ওয়েব ডেস্ক: চার দশকে এমন ভয়াবহ বন্যা দেখেনি পাঞ্জাব (Flood Situation Punjab)। শুধু গ্রামে গঞ্জে নয় শহরতলি, শহরে, বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে বন্যা পরিস্থিতি, দুর্ভোগ। বন্যার জেরে এখনও পর্যন্ত কম করে ৩৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। অন্যদিকে, দিল্লিতে যমুনা নদীর জলস্তর বেড়ে গিয়েছে ২০৭.৪১ মিটার। ভাসছে রাজধানীর একাধিক এলাকা। ক্যালেন্ডার বলছে বর্ষা পেরিয়ে গেলেও বাংলা এবং দেশের অন্যান্য রাজ্যে এখনও চরম দুর্ভোগের পরস্থিতি। জনজীবন বিপর্যস্ত হিমাচল, চণ্ডীগড়েও। তথ্য, হিমাচল প্রদেশ এবং জম্মু ও কাশ্মীরে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে শতদ্রু, বিয়াস এবং রবি নদীর স্রোত এবং মৌসুমী নদীগুলির কারণে পাঞ্জাবে ব্যাপক বন্যা দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে চলছে বৃষ্টিপাত।
১৯৮৮ সালের পর থেকে সবথেকে ভয়ঙ্কর বন্যার সাক্ষী পঞ্জাব। গত ৩৭ বছরের মধ্যে এত ভয়াবহ বন্যা দেখেনি পাঞ্জাব। লাগাতার অতিভারী বৃষ্টির জেরে জলের নিচে পাঞ্জাবের বিস্তীর্ণ এলাকা। পঞ্জাবের একাধিক নদীতে বান ডেকেছে। বাঁধ ভেঙে জল প্রবাহিত হচ্ছে লোকালয়ে। দেড় হাজারেরও বেশি গ্রাম জলের তলায়। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। পঞ্জাবের গুরুদাসপুর, পাঠানকোট, তরণ, ফিরোজপুর, অমৃতসর জেলাগুলো সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই সব এলাকার মানুষ বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছে। গুরুতর এই পরিস্থিতিতে পাঞ্জাবকে ‘বিপর্যস্ত রাজ্য’ হিসেবে ঘোষণা করেছে আপ সরকার। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে উদ্ধারকাছে নামতে হয়েছে ভারতীয় সেনার তিন বাহিনী। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ২৩টি দল উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে রাজ্যে। ইতিমধ্যেই ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে পাঞ্জাবে।
আরও পড়ুন: থানায় সিসি ক্যামেরা নিয়ে গাফিলতি, সুপ্রিম কোর্টে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা
রাজ্য সরকার ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারি, সাহায্যপ্রাপ্ত, স্বীকৃত এবং বেসরকারি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। পরিস্থিতি বিচারে হিমাচল প্রদেশেও ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্কুল কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পঞ্জাবের দিকে ইতিমধ্যেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন একাধিক তারকা। গায়ক দিলজিৎ দোসাঞ্জ বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গুরদাসপুর ও অমৃতসরের প্রায় ১০টি গ্রাম দত্তক নিয়েছেন।
এদিকে জম্মু ও কাশ্মীরে, পুঞ্চ, মিরপুর, রাজৌরি, রিয়াসি, জম্মু, রামবান, উধমপুর, সাম্বা, কাঠুয়া, ডোডা এবং কিশতওয়ারকে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে লাল সতর্কতা জারি। উত্তর পঞ্জাব, হরিয়ানা, পূর্ব রাজস্থান, দক্ষিণ-পশ্চিম উত্তর প্রদেশ, উত্তর-পশ্চিম এবং পূর্ব মধ্য প্রদেশ এবং ওড়িশার জন্যও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই অঞ্চলগুলিতে তীব্র বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রবল বৃষ্টির জেরে বন্যায় ভাসছে দিল্লিও। রাজধানীর সফদরজং, কাশ্মীর গেট, কনট প্লেস, ইন্ডিয়া গেট এবং অন্য এলাকায় মঙ্গলবারের মতোই বুধবারও একটানা বৃষ্টি চলছে। ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের লাগোয়া এলাকা জলমগ্ন। এর ফলে ওই এলাকায় ব্যাপক যানজট তৈরি হয়েছে। হু হু করে বাড়ছে যমুনা নদীর জলস্তর।
অন্য খবর দেখুন