তি হয়নি। মামলা এখনও চলছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ২০১৭ সালে শ্রীনগরে বিশিষ্ট কাশ্মীরী সাংবাদিক সুজাত বুখারির হত্যা। দফতরের মধ্যেই কর্মরত আবস্থায় বুখারিকে হত্যা করেছিল দুষ্কৃতীরা। কোনও গ্রফতার হয়নি। জানাই যায়নি কারা তাকে হত্যা করেছিল। ২০১৬ সালে বিহারের সিওয়ানে খুন হয়েছিলেন হিন্দুস্তান পত্রিকার সাংবাদিক রাজদেব রঞ্জন। প্রায় ন’বছর পর সেই মামলার রায় বেরিয়েছে গত ৩০ অগস্ট। তিন জন দোষী সাব্যস্ত হয়েছে বাকি তিন জন প্রমাণের অভাবে মুক্তি পেয়েছে। একটু পিছনে ফিরে যাওয়া যাক। ১৯৯৯ সালে খুন হয়েছিলেন আউটলুক ম্যাগাজিনের কার্টুনিস্ট ইরফান হুসেইন। ২০০৬ সালে এই মামলা শেষ হয়। কাউকেই দোষী প্রমাণ করতে পারেনি পুলিশ। প্রমাণের অভাবে আদালত সবাইকেই ছেড়ে দিয়েছিল। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাংবাদিক শিবানী ভাটনগর খুন হন ওই একই বছর, ১৯৯৯ সালে। এই মামলায়ও প্রমাণের আভাবে মূল অভিযুক্ত ছাড়া পেয়ে যায় ২০১১ সালে। অসমের সম্পাদক পরাগ দাস হত্যা মামলা চলেছিল ১৯৯৬ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত। কেউ শাস্তি পায়নি।
প্রেস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া ২০১৬ সালে রাজদেব রঞ্জন হত্যার ঘটনার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছিল, সাংবাদিক হত্যার মতো ঘটনার বিচার দ্রুত শেষ করতে যেন বিশেষ ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে বিচারের ব্যবস্থা করা হয়। কারণ, ৯৬ শতাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে সাংবাদিক হত্যার ঘটনার বিচার শেষ হয় না। চলতেই থাকে। সে কাজ আজও হয়নি।
দেখুন আরও খবর: