বাঁকুড়া: বাঁকুড়ার (Bankura) ওন্দা ব্লকের দামোদরবাটিতে চৌধুরী জমিদার বাড়িতে বছরের পর বছর দুর্গাপুজো (Durga Puja) উদযাপিত হয়ে আসছে। প্রাচীন ইতিকথা ও নিয়ম মেনে সাজানো এই পুজোতে এবারও দর্শকদের নজর কাড়ছে নিমকাঠের দ্বিভুজা দেবী দুর্গা। মহালয়ার (Mahalaya) দিন থেকে শুরু হয় নববতের সুর, আর জমিদার বাড়ির ভাঙাচুরা ও চুনসুরখি জমি পুরনো সময়ের স্মৃতি বয়ে আনে।
চৌধুরী পরিবারের আদি পুরুষ তৈলক্যনাথ গুহ বাংলাদেশের যশোরের জমিদার ছিলেন। বর্গিদের হাত থেকে বাঁচতে তিনি যশোর ছাড়েন এবং মল্লগড়, বিষ্ণুপুরে আশ্রয় পান। পরবর্তীতে মল্লরাজারা তাঁকে চৌধুরী উপাধি প্রদান করেন এবং দামোদর নারায়ন চৌধুরীর সময় জমিদার পরিবার সমৃদ্ধি লাভ করে। দামোদরবাটিতে শুরু হয় বড় বড় বাড়ি নির্মাণ এবং নানান ধর্মীয় আয়োজন।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে দামোদরে মহালয়ার তর্পণ, প্রশাসনের বিশেষ নজরদারি
গল্পে বলা হয়, গ্রামের পাশের একটি খালে ভেসে আসা নিমকাঠের দ্বিভুজা দেবীর মূর্তি জমিদার বাড়িতে আনা হয় এবং সেখান থেকেই চৌধুরী পরিবারের দুর্গাপুজোর প্রথা শুরু হয়। পরিবার দাবি করছে, এই পুজো প্রায় ৩৫০ বছরের প্রাচীন।
আজও জমিদার বাড়ির দুর্গাদালানে প্রাচীন নিয়ম মেনে পুজো পাঠ হয়। দেবীর পাশে অবস্থান করছেন মহাদেব, কার্তিক, গণেশ, লক্ষী ও সরস্বতী, এবং মল্লরাজাদের কাঠামোর অনুকরণে তৈরি করা হয়েছে প্রতিমা। বৈষ্ণব মতে, সপ্তমাদি কল্পারম্ভে পুজো আরম্ভ হয়।
জমিদার বাড়ির সদস্য পার্থ সারথি চৌধুরী জানিয়েছেন, “প্রাচীন তালপাতার চণ্ডী পাঠ ও দুর্গাদেবীর আরাধনা আমাদের হারানো ইতিহাসকে ফিরে আনে। প্রতিটি পুজো আমাদের পরিবার ও গ্রামের ঐতিহ্যকে নতুন করে জীবন্ত রাখে।”
দেখুন আরও খবর: