Wednesday, October 8, 2025
spot_img
HomeScrollAajke | সজলের ছ্যাবলামি, শুভেন্দুর ফুচকা
Aajke

Aajke | সজলের ছ্যাবলামি, শুভেন্দুর ফুচকা

অনুপ্রাণিত শুভেন্দু অধিকারি দশমিতে ফুচকা খেলেন

বঙ্গ রাজনীতিতে বিজেপি নেতারা যে দ্রুততার সঙ্গে নিজেদেরকে ভাঁড় হিসেবে তুলে ধরছেন তাতে বিপন্ন হয়ে পড়বেন খরাজ মুকুজ্জে, কাঞ্চন মল্লিক বা শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ের মত কমেডিয়ানরা। পরিচালকেরা হাতে গরম আসলি ভাঁড় পেয়ে গেলে অভিনেতাদের কি ডাকবেন? দুগ্গা দুগ্গা বলে দুগ্গা ঠাকুর গেলেন বাপের বাড়িতে, পুনরাগমনায়চ বলে বাঙালিরা আজ লক্ষ্মীর ঘট বা মূর্তির পুজোয় বসেছেন। কিন্তু এই কদিন ধরে কি কম কিছু হল? পুজোর আগেই এক আকাশ ভাঙা বৃষ্টিতে ডুবলো কলকাতা, জলা জমে কারেন্ট খেয়ে মরলেন ১২ জন মানুষ, ফেসবুকে আর্তনাদ শুনলাম আমরা, কেন ভাই? কী হয়েছে? জানা গেল, সব পুজো ইত্যাদি ফেলে সরকার বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) কেন রুদালি ভাড়া করে কাঁদতে বসলেন না? এরকম অসংবেদনশীল ঘটনা কী সহ্য করা যায়, ঘরে ফিরে স্কচ হুইস্কিতে বরফ ঢালতে ঢালতে ফোনো বাইট দিলেন এক নেতা, ভাবা যায় না, এরপরেও উৎসব? এক সমাজ মাধ্যমের সিপিএম, লিখলেন মৃতদের উৎসব, তারপরে পুজোর বই এর স্টলে ঘাড়ে পাউডার দিয়ে বসতে গেলেন, সেখান থেকে টিভি চ্যানেলের শারদ অনুষ্ঠানে। এক বিজেপির পে রোলে থাকা অ্যাঙ্কর বললেন এই সরকারকে ফেলে দিন সেটাই হবে অসুর নিধন, তাঁর কথা শেষ হতেই বিজ্ঞাপনে বাজলো তোমার আলোর বেণু, নারকেল তেল আর সরষের তেল। তখন লেবুতলায় মোদিজীর মুখ ঠিক কীভাবে ফেললে পাহাড়ের গায়ে যুদ্ধের আবহে ওনাকেই সেনা নায়ক মনে হয়, তার মহড়া চলছিল। কিন্তু সেসব তো সরকারের কাজ নয় কাজেই সেখানে উৎসব চলুক, উৎসব বন্ধ থাকবে কেবল সরকারের, সরকারে থাকা দলের। কিন্তু সেসবের মধ্যেই লক্ষ লক্ষ মানুষের উৎসব নির্বিঘ্নে শেষ হল, উপচে পড়লো ভিড়, উৎসবের আলোয় ভাসলো কেবল কলকাতা নয়, সারা বাংলা আর অর্থনীতিতে সব মিলিয়ে এক লক্ষ কোটি টাকার মত রক্ত সঞ্চালন, রাজ্যের জিডিপির ১৭/১৮%। সেটাই বিষয় আজকে, সজলের ছ্যাবলামি, শুভেন্দুর ফুচকা।

ওই আকাশ ভেঙে পড়া দুর্যোগের ৩৬/৪৮ ঘন্টার মধ্যে জল নেমে গেল, রাস্তা সাফ হল, প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে আলো জ্বললো, ওফফফ দাদাদের বুকে চিন চিন ব্যাথা, বড্ড ব্যাথা, তাই নতুন ইস্যু খুঁজে বার করতে হবে, ট্রাফিক পুলিশের বিধিনিষেধ মানবো না, চাপালে চারদিকের আলো নিভিয়ে দেবো আর প্রতীমার মুখ কালো কাপড়ে ঢেকে দেবো। মানে চারদিকে একটা মেসেজ দেবো যে বানগালির শারদীয় উৎসব, দুগ্গাপুজো করতে দিচ্ছেনা এই সরকার, এই মুখ্যমন্ত্রী। তো সেসব চক্রান্ত তেমন ডালপালা মেলতে পারলো না, কী আশ্চর্য অত বড় দুর্যোগ কাটিয়ে কলকাতা কল্লোলিনী হয়ে উঠলো, এক কবি কাম লেখক ঘোষণাই করে দিয়েছিলেন মানুষ আর মেনে নেবে না, এই সরকার এবার পড়বেই, ওনার আর তর সইছে না, সে কথা আবার লিখলেন মাত্র গতকাল। কেন? দার্জিলিং এ ধস, মৃত্যু অথচ এখানে কার্নিভাল কেন? আর কার্নিভালই বা যদি হয়, তাহলে মমতা সেখানে কেন? মানুষ আর মেনে নেবে না, সেই ২০১৬ থেকেই বহু শকুনের অভিশাপের পরে গরু তো মরেনি, এবারেও সেই অভিশাপ। কিন্তু রাতের দিকেই খবর এল দুর্যোগ কাটছে, সকালের খবর আকাশে আলো, বৃষ্টি ধরেছে, এখনও পর্যন্ত ত্রাণ নিয়ে কোনও অভিযোগ এমনকি মাইনে করা ভৃত্য চ্যানেলেও দেখা যায়নি। ওদিকে সম্ভবত সপ্তমীতেই যুবরাজ বেরিয়েছিলেন প্রতীমা দেখতে, হ্যাঁ আমি অভিষেক ব্যানার্জির কথাই বলছি তো রাস্তায় বেরিয়ে তিনি ফুচকা খেয়েছেন। যেভাবে ফুচকা খায় সেভাবেই খেয়েছেন, অনুপ্রাণিত শুভেন্দু অধিকারি দশমিতে ফুচকা খেলেন, খানিকটা সিঙাড়ার মত হাতে ভেঙে ভেঙে। যে মানুষটা এখনও ফুচকাই খেতে শিখলো না সেই মানুষটা ১৬ কোটি বাঙালির প্রতিনিধি হতে চান? ভাবলেই হাসি পায়।

আরও পড়ুন: Aajke | কলকাতায় জল জমল, জল শোভন ঘরে ফিরল?

আসলে মমতা কোথায় কোন ভুলটা করবেন, সেই ভুলের সিঁড়ি বেয়ে বিজেপির রাজ্য নেতারা পৌঁছে যাবেন ক্ষমতার দোড়্গোড়ায়, নবান্নে। এরকম ভাবার মধ্যেই যে এক মুর্খামি আছে তা বোঝার আগেই ২০২৬ এর নির্বাচন (West Bengal Assembly Election 2026) আসবে আর চলেও যাবে। সেই হতাশ কবি তখন ৩১ এর স্বপ্ন দেখবেন। পুনরাগমনায় চ বলে দুগ্গা ঠাকুর গেলেন বাড়ি ফিরে, এবার ঢাকে কাঠি ২৬ এর, সেই প্রেক্ষিতেই খানিক রাজনৈতিক লড়াই হবে বলে ভেবেছিলাম, কিন্তু যা হল, তা নিখাদ ভাঁড়ামি। আমরা আমাদের দর্শকদের জিজ্ঞেষ করেছিলাম, এক দূর্যোগ দিয়ে এবারের পুজো শুরু, আরেক দুর্যোগে শেষ, সেই দুর্যোগ সামলে পুজো শেষ করার জন্য সরকারকে দশ এ কত নম্বর দেবেন? শুনুন মানুষজন কী বলেছেন।

দুর্গাপুজো (Durga Puja 2025) সেই অর্থে পৃথিবী জোড়া বাঙালির উৎসব ছিল, এখনও আছে। মমতার সরকার সেই উৎসবকে খুব সফলভাবে অর্থনীতির সঙ্গে জুড়তে পেরেছেন। হাজার হাজার মানুষ, লক্ষ লক্ষ মানুষ সেই অর্থনীতির চাকা থেকে চুঁইয়ে পড়া রস খাচ্ছেন, কাজেই সেই উৎসবের সামান্যতম বিরোধিতাও মানুষ মেনে নিচ্ছেনা। একবার সেই ছবি আমরা দেখেছি গতবারের আর জি কর আন্দোলনের শেষে, গতবারের ঐ সম্মিলিত আবেগও বাধা হয়ে ওঠেনি, উৎসব উদযাপনের ক্ষেত্রে, এবারেও না। হ্যাঁ আমার পরিচিত একজনের কাছ থেকে শোনা, চাটুজ্যেদের বাড়ির পুজো যাতে কেউ মারা গেলে কাল অশৌচের চাপে বন্ধ না হয়, তারজন্যই এক বাঁড়ুজ্যে পরিবার কে এনে বসিয়েছিলেন তাঁরাই, মানে কেউ মারা গেলে তাঁরাই বকলমে পুজো চালিয়ে যাবেন, হ্যাঁ শোকে দুঃখে দুর্যোগে অশান্তির মধ্যেও এইভাবেই উৎসব বেঁচে থাকে। মানুষ বোঝে সে কথা, কী আশ্চর্য বিজেপি বোঝে না।

অন্য খবর দেখুন

Read More

Latest News