ওয়েবডেস্ক- ওড়িশার (Odisha) পর এবার অসমের (Assam) শিলচর (Silchar) । বাংলাদেশি (Bangladeshi) সন্দেহে ফের মুর্শিবাদের (Murshidabad) পরিযায়ী শ্রমিক (Migrant workers) আক্রান্ত। তাকে ব্যাপক মারধরের অভিযোগ উঠল স্থানীয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। রবিবার সকালের ঘটনা। শিলচরের কনকপুরের রাস্তায় মোটরবাইক নিয়ে ফেরি করছিলেন ওই যুবক। সেই সময় কয়েকজন এসে তাই বাইক আটকায়। তার আধার কার্ড দেখতে চায়।
এর পরেই ফের বাংলায় কথা বলতেই ‘তুই বাংলাদেশি’ বলে চড়-থাপ্পড়-কিল-লাথি-ঘুসি সব মারা হয়। মারাত্মকভাবে জখন হয়েছেন মুর্শিদাবাদের সুতি থানার নূরপুর গ্রামের বাসিন্দা রিঙ্কু শেখ (Rinku Sheikh) । এখানেই শেষ নয়, নিজেকে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা বলে পরিচয় দিতেই, দুষ্কৃতীরা বলে ‘তুই হুমায়ুন কবিরের লোক’, এই ব্যাপক গালিগালাজ করা হয় তাকে। তাঁর মুখের সামনে মোবাইলের ক্যামেরা নিয়ে হুমায়ূনকে উদ্দেশ্য করে ‘গালাগালি’ করতে বাধ্য করা হয় রিঙ্কুকে। প্রাণভয়ে হুমায়ুন কবিরকে গালাগালি দেন রিঙ্কু শেখ, এর পরেও মারধর চলতে থাকে। এক নাগাড়ে এলোপাথাড়ি মার চলতে থাকে।
এক নাগাড়ে এলোপাথাড়ি মার খাওয়ার মধ্যেই রাস্তায় মোটরবাইক ফেলে কোনও রকমে পালিয়ে প্রাণ বাঁচান ২৯ বছরের রিঙ্কু। পরে অসমের রঙ্গিরখারি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। পরে স্থানীয় দু’জন মোটরবাইক উদ্ধার করে থানায় এনে তাঁকে তুলে দেন।
রিঙ্কু জানিয়েছেন, বিগত সাত- থেকে আট বছর ধরে নিয়মিত শিলচরে ফেরির কাজ করেন। এই ধরনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা কোনও দিন হয়নি। এ বার মাস খানেক আগে এখানে এসেছি। ঘটনার দিন সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে মোটরবাইকে ৫০০ মিটার রাস্তা গিয়েছি। এমন সময়ে ‘এক জন বাংলাদেশি পেয়েছি’ আমাকে দাঁড়াতে বলেই মারধর শুরু। আধার কার্ডও দেখতে চায়। সেটা না-দেখে আমার বাড়ি কোথায় জিজ্ঞাসা করে ওরা। আমি মুর্শিদাবাদ বলা মাত্রই তোরা বাংলাদেশি বলে মারতে শুরু করে।
আরও পড়ুন- ভিন রাজ্যে আক্রান্ত বাংলাভাষীরা! প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি অধীরের
পরিযায়ী শ্রমিক রিঙ্কু জানিয়েছেন, হুমায়ুনের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। কোনও দিন দেখাও হয়নি। প্রাণের ভয়ে গালিগালাজ করে মোটরবাইক ফেলে প্রাণ বাঁচিয়েছি’।
রিঙ্কু রঙ্গিরখারি থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করেনি। রিঙ্কুর বাবা পেশায় চাষি শুকচাঁদ শেখ বলেন, তিন ছেলের মধ্যে দুই ছেলেই অসমে ফেরির কাজ করে। খবর পাওয়ার পর থেকেই নাওয়া-খাওয়া সব ভুলেছি। দু’জনকেই বলেছি যত দ্রুত সম্ভব বাড়ি ফিরে আসতে।’ খবর পাওয়ার পর থেকেই মা সৈয়দা বিবি ছেলের জন্য কান্নাকাটি করছেন। তিনিও চাইছেন যত দ্রুত রিঙ্কু ও তাঁর ছোট ছেলে জাহাঙ্গির আলম বাড়ি ফিরে আসুক।’







