কলকাতা: কলকাতায় (Kolkata) ডিজিটাল জালিয়াতির (Digital Arrest) দুটি বড়সড় ঘটনায় উঠে এল গুজরাট (Gujrat) ও উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh) যোগ। দু’টি মামলায় মোট আড়াই কোটিরও বেশি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তদন্তে দেখা যাচ্ছে, প্রতারকরা হয় গুজরাটের, নয়তো উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। ফলে প্রশ্ন উঠছে, মোদিরাজ্য ও যোগীরাজ্যই কি দেশের ডিজিটাল প্রতারণার নতুন কেন্দ্র?
ঘটনা ১: নেতাজিনগরের ৮৪ বছরের বৃদ্ধকে ডিজিটাল গ্রেফতারির ভয়
দক্ষিণ কলকাতার নেতাজিনগরে ৮৪ বছরের এক বৃদ্ধকে ‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’র ভয় দেখিয়ে ঘরবন্দি করে রাখে প্রতারকরা। নিজেদের পুলিশ ও সিবিআই পরিচয় দিয়ে জানায়, তাঁর নামে বেআইনি পার্সেল ধরা পড়েছে এবং তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভয়ে তিনি ঘর থেকে বের হননি, উল্টে ১ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকা বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেন। নেতাজিনগর থানার তদন্তে গুজরাট ও উত্তরপ্রদেশের কয়েকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছল বলে জানা যায়। দশ দিনের মধ্যেই পুলিশ উদ্ধার করে, গুজরাটের ভাদোদরার এক বেসরকারি ব্যাংক থেকে ৬৩,৩৬,৬০০ টাকা ও উত্তরপ্রদেশের বালিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে ১,৩৭,০৭২ টাকা।
আরও পড়ুন: অনির্দিষ্টকালের জন্য বিল আটকে রাখতে পারেন না রাজ্যপাল, রাষ্ট্রপতিকে জবাব সুপ্রিম কোর্টের
ঘটনা ২: কাঁকুড়গাছির বৃদ্ধাকে ‘মাদকপার্সেল’ দেখিয়ে প্রতারণা
পূর্ব কলকাতার কাঁকুড়গাছির এক বৃদ্ধাকে ফোন করে জানানো হয়, মুম্বই থেকে তাঁর নামে একটি পার্সেল এসেছে, যা পাঠানোর কথা ছিল ‘ঝাং’ নামে এক ব্যক্তির কাছে। ওই পার্সেলে নাকি পাওয়া গিয়েছে ২০০ গ্রাম এমডিএমএ। মুম্বই পুলিশ ও সিবিআইয়ের ভুয়ো নথি পাঠিয়ে তাঁকে ডিজিটাল গ্রেফতারের ভয় দেখানো হয়। ভয়েই তিনি নিজের দুই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে দু’দফায় ৭৯ লক্ষ টাকা পাঠিয়ে দেন।
লালবাজারের সাইবার সেল তদন্তে গুজরাটের রাজকোট-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। ধৃতরা হলেন, ভারু রবিকান্ত গোকালভাই, সোন্দার্ভা জিলেশ নরেন্দ্রভাই, চান্দেরা বিপুলকুমার কানাভাই। তাদের মধ্যে একজন পেশায় শিক্ষক, যা নিয়ে আরও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
দুই মামলায় মিল এ। যোগী ও মোদি রাজ্যের যোগসূত্র। পুলিশের দাবি, দুই ঘটনাতেই টাকার লেনদেনের ছাপ গুজরাট ও উত্তরপ্রদেশে গিয়ে মিলেছে। সাইবার প্রতারকদের এক বড় অংশ এই দুই রাজ্য থেকেই সক্রিয় বলে ধারণা তদন্তকারীদের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আরও কয়েকটি চক্রের সন্ধানে তল্লাশি চলছে। কলকাতায় ডিজিটাল জালিয়াতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই দুই রাজ্যের অপরাধী নেটওয়ার্ক সবচেয়ে বেশি ধরা পড়ছে।
দেখুন আরও খবর:







