ওয়েব ডেস্ক: কথায় আছে, রাখে হরি মারে কে! ঠিক এই প্রবাদ বাক্যই যেন সত্যি হয়েছে বৃহস্পতিবার বিমান দুর্ঘটনায়। দীর্ঘ যাত্রাপথে মাত্র ২৭ সেকেন্ডেই সব শেষ। আমেদাবাদের ভেঙে পড়া এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন মাত্র একজন। তাঁর নাম রমেশ বিশ্বাসকুমার বুচারভাদা। মৃত্যু হয়েছে বিমানযাত্রী এবং বিমানের কর্মী মিলিয়ে ২৪১ জনের। কীভাবে বেঁচে গেলেন রমেশ বিশ্বাসকুমার? টেক অফের পর এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে (Air India Flight) ঠিক কী ঘটেছিল? হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সেই রোমহর্ষক ঘটনার কথাই শোনালেন রমেশ।
দীর্ঘ যাত্রাপথ শেষ হয়েছিল মাত্র ৩০ সেকেন্ডে। বিপর্যয় থেকে প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন মাত্র একজন। তা-ও নিজের পায়ে হেঁটে। আক্ষরিক অর্থেই মিরাকল! বর্তমানে আমদাবাদের সিভিল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন রমেশ বিশ্বাসকুমার বুচারভাদা (Ramesh Viswashkumar Bucharvada)। ৩৮ বছর বয়সি রমেশ, ব্রিটিশ নাগরিক এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তিনি বিমানের বাঁ দিকের ইমার্জেন্সি দরজার পাশে ১১এ নম্বর সিটে বসে ছিলেন। মৃত্যুকে দেখেছিলেন কাছ থেকে। সেই অভিজ্ঞতাই ভাগ করে নিলেন সংবাদমাধ্যমে। চিকিৎসকদের তিনি বলেন, “বিমানটি মাঝ আকাশে ভেঙে যায়, আর আমার সিটটি বিচ্ছিন্ন হয়ে ধ্বংসস্তূপের বাইরে ছিটকে পড়ে। নিশ্চিত মৃত্যুমুখ থেকে জীবন ফিরে পেয়েছেন তিনি। গোটা ঘটনাটি নিজেই বিশ্বাস করতে পারছেন না বিশ্বাস কুমার।
আরও পড়ুন: লাকি নম্বর ছিল ‘১২০৬’, অদ্ভুতভাবে রুপানির মৃত্যুও হল সেই তারিখেই
হাসপাতালে শুয়ে বিমান বিপর্যয়ে একমাত্র বেঁচে ফেরা যাত্রী বিশ্বাস কুমার রমেশ বলেন, ‘টেক অফের পরই ৫-৭ সেকেন্ডের জন্য মনে হয়েছিল বিমানটি আটকে গিয়েছে কোথাও। এরপর ফ্লাইটের মধ্যে সাদা-সবুজ আলো জ্বলে ওঠে। মনে হচ্ছিল প্লেনটা কিছুটা জোরে ওড়ার চেষ্টা করছে। এরপরই বিরাট বিস্ফোরণ। আমি বিমানের যেদিকে বসেছিলাম সেইদিকটা ওই হস্টেলের নিচের তলায় ক্র্যাশ হয়েছিল। জমির উপরে পড়েছিলাম। আর আমার দিকের দরজা ভেঙে বেশ কিছুটা স্পেস ছিল। সে দিকটাই দিয়েই বেরই। তবে আমি যদি উল্টো দিকে থাকতাম তাহলে বেরতে পারতাম না। কারণ ওই দিকটা হস্টেলের ছাদের দিকে ভেঙেছিল। আগুনে আমার বাঁ হাত জ্বলে গিয়েছে।’
এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারটি লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল। বিমানে ছিলেন ২৩০ জন যাত্রী ও ১২ জন ক্রু সদস্য। দুর্ঘটনার সময় বিমানটি একটি মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেলে ধাক্কা মারে। মাত্র ৬০০-৮০০ ফুট উঁচুতে উঠে বিমানটি আচমকাই নেমে আসে এবং জ্বলে ওঠে। বিস্ফোরণের শব্দ ও আগুনের কুণ্ডলী বহু দূর থেকে দেখা যায়।বিমানটিতে থাকা যাত্রীদের মধ্যে ১৬৯ জন ছিলেন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, সাতজন পর্তুগিজ এবং একজন কানাডীয়। ক্রু সদস্যদের মধ্যে ছিলেন দু’জন পাইলট ও ১০ জন কেবিন ক্রু। এই বিমানে প্রাক্তন গুজরাত মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি-সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি ছিলেন। তারা সকলেই আর বেঁচে নেই।
দেখুন ভিডিও