ওয়েব ডেস্ক: লিঙ্গ সাম্য এবং মহিলাদের আইনি অধিকার নিশ্চিত করতে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) রায় অনুসরণ করল পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট। পেশোয়ারের খাইবার পাখতুনখাওয়া সার্ভিস ট্রাইবুনালের রায় খারিজ করতে গিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুসরণ পাক সুপ্রিম কোর্টের। বিবাহিত মেয়ের দায়ভার তার স্বামীর। সেই কারণে পিতা বা মাতার মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে সেই মেয়ে অনুকম্পাজনিত নিয়োগ (কম্প্যাশনেট অ্যাপয়েন্টমেন্ট) পাওয়ার যোগ্য নয়। জানিয়েছিল ট্রাইবুনাল।
ট্রাইব্যুনালের এমন ভাষা প্রয়োগ শুধু বাস্তবতাহীন এবং আইনগত দিক থেকে ভুল শুধু নয়, বরং গভীরভাবে পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতাপূর্ণ। ধরে নেওয়া হচ্ছে, একটি মহিলার পরিচয়, তাঁর আইনি যোগ্যতা, ব্যক্তিত্ব, নিজের পায়ে দাঁড়ানো নির্ভর করে স্বামীর সঙ্গে তাঁর বিবাহের ভিত্তিতে। যেন তাঁর কোন স্বাধীন সত্তা নেই। ব্যক্তি হিসেবে কোন নিজস্বতা বা অধিকার নেই। বিচারবিভাগীয় বা প্রশাসনিক স্তরে এমন লিঙ্গ পক্ষপাতমূলক ভাষার ব্যবহার কেবল চলতি সামাজিক কুসংস্কারের প্রতিফলন শুধু নয়, এর ফলে সামাজিক বৈষম্যের ভিত্তিকে প্রকারান্তরে আইনগত স্বীকৃতি দান করা হয়। অথচ সাংবিধানিক প্রেক্ষাপটে মহিলারা সমান আইনি অধিকারের যোগ্য। তাই বিচারবিভাগীয় ও প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষকে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন হিসেবে লিঙ্গ সম্পর্কিত বিষয়ে সচেতন পদক্ষেপ করতে হবে। লিঙ্গ নিরপেক্ষ ভাষার ব্যবহার অত্যন্ত জরুরী। অভিমত পাক সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মনসুর আলী শাহ ও বিচারপতি অথর মিনাল্লার।
আরও পড়ুন: মাথার দাম ২৫ লক্ষ, দান্তেওয়াড়ার এনকাউন্টারে খতম মাওবাদী নেত্রী
প্রসঙ্গত, অপর্ণা ভাট মামলায় মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের রায় খারিজ করে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। প্রতিবেশী মহিলার সম্ভ্রমহানির অভিযোগে জামিন মঞ্জুরীর শর্ত হিসেবে অভিযুক্তের হাতে রাখি বাঁধার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
সম্ভ্রমহানিতে অভিযুক্তের হাতে রাখি বাঁধার অর্থ, সম্ভ্রম হানিকারককে ভাই হিসেবে মেনে নেওয়া। সেই সঙ্গে এমন পদক্ষেপে বিচার বিভাগীয় অনুমোদন। যা গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ যৌন হেনস্থার অভিযোগকে এভাবে হালকা করে দেওয়া হচ্ছে। অভিমতসহ হাইকোর্টের রায় খারিজ সুপ্রিম কোর্টের। এই রায় সহ ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের আরো কয়েকটি রায় অনুসরণ করে খাইবার পাখতুনখাওয়া সিভিল সার্ভেন্টস(অ্যাপয়েন্টমেন্ট, প্রমোশন অ্যান্ড ট্রান্সফার) রুল ১৯৮৯ এর সম্পর্কিত বিধানকে বেআইনি এবং অসাংবিধানিক ঘোষণা করে রায় পাক সুপ্রিম কোর্টের।
দেখুন আরও খবর: